কক্সবাজারের উখিয়ার বনে প্রায় ৩৫ বছর বয়সী একটি এশিয়ান জাতের পুরুষ বন্য হাতির মরদেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। হাতিটির মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল। দেড় কিলোমিটারজুড়ে দেখা যায় ছোপ ছোপ রক্ত। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে উখিয়া রেঞ্জের সদর বিটের জুমছড়ি এলাকার পাহাড়ি এলাকা থেকে হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

কক্সবাজার (দক্ষিণ) বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো.

নুরুল ইসলাম বলেন, শারীরিকভাবে অসুস্থতার কারণে ৩৫ বছর বয়সী পুরুষ হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হাতির মুখ দিয়ে রক্তবমি বের হয়েছে, যা বনের ভেতরে হাতির চলাচলের পথে প্রায় দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত দেখা যায়। বিকেলে সুরতহাল প্রতিবেদন ও নমুনা সংগ্রহ করে মৃত হাতিটি মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে এলে জানা যাবে হাতির মৃত্যুর কারণ।

কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা বলেন, উখিয়া ও টেকনাফের সাত হাজার একরের বেশি বনাঞ্চল ও পাহাড় ধ্বংস করে আট বছর আগে গড়ে তোলা হয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়শিবির। দুই উপজেলার ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে বর্তমানে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখের বেশি। আশ্রয়শিবির গড়ে তোলার কারণে ৫০টির বেশি এশিয়ান জাতের বন্য হাতি খাবার সংকটে পড়েছে। হাতি চলাচলের সাতটির বেশি করিডর দখল হয়ে যাওয়ায় টেকনাফের বনাঞ্চলের হাতিরা উখিয়া-রামু এবং রামু ও উখিয়া বনাঞ্চলের হাতিরা টেকনাফের দিকে যেতে পারছে না। তা ছাড়া পাহাড়ি ছড়া, জলাশয় ভরাট হওয়ায় হাতি খাবার পানির সংকটেও পড়েছে। রোগাক্রান্ত হয়ে হাতির মৃত্যু হচ্ছে। প্রসবের সময় মা হাতির মৃত্যু ঘটনাও ঘটছে। এ নিয়ে গবেষণা দরকার।

বনকর্মীরা জানান, গত ৪ জানুয়ারি টেকনাফের গহিন পাহাড়ে শাবকের জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায় একটি মা হাতি। বেঁচে যাওয়া শাবকটি উদ্ধার করে বন বিভাগ। সেটি এখন কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে লালনপালন করা হচ্ছে। একইভাবে সাফারি পার্কটিতে মানুষের স্নেহে বড় হচ্ছে আরও দুটি শাবক। ওই দুটি শাবককে এর আগে উদ্ধার করে সাফারি পার্কে আনা হয়।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।

বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।

অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।

আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ