রাজশাহীতে ৫ কোল পরিবারকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন
Published: 4th, November 2025 GMT
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাবুডাইং গ্রামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোল সম্প্রদায়ের পাঁচটি পরিবার উচ্ছেদ করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে নগরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে মানববন্ধনের আয়োজন করে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘‘আদালতের একতরফা রায়ের ভিত্তিতে আদিবাসী পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে তারা নিজ ঘরবাড়ি হারিয়ে এখন বাঁশঝাড়ের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।’’ বক্তারা অভিযোগ করেন, ‘‘আদালতের কোনো নোটিশ ছাড়াই প্রশাসন ঘরবাড়ি ভেঙে দেয়। ফলে খাট, চেয়ার, টেবিলসহ কোনো আসবাবপত্রও বের করতে পারেননি ভুক্তভোগীরা।’’
আরো পড়ুন:
বিএলআরআই নিয়োগবিধিতে বৈষম্যের অভিযোগে গবিতে মানববন্ধন
সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
বক্তারা দাবি করেন, ‘‘যে জমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে, তা কোল সম্প্রদায়ের মানুষেরই। ১৯৫০ সালের টেনেন্সি আইনের ৯৭ ধারায় আদিবাসীদের কাছ থেকে ভূমি ক্রয়ে জেলা প্রশাসনের অনুমতি প্রয়োজন হলেও এ ক্ষেত্রে অনুমতি নেওয়া হয়নি। প্রকৃত মালিককে হিন্দু দেখিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে নেওয়া হয়েছে, যাতে অনুমতি গ্রহণ করতে না হয়। এ কারণে বোঝা যায়, জমির রেজিস্ট্রি সঠিক প্রক্রিয়ায় হয়নি এবং জমি আদিবাসীদেরই।’’
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি গণেশ মার্ডি। মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজোয়াড়, বরেন্দ্র উন্নয়ন প্রচেষ্টার পরিচালক ফয়জুল্লাহ্ চৌধুরী, হাবিবুর রহমান হাসিবুল, সংগঠনের সহ-সভাপতি রাজকুমার শাও, প্রেসিডিয়াম সদস্য ক্রিষ্টিনা বিশ্বাস, সহ-সংগঠনিক সম্পাদক রূপচাঁদ এক্কা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামাল কাদেরী।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন- আদিবাসী পরিষদের সদস্য আন্দ্রিয়াস বিশ্বাস, মাসাউসের পরিচালক মেরিনা হাঁসদা, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুকুল বিশ্বাস, মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ছোটন সরদার, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিলুফা আহমেদ, বাড়ি থেকে উচ্ছেদের শিকার রুমালী হাঁসদা, ভুট্টু কিস্কু, সুজন সরেন, সনাতন সরেন প্রমুখ।
মানববন্ধন থেকে বক্তারা অবিলম্বে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোর পুনর্বাসন, জমির মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
আদালতের এক রায়ের প্রেক্ষিতে গত ২৭ অক্টোবর বাবু ডাইং গ্রামের ৭৭ শতক জায়গা থেকে পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়। ১৯৯৮ সাল থেকে এ জমিতে কোল সম্প্রদায়ের পাঁচ পরিবার বাস করছিল।
ঢাকা/কেয়া/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বক ত র পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
সুদানে চলমান গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২ নভেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ছাত্রশক্তির জাবি শাখার উদ্যোগে এ প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ইবিতে কুরআন ও হিজাববিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের
জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
মানববন্ধনে জাবি শাখার যুগ্ম আহবায়ক জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, “আমরা মনে করছি, সুদানকে ফিলিস্তিনের গাজায় পরিণত করার চক্রান্ত চলছে। বিশ্ব মানবতা যেভাবে গাজাবাসীর পক্ষে কথা বলে, কিন্তু আফ্রিকার দেশ হওয়ায় আমরা সুদানের মানুষদের পক্ষে কথা বলছি না। আজ বিশ্ব মিডিয়া, জাতিসংঘ ও ওআইসি নিরব। ফলে আরব আমিরাতের ফান্ডিংয়ে সেখানে নির্বিচারে মানুষ মারা হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “জুলাইয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় সেখানকার (আরব আমিরাতের) বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তারা এখনো কারাভোগ করছে। বাংলাদেশ সরকারকে বলব, আমাদের দেশের নাগরিকদের অবিলম্বে মুক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে সুদানে চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বিবৃতি দিতে হবে।”
শাখা ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল ছাড়াও মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।
 
অন্যদিকে, রবিবার (২ নভেম্বর) ভাষ্কর্য চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) হিউম্যান রাইটস সোসাইটির মানবাধিকার কর্মীরা গণহত্যা বন্ধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
সংগঠনটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, “নানা কারণে বিভিন্ন দেশের সংঘাত থেকে শুরু করে গৃহযুদ্ধে বলি হয় নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষ। সুদানে যে জাতিগত নিধন চলছে, তা নিয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে তেমন কোনো আলোচনা নেই। মানবতা কোনো ধর্ম, বর্ণ বা রাজনৈতিক মতাদর্শের ভেতর সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। সব মজলুমের পক্ষে অবস্থান নেওয়া একজন মানুষের নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ব। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস সোসাইটি সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার অবস্থান বজায় রাখবে।”
এ সময় সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ মাসুদ, দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান কায়েস, সদস্য নিং ম, ফয়সাল মাহমুদসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/আহসান/লিমন/মেহেদী