মার্কিন পণ্য আমদানিতে নতুন করে আরও ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে চীন। এর আগে চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। চীনের অর্থমন্ত্রী আজ শুক্রবার নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের এ ঘোষণা দিয়েছেন।

আগামীকাল শনিবার থেকে এ শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে গত বুধবার মার্কিন পণ্যের ওপর ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল চীন।

বেইজিং জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত আর কোনো শুল্কের জবাব দেবে না।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন আগ্রাসী শুল্কনীতি ঘোষণার পর থেকে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের ফলে পরিস্থিতি ক্রমাগত উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এর মধ্যে চীন নতুন করে মার্কিন পণ্যে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিল।

বেইজিং বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ‘অস্বাভাবিক উচ্চ শুল্ক’ আন্তর্জাতিক ও অর্থনৈতিক বাণিজ্যনীতি, মৌলিক অর্থনৈতিক আইন এবং সাধারণ বিচার-বিবেচনার গুরুতর লঙ্ঘন করেছে। এটি সম্পূর্ণরূপে একতরফা গুন্ডামি ও জবরদস্তি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তিন মাসের জন্য সব দেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিলেও চীনের ওপর উচ্চ শুল্কহার বজায় রেখেছেন। গত বৃহস্পতিবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা প্রায় সব চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

আরও পড়ুনট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধে চীনের ‘অস্ত্রের’ মোকাবিলায় কি জিততে পারবে যুক্তরাষ্ট্র০৯ এপ্রিল ২০২৫

বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, কী হবে, সেটি ভবিষ্যতেই দেখা যাবে। চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। আর যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া অনুযায়ী বিভিন্ন দেশ যদি চুক্তি না করে, তাহলে ৯০ দিন পর পাল্টা শুল্ক ফিরিয়ে আনা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের হিসাবে, ২০২৪ সালে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ৫৮২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়েছিল। চলমান শুল্কযুদ্ধের কারণে দুই দেশের মধ্যে পণ্যবাণিজ্য ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে বলে বুধবার জানিয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)।

আরও পড়ুন১৮ ঘণ্টায় কী ঘটেছিল, যা ট্রাম্পকে শুল্কনীতি স্থগিত করতে বাধ্য করেছিল২০ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনচীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ১৪৫ শতাংশ১৩ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প র শ শ ল ক আর প র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ