অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ও দেশটির প্রথম পূর্ণ মেয়াদের কোচ বব সিম্পসন সিডনিতে ৮৯ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চেয়ারম্যান মাইক বেয়ার্ড শোকবার্তায় বলেন, ‘বব সিম্পসন ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম মহারথী। তাকে কাছ থেকে দেখা কিংবা তার কাছ থেকে শেখার সৌভাগ্য যাদের হয়েছে, আজকের এই দিনটি তাদের জন্য গভীর শোকের।’

অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাববিস্তারি ব্যক্তিদের একজন ছিলেন সিম্পসন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৬২ টেস্ট ও দুটি ওয়ানডে খেলেছেন সিম্পসন।  ১৯৫৭ থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৬২টি টেস্ট খেলেছেন এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার।

৪৬.

৮১ গড়ে করেছেন ৪ হাজার ৮৬৯ রান, নিয়েছেন ৭১ উইকেট। সময়ের অন্যতম সেরা স্লিপ ফিল্ডার হিসেবেও তার হাকডাক ছিল। নিয়েছেন ১১০ ক‌্যাচ। টেস্টে সিম্পসনের ১০ সেঞ্চুরির সব কটিই এসেছে অধিনায়ক হিসেবে।

কোচ ও নির্বাচক হিসেবে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার নায়ক তিনি। শৃঙ্খলা, পরিশ্রম, ফিটনেসে নতুন সংস্কৃতি গড়ে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে পৌঁছে দেন। তার হাত ধরে ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়ে ১৯৮৭ বিশ্বকাপ জয় করে অস্ট্রেলিয়া।  ১৯৮৯ সালে অ্যাশেজ পুনরুদ্ধার করে, যা ২০০৫ পর্যন্ত ধরে রাখে অসিরা।

কোচিংয়ের পাশাপাশি ১৯৮৭ সালে নির্বাচক প্যানেলেও অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাকে। মার্ক টেইলর, মার্ক ওয়াহ, শেন ওয়ার্ন, ইয়ান হিলি, জাস্টিন ল্যাঙ্গার, ম্যাথু হেইডেন, গ্লেন ম্যাকগ্রা, ডেমিয়েন মার্টিন, রিকি পন্টিং ও এমন আরও অনেকেই অস্ট্রেলিয়া দলে জায়গা পান ও নিজেদের পোক্ত করেন সিম্পসনের তত্ত্বাবধানে।

৭০ বছর বয়স পর্যন্ত কোচিং চালিয়ে যান সিম্পসন। নেদারল্যান্ডসকে ২০০৭ বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করানোর কৃতিত্বও তার।

১৯৭৮ সালে অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়ার সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০০৭ সালে তাকে অফিসার (এও) পদে উন্নীত করা হয়। ১৯৬৫ সালে উইজডেন ক্রিকেটার অব দ্য ইয়ার নির্বাচিত হন সিম্পসন। সব অর্জনকে সঙ্গী করে সিম্পসন এবার পাড়ি জমালেন পরপারে।

ঢাকা/ইয়াসিন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন স ম পসন

এছাড়াও পড়ুন:

মারা গেছেন কিংবদন্তি বব সিম্পসন

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ও দেশটির প্রথম পূর্ণকালীন কোচ বব সিম্পসন সিডনিতে ৮৯ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে ধরা হয় সিম্পসনকে। ১৯৫৭ থেকে ১৯৭৮ পর্যন্ত তিনি খেলেছেন ৬২ টেস্ট, ৪৬.৮১ গড়ে করেছেন ৪ হাজার ৮৬৯ রান, নিয়েছেন ৭১ উইকেট। ছিলেন দুর্দান্ত এক স্লিপ ফিল্ডারও।

তাঁর নামে পাশে আছে ১১০টি ক্যাচও। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ স্পিনও করতেন সিম্পসন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর সংগ্রহে আছে ২১ হাজার ২৯ রান ও ৩৪৯ উইকেট।

১৯৬৮ সালে প্রথমবার অবসরে যাওয়ার আগে ১১ বছরে খেলেন ৫০ টেস্ট, এর মধ্যে ২৯টিতেই তিনি ছিলেন অধিনায়ক। পরবর্তীতে অবসর ১৯৭৭ সালে ৪১ বছর বয়সে আবার টেস্ট দলে ফেরেন সিম্পসন। তখন ভারতের বিপক্ষে ঘরে ও পূর্ণশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দেন। সব মিলিয়ে অধিনায়ক হিসেবে ৩৯ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সিম্পসন।

টেস্টে সিম্পসনের ১০ সেঞ্চুরির সবগুলোই এসেছে অধিনায়ক হিসেবে। ১৯৬৪ সালে ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন ৩১১ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস, যা তাঁর ক্যারিয়ার সেরা। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর গড় ছিল ৫৪.০৭।

শুধু খেলোয়াড় হিসেবে নন, কোচ হিসেবেও দারুণ ভূমিকা রেখেছেন সিম্পসন। ১৯৮৬ সালে কোচের দায়িত্ব নিয়ে অধিনায়ক অ্যালান বোর্ডারের সঙ্গে মিলে তৈরি করেন নতুন সংস্কৃতি।

তিনি এমন একটা সময়ে কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, যখন এর আগের দুই বছরে কোনো টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। তাঁর হাত ধরে উঠে আসেন ডেভিড বুন, ডিন জোন্স, স্টিভ ওয়াহ, ক্রেইগ ম্যাকডারমট, মার্ভ হিউজের মতো খেলোয়াড়রা।

সিম্পসনের যুগেই শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার সোনালি অধ্যায়। ১৯৮৭ সালে কোচের পাশাপাশি তাঁকে নির্বাচক প্যানেলেও যুক্ত করা হয়। এ সময়ই সামনে আসেন মার্ক টেলর, ইয়ান হিলি, মার্ক ওয়াহ, শেন ওয়ার্ন, জাস্টিন ল্যাঙ্গার, ম্যাথু হেইডেন, ডেমিয়েন মার্টিন, গ্লেন ম্যাকগ্রা ও রিকি পন্টিংরা।

সিম্পসনের অধীনেই ১৯৮৭ সালে বিশ্বকাপ জেতে অস্ট্রেলিয়া। পাশাপাশি ১৯৮৯ সালে ফিরে পায় অ্যাশেজ এবং ১৯৯৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সরিয়ে টেস্টে দখল করে নেয় বিশ্বের এক নম্বর আসন। শেন ওয়ার্নসহ অনেক তারকাই পরে বলেছিলেন—তাদের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় প্রভাবক ছিলেন সিম্পসন। নিজে দুর্দান্ত স্লিপ ফিল্ডার ছিলেন বলে কোচ হিসেবেও তিনি ফিল্ডিং ও ফিটনেসকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতেন।

১৯৯৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার কোচের দায়িত্ব শেষে কাজ করেছেন ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে, ভারতের রঞ্জি ট্রফিতে রাজস্থান দলের হয়ে, এমনকি নেদারল্যান্ডসের কোচ হিসেবেও। তাঁর হাত ধরেই নেদারল্যান্ডস খেলেছিল ২০০৭ বিশ্বকাপে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ভারতের পরামর্শকও ছিলেন তিনি।

১৯৭৮ সালে সিম্পসন পান অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়ার সদস্যপদ, ২০০৭ সালে সেটি উন্নীত হয় অফিসার অব দ্য অর্ডারে। ১৯৬৫ সালে হন উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার, আছেন আইসিসি ও অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট হল অব ফেমেও।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মারা গেছেন কিংবদন্তি বব সিম্পসন