৬ আগস্ট থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত, পুলিশের বিপ্লব কুমার ও মেহেদী হাসান সাময়িক বরখাস্ত
Published: 24th, February 2025 GMT
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দুই যুগ্ম কমিশনারকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন ডিএমপির (দক্ষিণ) যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার এবং যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান।
গত বছরের ৬ আগস্ট থেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে মৌখিক বা লিখিতভাবে না জানিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তাঁদের বরখাস্ত করা হয় বলে প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
আজ সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে জারি করা পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেন জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গণি।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিপ্লব কুমার সরকার ও এস এম মেহেদী হাসান গত বছরের ৬ আগস্ট থেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে মৌখিক বা লিখিতভাবে অবহিত না করে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তাই তাঁদের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট থেকে সরকারি চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
সাময়িক বরখাস্তকালীন বিপ্লব কুমার সরকার বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে এবং এস এম মেহেদী হাসান সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন। বিধি অনুযায়ী তাঁরা খোরপোষ ভাতা পাবেন।
আরও পড়ুনসাবেক দুই আইজিপিসহ ৮৮ পুলিশের নামে হত্যা মামলা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২৭টি খুনের মামলার আসামি হয়েছেন বিপ্লব কুমার সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, লালবাগ, শেরেবাংলা, নিউমার্কেট, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন থানায় এসব মামলা করেছেন নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা।
এস এম মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী, লালবাগ, নিউমার্কেট, আদাবর ও ধানমন্ডি থানায় আটটি মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুনসাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ও পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব সরকারের ব্যাংক হিসাব স্থগিত২০ আগস্ট ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ৬ আগস ট থ ক
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ