চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হালদা নদীর শাখা খাল থেকে ১৫ কেজি ওজনের একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার বেলা দেড়টার দিকে রাউজান উপজেলার পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের কাগতিয়া খালের মজিদাপাড়া থেকে খালে ভাসমান অবস্থায় ডলফিনটি উদ্ধার করা হয়।

মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভেসে ওঠা ডলফিনের কিছু অংশ পচে গেছে। ডলফিনটি উদ্ধারের পর প্রাথমিক সুরতহাল করে মাটিচাপা দেন উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের কর্মী, নৌ পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকেরা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) হালদা রিচার্স অ্যান্ড ল্যাবরেটরি সেন্টারের তথ্যমতে, চলতি বছরে হালদায় মারা যাওয়া দ্বিতীয় ডলফিন এটি।

রাউজান উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডলফিনটি চার থেকে পাঁচ দিন আগে মারা গেছে। এ কারণে সামন্য পচন ধরেছে। তাই ময়নাতদন্ত না করে এটি মাটিচাপা দেওয়া হয়। মৎস্য অধিদপ্তরের ধারণা, নদীদূষণ কিংবা মাছ ধরতে নদীতে বিষ দেওয়ার কারণে মৃত্যু ঘটতে পারে ডলফিনটির।

উদ্ধারকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডলফিনটির ওজন প্রায় ১৫ কেজি। দৈর্ঘ্য পাঁচ ফুট। এর আগে সর্বশেষ এক সপ্তাহ আগে কাগতিয়া খালের ৩ কিলোমিটার দূরে নদীর বিনাজুরী এলাকা থেকে আরেকটি ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছিল। এ নিয়ে গত ৬ বছরে হালদা থেকে ৪৮টি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হলো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আজ বুধবার পর্যন্ত হালদা এবং এর শাখা খালে মোট ৪৮টি ডলফিন মরে ভেসে ওঠে। দু-একটি ছাড়া প্রায় সব ডলফিনেরই শরীরে আঘাতের চিহ্ন শনাক্ত করেছিল উদ্ধারকারী কর্তৃপক্ষ। একাধিক ডলফিনকে হত্যাও করা হয়।

হালদা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হালদার ডলফিন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) লাল তালিকাভুক্ত (অতিবিপন্ন প্রজাতি) জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী । বিশ্বের বিভিন্ন নদীতে বিপন্ন প্রজাতির ডলফিন আছে মাত্র ১ হাজার ১০০টি। এর মধ্যে শুধু হালদাতেই ছিল ১৭০টি। গত ৭ বছর হালদায় ৪৮টি ডলফিন মারা যাওয়ার ঘটনাটি খুবই উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন নদী ও প্রাণী বিশেষজ্ঞরা।

নদী গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান মনজুরুল কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, এটি পচন ধরার ময়নাতদন্ত ছাড়া প্রাথমিক সুরতহাল করে নদী পাড়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।

রাউজান উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নদীদূষণের কারণে এই ডলফিনের মৃত্যু হতে পারে। তাঁদের প্রাথমিক সুরতহালে এ তথ্য উঠে এসেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন উপজ ল মৎস য

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন

রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে নগরের বিনোদপুর এলাকা থেকে এ দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়। আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) রাজশাহী মহানগর শাখা এ ম্যারাথনের আয়োজন করে।

ম্যারাথনে অংশ নিতে প্রতিযোগীরা আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার পর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে জমায়েত হতে থাকেন। সকাল ছয়টার পর শুরু হয় পাঁচ কিলোমিটারের ম্যারাথন প্রতিযোগিতা।

অংশগ্রহণকারীরা বিনোদপুর থেকে শুরু হয়ে নগরের তালাইমারী মোড় হয়ে আবার বিনোদপুর হয়ে চৌদ্দপায় ফায়ার সার্ভিস মোড় হয়ে আবার বিনোদপুরে ফিরে আসেন।পরে সেখানে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। প্রথম পুরস্কার ১০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৮ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী তিন নারীসহ আরও ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।

ম্যারাথন উপলক্ষে আগে থেকেই মেডিকেল টিমসহ একটি অ্যাম্বুলেন্স ছিল। এ ছাড়া সবার জন্য টি-শার্ট, গ্লুকোজ পানিসহ বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। ম্যারাথনে অংশ নেওয়াদের বেশির ভাগই ছিল তরুণ। তাঁদের মধ্যে বেশি বয়সী নারীরাও অংশ নেন।

প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ৫৮ বছর বয়সী পিয়ারুল ইসলাম বলেন, এ উদ্যোগ খুবই ভালো হয়েছে। অসুস্থমুক্ত জীবন গড়তে হলে দৌড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। শারীরিক বিভিন্ন অ্যাকটিভিটিসের মধ্যে থাকলে সুস্থ জীবন গড়া যায়। এ বয়সে তাঁর কোনো ওষুধ লাগে না। তাঁরও অনেক সিনিয়র আছেন, কারও বয়স ৭৫, তাঁদেরও ওষুধ লাগে না। তাই এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। সবাইকে উদ্ধুব্ধ করতে হবে। যাতে নিজেদের শরীরকে সব সময় উপযুক্ত রাখে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, অনেক দিন পর তিনি দৌড়াবেন। সাধারণত দৌড়ানো হয় না। আজকের পর থেকে তিনি প্রতিদিন সকালে উঠে দৌড়াবেন।

স্থানীয় বাসিন্দা নাঈম হাসান বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থান শুধু সরকারের পতন নয়। এর মাধ্যমে এ দেশের মানুষ একটি নতুন নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সেই নতুন নিশ্বাস নিয়ে ম্যারাথনে তিনি অংশ নিয়েছেন।

ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় ১৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহী নগরের বিনোদপুর এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ