বগুড়ার শাজাহানপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জন নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। সোমবার বিকেলে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক শাজাহানপুর এলাকায় অবরোধ করলে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে রোজাদার ব্যক্তি ও যাত্রীরা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে এলাকাবাসী দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে অবরোধ তুলে নেন। 

জানা যায়, সকাল ৯টার দিকে মাঝিড়া বন্দর এলাকায় বেপরোয়া গতির ট্রাকের ধাক্কায় মিরাজুল ইসলাম (২৫) নামের এক রিকশাচালক নিহত হন। তিনি শাজাহানপুর উপজেলার গয়নাকুড়ি গ্রামের হাজেল মিয়ার ছেলে। ঘটনাস্থল থেকে ঘাতক ট্রাক আটক করা হয়। তবে চালক ও হেলপার কৌশলে পালিয়ে যান। 

একইদিনে মাঝিড়া বন্দর এলাকায় বেলা তিনটার দিকে সড়ক পারাপারের সময় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এক অজ্ঞাত ব্যক্তি নিহত হন। এসময় একই স্থানে বারবার দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসী মহাসড়ক অবরোধ করেন। 

এলাকাবাসীর দাবি, মাঝিড়া বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ তিনটি এলাকার সড়কে ওভারপাস বা আন্ডারপাস নির্মাণ করতে হবে। তারা মৌখিক নয়, লিখিত আশ্বাস চান। বিক্ষোভ শুরু হলে বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। তবে বিক্ষোভকারীরা কোনো কথা না শুনে তাদের বিক্ষোভ চালিয়ে যান। তাদের এই বিক্ষোভের কারণে বনানী থেকে শেরপুর পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। রোজাদার যাত্রীরা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন এবং রাস্তার মাঝখানেই তারা ইফতার করেন। পরে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করতে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত প্রশাসক (সার্বিক) মেজবাউল ঘটনাস্থলে পৌঁছান। 

এসময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তার গাড়ি দেখে লাঠি নিয়ে এগিয়ে যায় বিক্ষুব্ধ জনতা। তারা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেন। পরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদেও দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে তারা মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন।

বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মেজবাউল করিম বলেন, মাঝিড়া বন্দরে ওভারপাস নির্মাণের দাবি মেনে নেওয়ার পর অবরোধকারীরা শান্ত হন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন সড়ক অবর ধ এল ক ব স র ঘটন য় অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৩ ঘণ্টা পর রংপুরের রেল যোগাযোগ সচল
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
  • হেরোইন বিক্রির অভিযোগে ধামরাইয়ে গ্রেপ্তার ৩