দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির পৃথক দুটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ১২০১ কোটি ৪১ লাখ ৪০ হাজার ৩২০ টাকা। তবে ১৭তম কার্গো এলএনজি’র চেয়ে ১৮তম কার্গো এলএনজি ক্রয়ে ১৩৯ কোটি ৮৫ হাজার ৮৫৬ টাকা বেশি ব্যয় হবে।

মঙ্গলবার (৮এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সভাপতিত্ব করেন। 

সভা সূত্রে জানা গেছে, ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে ১ কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

সূত্র জানায়, পেট্রোবাংলা ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২২টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৬টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। তার মধ্যে ৫টি প্রস্তাব কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সকল প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি’র (পিইসি) সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুর ভিত্তিক ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এক কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। এতে ব্যয় হবে  ৫৯৩ কোটি ৭৫ লাখ ২৭ হাজার ২৩২ টাকা।

সভায়‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে ১ কার্গো এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

পেট্রোবাংলা ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২২টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৪টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তব দাখিল করে। ৪টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি’র (পিইসি) সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মেসার্স টোটালএনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড এই এক কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬০৭ কোটি ৬৬ লাখ ১৩ হাজার ৮৮ টাকা।

ঢাকা/হাসনাত/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত ব সরবর হ

এছাড়াও পড়ুন:

পাবনায় আগাম পাটের বাজার চড়া, বেশি দাম পেয়ে কৃষক খুশি

সপ্তাহ দুয়েক ধরে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বাজারগুলোতে নতুন পাট উঠতে শুরু করেছে। গত বছরের তুলনায় এবার মণপ্রতি প্রায় এক হাজার টাকা বেশি দামে পাট বিক্রি করছেন কৃষকেরা। এ ছাড়া এবার পাটের ফলন যেমন ভালো হয়েছে, পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় জাগ দেওয়ার জন্য পানির অভাবও হয়নি। সব মিলিয়ে এবার পাটচাষিরা বেশ খুশি।

গত বছরের শুরুতে নতুন পাট বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৯০০ টাকা মণ দরে। এবার কৃষকেরা নতুন পাট বিক্রি করছেন মণপ্রতি ৩ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার ৮০০ টাকায়। এবার প্রতি মণে বাড়তি পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

উপজেলার আমাইকোলা গ্রামের কৃষক আরশেদ আলী বলেন, ‘এবার পাটের ফলনও ভালো হইছে, আবার দামও ভালো পাত্যাছি। এবার নতুন পাট বেইচ্যা মণে হাজার বারো শ টাকা লাভ পাত্যাছি। তয় এমন ভালো দাম কয়দিন থাকে কিডা জানে।’

উপজেলা কৃষি কার্যালয় ও স্থানীয় কয়েকজন কৃষকের সূত্রে জানা যায়, সাঁথিয়া উপজেলায় এবার ৭ হাজার ৮৪৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ায় এবার প্রতি বিঘায় গড়ে ৯ মণ ফলন পাওয়া গেছে। এ ছাড়া গত বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন কৃষকেরা। কিন্তু এবার পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় তেমন পরিস্থিতি হয়নি।

তবে কৃষকদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় এবার পাটের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। বিশেষ করে এবার শ্রমিক প্রতি খরচ বেশি পড়েছে। গত বছর দৈনিক ৭০০ টাকা মজুরিতে শ্রমিক পাওয়া গেছে; কিন্তু এবার পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও ছাড়ানো বাবদ শ্রমিকপ্রতি দৈনিক ৮০০-৯০০ টাকা মজুরি দিতে হচ্ছে। এতে গত বছরের তুলনায় এবার পাট চাষের খরচ প্রতি মণে দেড় থেকে দুই শ টাকা বেড়েছে। গত বছর যেখানে প্রতি মণ পাটের উৎপাদন খরচ আড়াই হাজার টাকার কাছাকাছি ছিল এবার তা বেড়ে ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা হয়েছে।

সোমবার সাঁথিয়ার করমজা চতুরহাটে সাপ্তাহিক পাটের হাট বসেছিল। এই হাটসহ উপজেলার বিভিন্ন হাটে দুই সপ্তাহ ধরে পাটের কেনাবেচা হচ্ছে। যেসব কৃষক মৌসুমের শুরুর দিকে পাটের আবাদ করেছিলেন, তাঁরাই আগে ভাগে এসব বিক্রি করতে পারছেন। ফলে হাটগুলোতে চোখে পড়ার মতো পাটের সরবরাহ হয়নি।

করমজা চতুরহাটে গতকাল পাট কিনতে যান উপজেলার চোমরপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আবু তালেব। তিনি বলেন, এখন যত দিন যাবে, হাটে পাটের সরবরাহ ততই বাড়বে। তবে মৌসুমের শুরু হিসেবে হাটে মোটামুটি ভালোই পাটের সরবরাহ দেখা যাচ্ছে। সপ্তাহখানেক আগে পাটের দাম (মণপ্রতি) ৩ হাজার ৯০০ টাকায় উঠেছিল। সেই তুলনায় গতকালের হাটে মণে এক থেকে দেড় শ টাকা কমেছে। এর পরও যে দামে পাট বিক্রি হচ্ছে, তাতে কৃষক খুশি মনে বাড়ি ফিরছেন।

তবে আগামী দিনে সরবরাহ বাড়লে পাটের দাম পড়ে যাবে কি না, এমন আশঙ্কায় আছেন কৃষকেরা। শহীদনগর গ্রামের কৃষক সাদ্দাম হোসেন, ছেঁচানিয়া গ্রামের আলতাফ হোসেনসহ পাঁচ-ছয়জন কৃষক জানান, বর্তমান দামে কৃষক খুশি হলেও আগামী দিনগুলোতে সরবরাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দাম কমে যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন। এখন বেশির ভাগ কৃষকই অল্প অল্প করে পাট কেটে সেই পাট জাগ দিয়ে ও শুকিয়ে বাজারে আনছেন। বাকি পাট বাজারে আনতে আরও দুই থেকে তিন সপ্তাহ লাগবে। অনেকের আবার এর চেয়েও বেশি দেরি হবে।

কৃষক ভালো দাম পেলে আরও বেশি জমিতে পাট চাষে আগ্রহী হবেন জানিয়ে সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন, ‘আবহাওয়া, ফলন ও দাম অনুযায়ী এবার কৃষক পাট চাষে লাভজনক অবস্থায় আছেন। আমাদের হিসাবে বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী প্রতি মণে কৃষকের ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি লাভ হচ্ছে। তবে এখনো হাটে পাটের সরবরাহ পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। তিন-চার সপ্তাহ পরে সরবরাহ স্বাভাবিক হলে বোঝা যাবে দাম কোথায় গিয়ে দাঁড়াল।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় দুর্ভিক্ষের অংক
  • জাস্ট ওয়েট করুন, কিছু দিনের মধ্যে ঘোষণা শুনবেন: আসিফ নজরুল
  • ২৫ শতাংশ শুল্কে ভারতে যেসব খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে
  • কাফকো সার কারখানায় গ্যাস বিক্রির চুক্তি সই
  • যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কহার নিয়ে তৃতীয় দফা আলোচনা শুরু
  • কনটেইনার ওঠানো-নামানোর দুটি যন্ত্র কেনা হচ্ছে ১৬২ কোটি টাকায়
  •  সাঁতরে ইংলিশ চ্যানেল জয় করলেন নাজমুল হক 
  • গ্যাস অপচয়ে বছরে ক্ষতি ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি: পেট্রোবাংলা
  • পাবনায় আগাম পাটের বাজার চড়া, বেশি দাম পেয়ে কৃষক খুশি
  • ৯৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা হবে ২ কার্গো এলএনজি