বাংলাদেশের শিক্ষা এবং সাহিত্য অঙ্গনে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ছিলেন এক আলোকবর্তিকা। তাঁর শিক্ষা শুধু শ্রেণিকক্ষে আবদ্ধ ছিল না, ছড়িয়ে পড়েছিল শুভচিন্তার প্রতে৵ক মানুষের মনে। তাঁর মৃত্যু মানে এক প্রজ্ঞাদীপ্ত যুগের অবসান। জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও মননশীলতার জগতে গভীর এক শূন্যতা সৃষ্টি করেছে তাঁর চলে যাওয়া।

সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মিনি অডিটরিয়ামে গতকাল সোমবার ইংরেজি বিভাগের উদ্যোগে বরেণ্য শিক্ষক ও লেখক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এ সময় তাঁরা প্রয়াত মনজুরুল ইসলামের জীবন ও কর্ম অনুশীলনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তিনি থাকবেন আমাদের প্রেমে, আমাদের প্রার্থনায়।’

‘এ ট্রিবিউট টু প্রফেসর সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম’ শিরোনামে স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশরাফুল আলম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র চন্দ। মুখ্য আলোচক ছিলেন মদনমোহন সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এবং সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের বাল্যবন্ধু ও সহপাঠী গোলাম কাদির মোহাম্মদ আলমগীর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইংরেজি বিভাগের প্রধান প্রণবকান্তি দেব।

মনজুরুল ইসলামের সঙ্গে কাটানো শৈশব, কৈশোর এবং বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতিচারণা করেন গোলাম কাদির মোহাম্মদ আলমগীর। তিনি বলেন, ‘সাধারণ জীবন যাপনের মধ্য দিয়ে মনজুরুল ইসলাম অসাধারণ এক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন। পদ, পদবি, খ্যাতির কোনো অহংকার তাঁকে স্পর্শ করেনি। ফলে মৃত্যুর আগে মনজুরুল ইসলাম তাঁর কর্ম দিয়ে, বন্ধুবাৎসল্য দিয়ে জয় করেছেন সব বয়সী মানুষের হৃদয়।’

আরও পড়ুনশিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আর নেই১০ অক্টোবর ২০২৫

প্রয়াত অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় স্মরণসভা। পরে প্রয়াতের জীবনী পাঠ করেন ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মাকসূরা হাশেম।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন শামসুল আলম, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান রেজাউল কবীর এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নসরত আফজা চৌধুরী। সবশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক স্বাতী রানী দেবনাথ।

আরও পড়ুনএকজন ভালোবাসাভরা মানুষের বিদায় ১১ অক্টোবর ২০২৫

আলোচনা শেষে প্রয়াতের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তাওহিদ আহমদ। সভায় ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এবং বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মনজ র ল ইসল ম র

এছাড়াও পড়ুন:

সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে এগিয়ে আসার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

ছোটখাটো ভিন্নতা ও দূরত্ব দূর করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেন, ভিন্নতা ও দূরত্ব দূর করে যেভাবে সনদ স্বাক্ষর করা গেছে, আগামী নির্বাচনকে সেভাবেই একটা অর্থপূর্ণ নির্বাচন করতে হবে। এটা যেন সবার কাছে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়।

আজ শনিবার পানি ভবনের মাল্টিপারপাস হলে শ্রমিক-কর্মচারীদের সাধারণ সভা ও সম্মেলন ২০২৫-এ এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন।

নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যাঁরা নির্বাচিত হবেন, তাঁরা সংসদকে সত্যিকার অর্থে প্রাণবন্ত করে গড়ে তুলবেন বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল।

আগামী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমে নির্ধারণ হবে, আপনি সত্যিকার অর্থে একটি উদারপন্থী গণতন্ত্রের দিকে যাবেন, নাকি আবার অন্যদিকে চলে যাবেন। আমাদের এই কথা ভুললে চলবে না যে, ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিলাম। সেই স্বাধীনতাযুদ্ধ ছিল আমাদের একটা নতুন জাতি সৃষ্টির আন্দোলন। সেই ১৯৭১ সালের যুদ্ধকে আমাদের মনে রাখতে হবে।’

জুলাই সনদে স্বাক্ষর রাষ্ট্রকাঠামো পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশের ইতিহাসে অনন্য ঘটনা হিসেবে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই সনদে দুর্নীতির সংশোধন একই সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনীতিকে আরও স্বচ্ছ করার, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আরও উন্নত করার, গণতান্ত্রিক কালচার গড়ে ওঠা এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘ সাত-আট মাস কাজ করে এটা নিয়ে এসেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারকে সবার সহযোগিতা করা উচিত। এক বছরের মধ্যে সব জঞ্জাল শেষ করে ফেলা সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে যে জঞ্জাল সৃষ্টি করে গেছে, সবকিছুকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে, সেগুলোকে এক বছরের মধ্যে ঠিক করে ফেলা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।

সংসদীয় রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্ব নিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে পার্লামেন্টারি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে। সব কর্মকাণ্ডকে পার্লামেন্টকেন্দ্রিক করতে হবে। তা না হলে সংসদীয় গণতন্ত্র কাজ করবে না।

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, পৃথিবীর যেসব দেশের পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি সফল হয়েছে, সেসব দেশ পার্লামেন্টকে কেন্দ্রবিন্দু করেই রাজনীতি করেছে। রাস্তা থেকে পার্লামেন্টে উঠে আসতে হবে।

ফখরুল বলেন, তাঁরা আর কত দিন রাস্তায় থাকবেন। গত ৫০ বছর তো তাঁরা রাস্তায় চলছেন...। এসব ঠিক করে সনদের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে কালচারে পরিণত করতে হবে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আরও পড়ুনজুলাই সনদ স্বাক্ষর বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা: মির্জা ফখরুল১৭ ঘণ্টা আগে

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।

সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম প্রমুখ।

আরও পড়ুনজুলাই সনদ: আশা করি স্বাক্ষর করবে, নির্বাচনে বড় প্রভাব পড়বে না: সালাহউদ্দিন আহমদ৩ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন
  • গুজবে কান না দিয়ে আপনার সস্তানকে টাইফয়েডের টিকা দিন : এডিসি আলমগীর
  • শিক্ষক-কর্মচারীদের খালি প্লেট হাতে ভুখা মিছিল, পুলিশের বাধা
  • সর্বহারার মুক্তিসংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন বদরুদ্দীন উমর
  • সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে এগিয়ে আসার আহ্বান মির্জা ফখরুলের