জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে জোটভুক্ত দুটি সংগঠন। একইসঙ্গে তারা জোটের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দিয়েছে।

তাদের অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে, ঐতিহাসিক পরাক্রম ও স্বকীয়তা রক্ষায় অপারগতা, নির্বাচনের সময় নির্দিষ্ট প্রার্থীদের ট্যাগিং করে তাদের নামে অপপ্রচার, গঠনতন্ত্রের লঙ্ঘন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌক্তিক আন্দোলন সংগ্রামে নিরবতা, অন্যায়কে ধামাচাপা দেওয়া ইত্যাদি। 

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা দেন সাংস্কৃতিক জোটের সদ্য মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক বান্না। এ সময় জোটভুক্ত সংগঠন জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার ও চিরকুটের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের (টিএসসি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ ইসলাম মেঘকে আহ্বায়ক এবং বাংলা বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবাইর ইসলাম জিয়ানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। এছাড়া কমিটিতে মুখপাত্র করা হয়েছে বাংলা বিভাগের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রিয়াঙ্কা কর্মকার।

এর আগে, সংবাদ সম্মেলনে জোটের অচলাবস্থা ও বিভিন্ন দুরাচারের বিষয়ে একটি লিখিত প্রেসবিজ্ঞপ্তি পাঠ করেন জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার টিএসসির সাধারণ সম্পাদক সাইয়েদা মেহের আফরোজ শাওলি।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট তার ঐতিহাসিক পরাক্রম ও স্বকীয়তা রক্ষায় অপারগ হয়েছে। গত ১ কার্যকরি বছরে আমরা দেখেছি সব জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত রাজনীতিতে তাদের নিষ্প্রভতা। কেবল তাই-ই নয়, এ নিশ্চুপতা ছাপিয়ে সামনে এসেছে তাদের জনবিচ্ছিন্নতা। আজ এ সময়ে দাঁড়িয়ে আমরা বিশ্বাস করি জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সব কর্মক্ষমতা বিনষ্ট করা হয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের এ অনাচার প্রকট হয় গত নির্বাচন থেকেই। গণতান্ত্রিক নির্বাচনের নামে যে প্রহসন পূর্ববর্তী কার্যকরী কমিটি করে গেছে, তা আদতে মাইলফলক হয়ে থাকবে। সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক মনোয়নধারী দুই সংগঠনের কর্তাব্যাক্তির নামে গুপ্ত রাজনীতির প্রমাণবিহীন অপপ্রচার করে একটি নির্দিষ্ট পক্ষ ও ব্যক্তিবিশেষ নির্বাচনের স্বচ্ছতা, স্বতন্ত্রতা ও নিরেপেক্ষতা লঙ্ঘন করে।

নতুন কমিটির আহ্বায়ক মাহফুজুল ইসলাম মেঘ বলেন, “আগামীদিনে সাংস্কৃতিক জোটের হারানো ঐতিহ্য ও জৌলুস ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আমরা কাজ করব। এই কমিটি আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে জোটে আহ্বান করার মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে স্বচ্ছ ও ন্যায়ভিত্তিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজন করবে।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ হ ঙ গ রনগর স কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো: আনু মুহাম্মদ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো। আইএমএফের প্রভাবে বাজেটে স্থানীয় শিল্পে ভ্যাট অব্যাহতি হ্রাস পেয়েছে। ট্রাম্প সাহেবকে খুশি করার চেষ্টা ছিলো এই বাজেটে। 

আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত ‘বাজেট: দেড় দশকের অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির গতিপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

আনু মুহাম্মদ বলেন, বাজেটে আয়ের জন্য ভ্যাট ট্যাক্স বাড়ানোর কথা বলা হয়। কিন্তু মার্কিন কোম্পানির কাছে আমাদের যে ক্ষতিপূরণ তা আদায় করতে হবে। মাগুরছড়া ও টেংরাটিলায় গ্যাস বিস্ফোরণে সম্পদ ও প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংসে যে ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ আদায়ের কোন সরকারই চেষ্টা করেনি। এই ক্ষতিপূরণ আদায় অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ডিপি ওয়ার্লডের কাছে ছেড়ে দেওয়া তো শেখ হাসিনার প্রকল্প ছিল। ড. ইউনুস কেন তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাইছেন? 

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানে পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে, বর্তমান সরকারের বাজেটে সেই পরিবর্তনের সূচনা ঘটানোর কথা নেই। সম্পদ সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের কাছ থেকে গিয়ে কিছু মানুষের কাছে পুঞ্জীভূত হয়। এবারের বাজেটেও সেই প্রবণতা দেখা গেছে।

তিনি আরও বলেন, এবারের বাজেটে প্রতারণা ও অস্বচ্ছতার যে চিত্র ফুটে উঠেছে, সেটা অব্যাহত থাকুক আমরা চাই না। আগামী ২২ জুন বাজেট অনুমোদনের আগে এর ত্রুটিগুলো দূর করতে হবে। বাজেটে জাতীয় সক্ষমতা সৃষ্টির ন্যূনতম উদ্যোগ নিতে হবে।

সভায় আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ার ড. গোলাম রসুল বলেন, সত্যিকার অর্থে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এই বাজেটে তেমন কিছু নেই। কৃষিক্ষেত্রে বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে। কৃষিকে আমরা নানাভাবে আন্ডার ভ্যালু করে দিচ্ছি। স্বাস্থ্যখাতে এবার জনপ্রতি বাজেট বেড়েছে ২২ টাকা।

ট্রাম্পের পালটা শুল্ক বিষয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার বুঝেও না বুঝার ভান করছে। এটা আমাদের বিশাল বিপদে ফেলবে। 
সভায় আরও বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহা মির্জা,  চিকিৎসক ডা. হারুণ অর রশীদ, লেখক-গবেষক প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা ও মাহতাব উদ্দীন আহমেদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫ আসামিকে বাদ দিতে হলফনামা, বাদী কৃষক দল নেতাকে শোকজ
  • এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো: আনু মুহাম্মদ