সুদানের সেনাবাহিনীর প্রধান এবং ডি ফ্যাক্টো প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর দেশজুড়ে সংঘাতের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক হত্যার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

আফ্রিকার এই দেশটি মূলত ২০২৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বে আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) দেশটির ডি ফ্যাক্টো শাসক আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের অধীনে থাকা সুদানের সেনাবাহিনীর সাথে লড়াই করছে।

অর্থাৎ দীর্ঘ ২১ মাসের এই গৃহযুদ্ধে দুই পক্ষের একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সুদানের সেনাবাহিনীর প্রধান। এই সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এছাড়া রক্তক্ষয়ী এই সংঘাত দেশকে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।

একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে “সুদানকে অস্থিতিশীল করার এবং একটি গণতান্ত্রিক উত্তরণের লক্ষ্যকে দুর্বল করার” জন্য জেনারেল বুরহানকে অভিযুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। 

এর আগে গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীর সাথে লড়াইরত আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানের এল-ফাশারে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় নিহত ৪১ বেসামরিক

সুদানের উত্তর দারফুর রাজ্যের রাজধানী এল ফাশারে আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর কামানের গোলাবর্ষণে কমপক্ষে ৪১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং অনেক মানুষ আহত হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।

সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোমবার রাতে শহরের আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে চালানো এই হামলায় হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের বাহিনী শহরে আরএসএফের আক্রমণ প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে, ৬০০ আরএসএফ যোদ্ধাকে করেছে এবং ২৫টি সামরিক যানবাহন ধ্বংস করেছে।

সেনাবাহিনীর এই বিবৃতির বিষয়ে বিদ্রোহী আধা সামরিক সামরিক বাহিনী আরএসএফর পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

সোমবার থেকে এল-ফাশেরে সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে, যার ফলে শহরের মানবিক সংস্থাগুলো বেসামরিক নাগরিকদের খাবার বিতরণ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।

এই মাসের শুরুতে, সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষের পর আরএসএফ শহরের জমজম শরণার্থী শিবিরের নিয়ন্ত্রণ দখল করার দাবি করে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে, এই লড়াইয়ের ফলে কমপক্ষে ৪০০ বেসামরিক মানুষ নিহত এবং প্রায় ৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।

২০১৪ সালের ১০ মে থেকে, সুদানের সেনাবাহিনী (এসএএফ) এবং আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের মধ্যে এল ফাশারে ভয়াবহ লড়াই চলছে। আরএসএফের দারফুরের প্রায় পুরো বিশাল পশ্চিমাঞ্চল দখল করে নিয়েছে। তারা দারফুরের রাজ্যের রাজধানী এল-ফাশার অবরোধ করে রেখেছে। কিন্তু শহরটি দখল করতে পারেনি। সেখানে সেনাবাহিনী-সমর্থিত মিলিশিয়ারা বারবার তাদের পিছনে ঠেলে দিয়েছে।

ক্ষমতার দখল ঘিরে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী মধ্যে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে লড়াই চলছে। জাতিসংঘ এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, সুদানে সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ২০ হাজারেও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং দেড় কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তবে মার্কিন বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় মোট নিহতের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার বলে অনুমান করা হয়েছে।

 

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানের এল-ফাশারে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় নিহত ৪১ বেসামরিক