ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করার দুই বছর পার হলো। ২০২৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে গণরুমে ডেকে তাঁকে রাতভর নির্যাতন করেছিলেন ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) নেতা–কর্মীরা। সেই রাতের স্মৃতি মনে করে গতকাল বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ফুলপরী। বলেছেন, ‘মস্তিষ্ক যত দিন সুস্থ থাকবে, সেই রাত তত দিন স্মৃতি হয়ে থাকবে।’

ফুলপরী লিখেছেন, ২০২৩ সালের ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারির সময়টায় তিনি অনেক অসহায় ছিলেন। তিনি কিছু করেননি, অথচ ২০২৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অপমানের শিকার হয়েছিলেন। তাঁর ভাষায়, ‘জীবনে ফেলা আসা রাতগুলোর মধ্যে ওটা জঘন্যতম রাত। মনে হচ্ছিল, কোনো কোনো মার্ডার করা আসামির রিমান্ড চলছে। সঙ্গে সুইসাইড নোট আর শ্বাসকষ্টের জন্য আমারই ইনহেলার চেয়েও পাইনি। চলছে তো চলছেই, রাত শেষ হয়ে যায়, তা–ও প্রতিহিংসা বিন্দুমাত্র কমে না।’

পৃথিবীর কোনো প্রাণীকে ভয় পাওয়ার জন্য জন্ম হয়নি উল্লেখ করে ফুলপরী লিখেছেন, ‘তারা ভয় দেখায় যে মাঝরাতে হল থেকে বের করে দিব। শেয়াল–কুকুর ছিঁড়ে খাবে। বোকা চন্দ্রবিন্দুরা জানে না আমি ছোট থেকে শিয়াল–কুকুরের সঙ্গেই অন্ধকারে থেকে বড় হয়েছি। ভয় দেখায়ে বিন্দুমাত্র লাভ নাই। যাদের চিনি না, যাদের সঙ্গে কোনো শত্রুতা নেই, তারা শুধুমাত্র ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করার জন্য সাধারণ একটা নিরুপায় মনকে দুমড়েমুচড়ে পঙ্গু করে দেয়। মাথা উঁচু করে বাঁচার অধিকারটা হরণ করে নিতে চায়। নিষ্পাপ মনগুলোর হাহাকার, আত্মচিৎকার আপনাআপনিই অভিশাপে রূপ নেয়। তাদের কর্মফল নিশ্চয়ই হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা আবাসিক হলের গণরুমে আটকে রেখে ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরীকে নির্যাতন করা হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করার পর সারা দেশে আলোচনার ঝড় ওঠে। গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী গাজী মো.

মহসীন রিট করেন।

২০২৩ সালের ২১ আগস্ট ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগের নেত্রীসহ পাঁচজনকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। তাঁরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী, হালিমা আক্তার, ইসরাত জাহান, তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান।

ফুলপরী খাতুন এখন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে থাকেন। তিনি দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন। সেই রাতের ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র দুই থেকে তিনবার শেখ হাসিনা হলে গিয়েছিলেন। প্রথম এক বছর তাঁর সঙ্গে তেমন কেউ মিশতেন না। তবে এক বছর ধরে তাঁকে ডেকে ডেকে সবাই কথা বলেন বলে জানালেন তিনি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ২০২৩ স ল র র জন য ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

৭৮০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে পূবালী ব্যাংক

বেসরকারি খাতের পূবালী ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকার রেকর্ড পরিচালন মুনাফা করলেও বছর শেষে ব্যাংকটির নিট মুনাফা হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়নি। গত বছর শেষে পূবালী ব্যাংকের নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৭৮০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি নিট মুনাফা করেছিল ৬৯৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মুনাফা ৮২ কোটি টাকা বা প্রায় ১২ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি গত বছরের জন্য লভ্যাংশও অনুমোদন করা হয় গতকালের এই সভায়। গত বছরের জন্য ব্যাংকটি ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যার মধ্যে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। ২০২৩ সালেও ব্যাংকটি একই হারে শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দিয়েছিল।

ব্যাংকসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংক ঋণের সুদ থেকে ১ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা আয় করেছে। বিনিয়োগ, কমিশন, মুদ্রা বিনিময় ও ব্রোকারেজ থেকে আয় করেছে ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। তাতে সব মিলিয়ে আয় হয় ৪ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। বিদায়ী বছরে বেতন-ভাতাসহ নানা খাতে খরচ হয় ১ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা। ফলে পরিচালন মুনাফা হয় ২ হাজার ৩০১ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিদায়ী বছরে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করে ৯৬১ কোটি টাকা। এরপর কর পরিশোধের পর নিট বা প্রকৃত মুনাফা হয় ৭৮০ কোটি টাকা।

জানতে চাইলে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় আমরা চাহিদার বেশি নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এই পরামর্শ দিয়েছে। খেলাপির তুলনায় বেশি সঞ্চিতি রাখার মাধ্যমে ব্যাংকটির ভিত্তি মজবুত করা হয়েছে।

ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংকের আমানত বেড়ে হয়েছে ৭৪ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এ সময়ে ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ৬২ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণের হার কমে নেমে এসেছে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশে। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন এখন ১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। আর কর্মীর সংখ্যা ১০ হাজার ৬৭৮। সারা দেশে ৫০৮টি শাখা ও ২২৭টি উপশাখা রয়েছে ব্যাংকটির। বর্তমানে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বেশি নেটওয়ার্ক পূবালী ব্যাংকের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২০২৬ এশিয়ান গেমসেও থাকছে ক্রিকেট
  • শক্তিশালী ব্যালান্স শিট প্রবৃদ্ধিসহ ২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য সাফল্য
  • ২০২৪ সালে রেকর্ড হারে বেড়েছে বিশ্বের সামরিক ব্যয়: সিপ্রির প্রতিবেদন
  • ২০২৬ এশিয়ান গেমসেও থাকছে ক্রিকেট
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের পদাবনতি, দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
  • ৭৮০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে পূবালী ব্যাংক
  • দুই বছর ধরে ঝুলছে যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলার তদন্ত
  • নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের জবি শাখার ৩৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
  • সড়কের কাজ ফেলে রেখে উধাও ঠিকাদার, দুর্ভোগে অর্ধলাখ বাসিন্দা
  • তালেবান সরকার কেন ভারতের দিকে ঝুঁকছে