অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ঐক্যবদ্ধ গ্রামবাসী
Published: 18th, February 2025 GMT
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার জসমতপুর গ্রামের পার্শ্ববর্তী ধলাই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এদিকে এই দাবি উত্থাপনের পর স্থানীয়দের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের পশ্চিম জসমতপুর এলাকায় এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজিত হয়। এতে অংশ নেয় জসমতপুর, দক্ষিণ ধর্মপুর, পাথরটিলা ও কালাছড়া গ্রামের পাঁচ শতাধিক মানুষ।
সমাজসেবক আইয়ুব আলীর সভাপতিত্বে এবং নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য দেন ব্যবসায়ী কামাল মিয়া, আব্দুর রউফ, আজাদ মিয়া, নাসির মিয়া, আমির আলী, তাহির মিয়া, জুয়েল মিয়া, হৃদয় মিয়া প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ইজারাদারের লোকজন জসমতপুর মৌজায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর তলদেশ থেকে বালু তুলছে। এতে নদীতীরের হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি ও বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এসব নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক অভিযোগ করার পরও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম জানান, ধলাই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর তীর রক্ষা বাঁধ, ফসলি জমি, ঘরবাড়ি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই এলাকার শিবলু খানঁ, রকি, সুয়েব মিয়া ও ইসমাইল মিয়া এখান থেকে বালু তুলছেন।
অভিযোগের বিষয়ে ব্যবসায়ী সুয়েব মিয়া ও ইসমাইল মিয়া জানান, তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সঠিক নয়। তারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত নন।
কমলগঞ্জ ইউএনও মাখন চন্দ্র সূত্রধর জানান, অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধ করা হয়েছে। তিনটি বালু তোলার ড্রেজার মেশিন জব্দ করা হয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।