ইসরায়েলের কারাগারে গিয়ে সুপরিচিত ফিলিস্তিনি বন্দী মারওয়ান বারগুতিকে হুমকি দিচ্ছেন ইসরায়েলি জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন–গভির। প্রকাশিত একটি ভিডিওতে এ দৃশ্য দেখা গেছে।

ইসরায়েলি কারাগারের এ ভিডিওতে বেন–গভিরকে বলতে শোনা যায়, ‘ইসরায়েলের বিরোধিতা করলে যে কেউ “ধ্বংস” হয়ে যাবে।’

এ ভিডিওর মধ্য দিয়ে অনেক বছর পর বারগুতিকে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে দেখা গেল। ভিডিওতে তাঁকে বয়সের ভারে ক্ষীণ হয়ে পড়া, সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি পরা একজন ব্যক্তি ও প্রায় অচেনারূপে দেখা যায়।

যে-ই ইসরায়েলের জনগণের সঙ্গে ঝামেলা করবে, আমাদের সন্তানদের হত্যা করবে, আমাদের নারীদের হত্যা করবে, তাঁকে আমরা ধ্বংস করে দেব। আমাদের হারাতে পারবে না।ইতামার বেন–গভির, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী

গত বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ওই ভিডিও। তাতে দেখা যায়, বেন–গভির বারগুতিকে বলছেন, ‘যে–ই ইসরায়েলের জনগণের সঙ্গে ঝামেলা করবে, আমাদের সন্তানদের হত্যা করবে, আমাদের নারীদের হত্যা করবে, তাঁকে আমরা ধ্বংস করে দেব। আমাদের হারাতে পারবে না।’

২০০৪ সাল থেকে কারাগারে আছেন ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারগুতি। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) নিয়ন্ত্রণকারী দল ফাতাহর একজন শীর্ষ নেতা তিনি। ২০০০–২০০৫ সালে ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় ইন্তিফাদায় (গণ–অভ্যুত্থান) নেতৃত্ব দেওয়ায় ও জনগণের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে তাঁকে নিশানা করে ইসরায়েল।

মারওয়ানের ছেলে কাসেম বারগুতি মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ভিডিও প্রকাশের পর পরিবার গভীরভাবে তাঁর জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।

কাসেম বলেন, ‘দুই বছর ধরে তাঁকে (মারওয়ান) হুমকি ও আক্রমণের একটি ধারাবাহিকতা চলছে। (গাজায়) যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবার তাঁকে দুই বছর আগে আক্রমণ করা হয় এবং তিনি আহত হন।’

২০০৪ সাল থেকে কারাগারে আছেন ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারগুতি। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) নিয়ন্ত্রণকারী দল ফাতাহর একজন শীর্ষ নেতা তিনি। ২০০০-২০০৫ সালে ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় ইন্তিফাদায় নেতৃত্ব দেওয়ায় ও জনগণের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে তাঁকে নিশানা করে ইসরায়েল।

মারওয়ান বারগুতির ছেলে আরও বলেন, ‘আজ পরিষ্কার হয়ে গেছে যে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী বেন–গভির, যিনি ইসরায়েলের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নেতৃত্বের প্রতিনিধি, তাঁর জীবনকে সরাসরি হুমকির মুখে ফেলেছেন।’

কাসেমের মতে, ‘স্পষ্টভাবে বলা যায় যে তাঁকে (মারওয়ান) তাঁর সেলের ভেতরে হত্যা করার সরাসরি হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর নির্যাতন করা ও নিশানা বানানো আসলে গাজায় ইসরায়েলের চালানো গণহত্যারই অংশ।’

ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, বেন–গভির কারা কমিশনার কোবি ইয়াকোবির সঙ্গে তেল আবিবের গানোট কারাগারে যান। সেখানে ‘বন্দী সন্ত্রাসী’দের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার বিষয়টি কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেন তাঁরা।

কারাগারে মারওয়ান বারগুতিকে বেন–গভিরের হুমকি দেওয়ার একটি দৃশ্য.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র জ দ র হত য ব রগ ত ক জনগণ র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না: জি এম কাদের

আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের।

আজ বুধবার বিকেলে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি ঢাকা জেলা শাখার মতবিনিমিয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ওই সভায় জি এম কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, আমি তার প্রতিবাদ করেছি। একইভাবে এখন বলছি, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।’

জি এম কাদের বলেন, ‘জুলাই গণহত্যায় অনেক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমার ও আমাদের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মিথ্যা হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। মিথ্যা মামলায় যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। আইন উপদেষ্টা ও আইজিপি বলেছেন, অনেক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তাহলে যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না কেন?’

জাতীয় পার্টির চেয়ার‍ম্যান বলেন, ‘আইনের কথা হচ্ছে একজন নিরপরাধকে বাঁচাতে প্রয়োজনে দশজন দোষীকে ছেড়ে দাও। কিন্তু এখন কী হচ্ছে? একজন দোষীকে শাস্তি দিতে দশজন নিরাপদ মানুষকে শাস্তি দিচ্ছে। বাড়িঘর ও অফিসে আগুন দিয়ে, মামলা হামলা করে আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। আমরা বর্তমান সরকারের অপকর্মের বিরোধিতা করছি, ঝুঁকি নিয়ে জনগণের পক্ষে কথা বলছি।’

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের মানুষের মুখে হাসি নেই। দেশের মানুষ অতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে। এখন যারা যা খুশি করতে পারে, তারা তো নির্বাচন চাইবে না। নির্বাচন যত পিছিয়ে যাবে, ততই তাদের লাভ। জনগণের কথা তাদের বিবেচনায় নেই। নির্বাচন চাই না, এটা বলার আপনি কে? সবাইকে বলতে দিন, এটাই তো গণতন্ত্র। স্বৈরাচার হবেন? থাকতে পারবেন না। এ দেশের মানুষ স্বৈরতন্ত্র মেনে নেয় না।’

জি এম কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার আইনের মারপ্যাঁচে আমার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এখন এই সরকারও আইনের মারপ্যাঁচে আমাকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। দেশীয় রাজনীতিবিদ ও বিদেশি কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে একটি সফল সম্মেলনে আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়েছে। চেয়ারম্যান হিসেবে আমি যাকে নিয়োগ দিয়েছি, তাকে বাদ দেওয়ার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ক্ষমতাও আছে। আওয়ামী লীগ সরকার যা করেছে, বর্তমান সরকারও তা–ই করছে, পরিবর্তন কী হলো?’

জি এম কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার বলা হয়, একই কাজ যদি বর্তমান সরকারও করে, তাকে কী বলবেন? আমাদের দলীয় প্রতীক অন্যদের দেওয়া হবে, এমন ভয় দেখিয়ে আমাদের ব্ল্যাকমেল করেছিল আওয়ামী লীগ, এখন আবার সেই খেলা শুরু হয়েছে। সরকার আমাদের পিছে লেগে রয়েছে। সুবিধা তো দূরের কথা, আমরা আমদের সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করতে পারি না। জনগণের চোখে এখন আমরাই মজলুম।’

জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, ইকবাল হোসেন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. খলিলুর রহমান খলিল প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণতন্ত্রের গভীর অসুখ!
  • ফুটবল দলবিহীন শেষ দেশ মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের ঐতিহাসিক অভিষেক
  • শেখ মুজিব জাতির জনক নন, তবে তার ত্যাগ স্বীকার করি: নাহিদ
  • ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা চ্যালেঞ্জের
  • মৌসুমের শেষে বাজারে আসে রুমা অধিকারীর বাগানের ভিন্ন জাতের আম, লাভও বেশি
  • লাঙ্গল কাউকে দিতে চাইলেই আন্দোলন: জি এম কা‌দের
  • আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না: জি এম কাদের
  • গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অনাকাঙ্ক্ষিত ও ঢালাও অভিযোগের প্রতিবাদ সম্পাদক পরিষদের
  • ব্রেভিসের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে র‌্যাঙ্কিংয়ে রেকর্ড লাফ