কষ্ট পুষে রাখা মানুষটির আজ জন্মদিন
Published: 16th, August 2025 GMT
১৮ অক্টোবর ২০১৮। সকাল থেকেই ছড়িয়ে পড়ল খবরটা—আইয়ুব বাচ্চু নেই! বেলা বাড়তেই হাসপাতাল লোকারণ্য। চট্টগ্রামের শেষযাত্রার আয়োজনে জনসমুদ্র। এত বিষণ্নতা নিকট অতীতে দেখেনি ব্যান্ড সংগীতের সাম্রাজ্য। শুধু কি সাম্রাজ্য? ফিকে হয়ে গেল এ প্রজন্মের ব্যান্ড সংগীত অনুরাগীদের ছেলেবেলা! চলে গেলেন ‘গিটারের জাদুকর’! এই শোক কতটা কাটিয়ে উঠতে পারবে দেশের ব্যান্ড সংগীতাঙ্গন? আপামর সংগীতপ্রেমীর দল? মাত্র ছাপ্পান্নতেই সব শেষ! ক্যালেন্ডারের পাতায় যদি সেই দিনটি না থাকত, ১৮ অক্টোবর ২০১৮? তাহলে আজ তিনি পূর্ণ করতেন ৬৩, পড়তেন ৬৪তম বছরে। ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরে মাত্র ছাপ্পান্ন বছরের সময় হাতে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। বাবা চেয়েছিলেন ছেলের এমন একটা নাম হবে, যা অন্য কারও নেই। যেমন আইয়ুব আলী, আইয়ুব হোসেন—এমন তো হয়-ই। দুটি নাম থেকে আলাদা অংশ নিয়ে রাখা হলো, আইয়ুব বাচ্চু। সেই থেকে তিনি হলেন ‘ওয়ান অ্যান্ড অনলি’।
মা-বাবার আদরের ছেলে। তাই বলে যে সংগীতচর্চার জন্য খুব একটা অনুকূল পরিবেশ তিনি পেয়েছিলেন, তা কিন্তু নয়। সেই ছোটবেলা থেকেই সংসারে থেকেও বোহেমিয়ান আইয়ুব বাচ্চু। বাউন্ডুলে স্বভাবের জন্য সংসারের কিছুই যেন স্পর্শ করতে পারছিল না তাঁকে। বাবার ব্যবসায় মন বসে না, লেখাপড়ায় মন বসে না। অনিশ্চিত এক ভবিষ্যৎ ছিল তাঁর।
সব ছাপিয়ে আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন গিটারের জাদুকর.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইয় ব ব চ চ
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়সসীমা নির্ধারণ অবৈধ ঘোষণার বিরুদ্ধে আপিল শুনবেন পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ
মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়সসীমা নির্ধারণ করে জারি করা পৃথক গেজেট–পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনবেন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানি আগামী ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ। শুনানি নিয়ে আজ বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ ওই সময় পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
পৃথক পরিপত্র ও গেজেটের মাধ্যমে ১৩ বছর এবং পরে সাড়ে ১২ বছর মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়সসীমা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে সম্মানী ভাতা নিয়ে জটিলতায় মুক্তিযোদ্ধাদের করা পৃথক ১৫টি রিটের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ১৯ মে হাইকোর্ট ওই রায় দেন। এ–সংক্রান্ত রায়ের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। এই লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি আদেশ দেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে হাইকোর্টের রায়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলা হয়।
এর ধারাবাহিকতায় গত বছর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। আপিলের ওপর ৪ মে শুনানি শুরু হয়। আগের ধারাবাহিকতায় আপিল শুনানির জন্য আপিল বিভাগের আজকের কার্যতালিকায় ২ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শুনানিতে অংশ নেন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর সাদাত শুনানিতে অংশ নেন। রিট আবেদনকারীপক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ে রাজনৈতিক বিষয় এসেছে। পাশাপাশি সংবিধানের ১৫০ অনুচ্ছেদসহ গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে। যে কারণে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ (আপিল বিভাগের সব বিচারপতি) শুনবেন বলেছেন আপিল বিভাগ। আগামী ২৯ অক্টোবর আপিল শুনানির জন্য তারিখ ধার্য করেছেন আদালত। সেদিন শুনানির জন্য আপিলটি কার্যতালিকার শীর্ষে থাকবে।’
রিট আবেদনকারীপক্ষের তথ্য অনুসারে, ২০১৪ সালের জুনে এক সার্কুলারে মুক্তিযোদ্ধার ন্যূনতম বয়সসীমা ১৩ বছর নির্ধারণ করা হয়। ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর ‘মুক্তিযোদ্ধা এর সংজ্ঞা ও বয়স নির্ধারণ’ করে গেজেট করা হয়। এতে বলা হয়, ‘মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তারিখে ন্যূনতম ১৩ বছর হতে হবে। ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি এটি সংশোধন করে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১২ বছর ৬ মাস। এসবের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে মুক্তিযোদ্ধারা হাইকোর্টে পৃথক রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বিভিন্ন সময়ে রুল দেন। রুলের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ১৯ মে হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স নির্ধারণে সরকারকে সীমিত ক্ষমতা দেওয়া–সংক্রান্ত ২০১৮ সালের বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আইনের ২(১১) বিধানে অংশবিশেষ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হয়। রিট আবেদনকারীদের বন্ধ করা সম্মানী ভাতাদি চালু করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।