এআই ও ভুয়া তথ্য মোকাবিলায় গঠিত হবে কেন্দ্রীয় সেল: সিইসি
Published: 21st, October 2025 GMT
জাতীয় নির্বাচনের সময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির অপব্যবহার এবং ভুয়া তথ্য প্রচারের ঝুঁকি ঠেকাতে একটি সমন্বিত কেন্দ্রীয় সেল গঠন করার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
তিনি বলেন, “প্রযুক্তি-নির্ভর অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পরিকল্পনা প্রণয়ণ করা হচ্ছে।”
আরো পড়ুন:
সংসদ নির্বাচন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সোমবার
এনসিপিকে ‘শাপলা’ প্রতীক দেওয়া সম্ভব না: ইসি আনোয়ারুল
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত ‘নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এআই অপব্যবহার প্রতিরোধ’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, “এআই এখন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। একজন ডাক্তার যেমন এআই ব্যবহার করে জীবন বাঁচাতে পারেন, তেমনি একজন অপরাধীও এটি ব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য ছড়াতে পারে। আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে এ ধরণের অপব্যবহার থেকে সুরক্ষা দিতে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে।”
তিনি জানান, এআই-এর মাধ্যমে তথ্য বিকৃতি, মিথ্যা প্রচার ও গুজব ঠেকাতে যে সেন্ট্রাল সেল গঠন করা হবে, সেটি ২৪ ঘণ্টা কাজ করবে এবং তা দেশের প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকাগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করে কাজ করবে।
সুনির্দিষ্ট সুপারিশ ও বাস্তবমুখী পরিকল্পনার নির্দেশনা
এ এম এম নাসির উদ্দিন সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও অংশীদারদের উদ্দেশে বলেন, “শুধু নীতিগত নয়, বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশ চাই। কাদের নিয়োগ দিতে হবে, ফ্যাক্ট চেকিং কীভাবে হবে, কত দ্রুত তথ্য যাচাই করা যাবে এসব খুঁটিনাটি জানতে চাইছি।”
তিনি বলেন, “কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞ ও কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এ বিষয়ে মূলতঃ তিনটি বিষয়ে সুপারিশ চাওয়া হয়েছে:
১.
২. প্রয়োজনীয় জনবল কতজন এবং তাদের যোগ্যতা কেমন হবে।
৩. প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে কীভাবে কার্যকর সংযোগ স্থাপন করা যাবে।
প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলেও নজরদারি
সিইসি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “পাহাড়ি অঞ্চল বা উপকূলীয় অফশোর দ্বীপ থেকেও বিভ্রান্তিকর তথ্য আসতে পারে। সেই মিথ্যা তথ্যের উৎসে দ্রুত পৌঁছাতে হলে আমাদের স্থানীয় পর্যায়ে বিশ্বাসযোগ্য সংযোগ স্থাপন করতে হবে। এই কেন্দ্রীয় সেলের কাজ হবে, গুজব শনাক্ত ও দ্রুত তথ্য যাচাই, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মনিটরিং, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করবে।
এ এম এম নাসির উদ্দিন আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা সবাই মিলে চিন্তা করলে ভালো কিছু বেরিয়ে আসবে। এই কর্মশালাটি নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনী শুদ্ধতা রক্ষার পথে এগিয়ে নেবে।”
ঢাকা/এএএম/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইস ইস ব যবহ র র উদ দ
এছাড়াও পড়ুন:
অস্টিওপোরোসিসে কেন অবহেলা করবেন না
অস্টিওপোরোসিস মানে ছিদ্রযুক্ত হাড়। এ রোগে হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়। ফলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে এবং খুব সামান্য আঘাতেই ভেঙে যেতে পারে। এই রোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মেরুদণ্ড, কোমর ও কবজির হাড়।
হাড় দুর্বল হলেও শুরুতে কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না বলে অস্টিওপোরোসিসকে ‘নীরব রোগ’ বলা হয়। এ ছাড়া এই রোগের প্রথম লক্ষণই অনেক সময় হাড় ভেঙে যাওয়া। তখন আর কিছু করার থাকে না।
বিশ্বে ২০ কোটির বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। গবেষণা বলছে, প্রতি তিনজন নারীর একজন এবং পাঁচজন পুরুষের একজন কোনো এক পর্যায়ে অস্টিওপোরোটিক ভাঙনের শিকার হন। এটা শুধু ব্যথা বা বিকলাঙ্গতা নয়, অনেক সময় দীর্ঘমেয়াদি প্রতিবন্ধকতা ও মানসিক কষ্টের কারণ।
আরও পড়ুনসহজলভ্য এই ৮ খাবার থেকে পাবেন উচ্চমাত্রার ক্যালসিয়াম০৮ আগস্ট ২০২৪ঝুঁকিতে যাঁরাবাংলাদেশে নারীদের মধ্যে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও পুষ্টিহীনতার কারণে রোগটির প্রকোপ বাড়ছে। অস্টিওপোরোসিসজনিত হাড় ভাঙা নারীদের শয্যাশায়ী হওয়ার অন্যতম কারণ। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন—
৫০ বছরের বেশি বয়সী নারী ও পুরুষ।
রজঃনিবৃত্ত (মেনোপজ) পরবর্তী নারী।
ধূমপায়ী ও অতিরিক্ত মদ্যপানকারী ব্যক্তি।
যাঁরা কম ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি গ্রহণ করেন।
কায়িক শ্রম বা ব্যায়ামের অভাব।
দীর্ঘদিন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবনকারী।
আরও পড়ুনহাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় যে ৫টি পুষ্টি উপাদান১৮ জুলাই ২০২৫প্রতিরোধই সেরা উপায়অস্টিওপোরোসিস সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য নয়। তবে প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। জীবনযাপনে কয়েকটি পরিবর্তন আনলেই হাড় শক্ত রাখা যায়।
পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ: দুধ, দই, পনির, ছোট মাছ, শাকসবজি, তিল ইত্যাদিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে।
ভিটামিন ডি: প্রতিদিন রোদে ১৫-২০ মিনিট থাকলে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়।
নিয়মিত ব্যায়াম: হাঁটা, সিঁড়ি ভাঙা, হালকা দৌড় বা ওজন নিয়ে ব্যায়াম হাড় মজবুত রাখে।
ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার: এগুলো হাড়ের গঠন ব্যাহত করে ও ক্যালসিয়াম শোষণ কমায়।
হাড়ের পরীক্ষা: বয়স ৫০ পার হলে বা ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর সদস্য হলে বছরে অন্তত একবার হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষা করা উচিত।
শেষ কথাপরীক্ষায় অস্টিওপোরোসিস প্রমাণিত হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ ব্যবহার করা হয়। অস্টিওপোরোসিস নীরবে হাড় ক্ষয় করে, কিন্তু সময়মতো সচেতনতা ও ব্যবস্থা নিলে এর ক্ষতি রোধ করা সম্ভব। ভালো খাদ্যাভ্যাস, রোদে থাকা, নিয়মিত ব্যায়াম, আর সময়মতো পরীক্ষা—এই চারটি অভ্যাসই আপনার হাড়কে ভাঙন থেকে রক্ষা করতে পারে।
আরও পড়ুনমেনোপজের পর হাড় ক্ষয় ঠেকাতে যা করবেন০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪