সোনারগাঁয়ে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় বিএনপি নেতাকে মারধর
Published: 12th, March 2025 GMT
সোনারগাঁ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চরকামালদি গ্রামে বিএনপির নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে জাতীয় পার্টি নেতা হযরত আলী গংগদের বিরুদ্ধে।
উপজেলার বিএনপি'র মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ প্রধান এ ঘটনায় শনিবার সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ।
অভিযোগ সূত্র জানা যায় যে,নুরুল হক মোল্লা , মোঃ হযরত আলী মোল্লা , বাবু মোল্লা , মোঃ শামিম মোল্লা ৫। মোঃ সাদেক মোল্লা সর্ব সাং-চরকামালদী, ডাকঘর- ধন্দীয় বাজার, থানা-সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জসহ অজ্ঞাত নামা ৪/৫জন বিবাদীগণদের বিরুদ্ধে এই মর্মে অভিযোগ করিতেছি যে, বিবাদীগণ পরস্পর একদলভুক্ত, উচ্ছৃংখল, দাঙ্গাবাজ, পরধনলোভী ও খারাপ প্রকৃতির লোক।
গত শুক্রবার চরকামালদী উত্তর পাড়া মসজিদের সামনে সানাউল্লাহ বন্ধু আমানকে উপরোক্ত বিবাদীণ রাস্তায় আটকাইয়া তাহার কাছ থেকে ওয়াইফাই ও ডিসের মেশিন যাহার অনুমান মূল্য দুই লাখ টাকা জোর পূর্বক রাখিয়া দেয় এবং তাহার কাছে চাঁদা দাবি করে।
পরবর্তীতে আমান সানাউল্লাহ কাছে আসিয়া উক্ত বিষয়ে জানাইলে আমি স্থানীয় এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়া উক্ত বিষয়টি সমাধান করার জন্য একটি উঠান বৈঠক শালিশ বসাই।
উক্ত উঠান বৈঠক শালিশে বিবাদীগণকে ডাকাইয়া আমানের মেশিন ফেরত দিতে বলিলে উপরোক্ত বিবাদীগণ সানাউল্লাহ উপর ক্ষপ্তি হইয়া দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র অবৈধ পিস্তল, রামদা, চাপাতী, ছুরি, লোহার রড, এসএস পাইপ, অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করিয়া সানাউল্লাহকে এলোপাথারী মারধর করিয়া আমার শরীরে বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা করে।
মারধরের এক পর্যায়ে সানাউল্লাহ গলায় থাকা ১৬রি স্বর্ণের চেইন যাহার অনুমান মূল্য- ১,৪০,০০০ (এক লক্ষ চল্লিশ হাজার) টাকা উপরোক্ত হযরত ছিনাইয়া নিয়া যায়।সানাউল্লাহ ডাক চিৎকার শুনিয়া আশে পাশের লোকজন আগাইয়া আসিলে নুরুল হক মোল্লা পিস্তল দিয়ে ফাকা গুলি করে এবং বিবাদীগণ পরবর্তীতে সানাউল্লাহ্ বাড়িতে ডাকাতি করিবে ও গাড়িতে আগুন দিয়া দিবে।
পুকুরের মাছ মারিয়া ফেলবে ও পরিবারের লোকজনদের যে কোন সময় মারধর করিয়া প্রাণনাশ করিবে বলিয়া হুমকি প্রদান করে।
সানাউল্লাহ জানান, বিবাদীরা খারাপ প্রকৃতির লোক তাহারা যেকোন সময় আমাকেসহ আমার পরিবারের লোকজনদের মারধর করিয়া খুন যখম করত দাঙ্গাহাঙ্গামা করিয়া আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাইতে পারে মর্মে ভীত আশংখায় আছি। এমতাবস্থায় উক্ত বিষয়টি নিয়া আমি মানসিক ভাবে চিন্তিত এবং হতাশাগ্রস্থ হয়ে আছি।
এই বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা যুবদল নেতা ও বিশিষ্ট মৎস্য ব্যবসায়ী ওয়াজকুরনীকে জড়িয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করা হয়ছে।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ আবদুল বারী জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্হা নেওয়া।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ব এনপ ন র য়ণগঞ জ স ন উল ল হ স ন রগ ম রধর উপর ক
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষক রায়হান অভিযুক্ত হলেও নাম নেই অস্ত্র ব্যবসায়ীর
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শ্রেণিকক্ষে গত বছরের ৪ মার্চ শিক্ষার্থীকে গুলির একটি মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে ডিবি। এতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে গুলি করা কলেজের কমিউনিটি মেডিসিনের প্রাক্তন শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে নাম নেই যার কাছ থেকে ডা. রায়হান অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন সেই এস এস আল হোসাইন ওরফে সোহাগের। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার নওদাপাড়ার সোহাগের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র-বিস্ফোরক ও নাশকতার একাধিক মামলা আছে।
গত বছরের ৪ মার্চ ব্যাগভর্তি অস্ত্র-গুলি নিয়ে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ভয় দেখান শিক্ষক রায়হান। তার দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদ করায় তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে লক্ষ্য করে শিক্ষক রায়হান গুলি করেন। শিক্ষার্থী তমাল বাম উরুতে গুলিবিদ্ধ হলেও বর্তমানে সুস্থ। ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ব্যাগভর্তি অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন শিক্ষক রায়হান। তাঁর ব্যাগে লাইসেন্সবিহীন দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি জাপানি সামুরাই, ১০টি বার্মিজ ছুরি ও ৭৮ রাউন্ড তাজা গুলি পাওয়া যায়। ডা. রায়হানের বিরুদ্ধে সে সময় আহত শিক্ষার্থী তমালের বাবা বগুড়ার আবদুল্লাহ আল আমিন হত্যাচেষ্টা ও ডিবি পুলিশ বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হন রায়হান। যদিও পরবর্তী সময়ে জামিন নিয়ে রায়হান এখন পলাতক। ঘটনার পর থেকে উধাও অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগও।
পুলিশ সূত্র জানায়, ডা. রায়হান সিরাজগঞ্জ আদালতে স্বীকারোক্তি ও জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, সোহাগের কাছ থেকেই সব অস্ত্র কিনেছেন। এরপর অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে সোহাগ ও রায়হানের বিরুদ্ধে মামলা করেন সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশের সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী। অভিযোগ উঠেছে, অভিযোগপত্র থেকে সোহাগের নাম বাদ দিয়েছেন ডিবির বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাজমুল ইসলাম ও ইউনিট ওসি ইকরামুল হোসাইন। ডিবির তদন্ত ও দাখিলকৃত অভিযোগপত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাঁর বাবা।
সিরাজগঞ্জ ডিবির এসআই নাজমুল হক নতুন তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলেও তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তাঁর ইউনিটপ্রধান বর্তমান ওসি ইকরামুল হোসাইন আজ ২৯ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার কাছে থেকে পুলিশ পদক নিতে ঢাকায় রয়েছেন। তিনি ফোনে দাবি করেন, ডা. রায়হান আদালতে ১৬৪ ধারায় বিচারকের সামনে সোহাগের নাম বললেও তাঁর বাবা বা গ্রামের নাম জানাতে পারেননি। মামলার বাদী এজাহারে যে সোহাগের নাম-ঠিকানা উল্লেখ করেন, তিনি এতে জড়িত নন। বিএনপি করার কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি করতেই আগের সরকারের সময় সাবেক এসপি ও ওসি সোহাগকে জড়িয়েছেন। শিক্ষক রায়হান যে সময় অস্ত্রগুলো কিনেছিলেন, তার আগে থেকেই সোহাগ ঢাকা ও ভারতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ইমিগ্রেশন ও হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
এ বিষয়ে সাবেক এসপি আরিফুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া না গেলেও মামলার বাদী ডিবির সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী বলেন, শিক্ষক রায়হানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে সোহাগের কথোপকথন ও লেনদেনের বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়। তাই এজাহারে সোহাগের নাম ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করা হয়।
সমকালের অনুসন্ধানেও সাবেক এসআই ওয়াদুত আলীর এজাহার অনুযায়ী সোহাগের ফোন নম্বরের কল ডিটেইল এবং এনআইডি নম্বর সংগ্রহ করা হয়। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সোহাগেরই তথ্য ও ছবি পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে শিক্ষক রায়হান শরীফ গতকাল ফোনে বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। ডিবির চার্জশিটের বিষয়টি জানি না।’
মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইব্রাহিম হোসেন বলেন, চার্জশিট থেকে সোহাগকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি আত্মঘাতী ও তদন্তের নীতিমালার বাইরে।
জানা গেছে, ভেড়ামারার স্বেচ্ছসেবক দলের সদস্য সচিব কথিত অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগ। গতকাল তিনি ফোনে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অস্ত্র, খুন ও নাশকতা মামলাগুলো রাজনৈতিক। আমি অস্ত্র ব্যবসায়ী নই। রাজনৈতিক এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা করায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।
রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা স্বাধীন হলেও পুলিশ সুপার, সার্কেল অফিসার ও সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ওসি সুপারভাইজরি অথারিটি। বিষয়টি খতিয়ে দেখব।