মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়া ২০ বাংলাদেশি দেশে ফিরছেন। 

রবিবার (১৩ এপ্রিল) মিয়ানমারের বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, অসাধু দালালরা ২০ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরদের মালয়েশিয়ায় পাচারের চেষ্টা করেছিল। পথিমধ্যে মিয়ানমারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তারা অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক হয়। 

মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এবং তাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পর, বাংলাদেশ দূতাবাস আজকের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা নেয়। গত কয়েক মাস ধরে তারা মিয়ানমারে আটক অবস্থায় ছিল।

বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর জাহাজে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে উদ্ধার তৎপরতা ও চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আগত ৫৫ সদস্যের দলটিও ১০ দিনব্যাপী কার্যক্রম শেষ করে বাংলাদেশে ফিরছে। মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড.

মো. মনোয়ার হোসেন দলটির সব সদস্যকে তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে মিয়ানমারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।  

রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন ২০ জন বাংলাদেশি তরুণের হস্তান্তর কার্যক্রম চলাকালে বন্দরে উপস্থিত ছিলেন।  

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, যারা অবৈধভাবে মিয়ানমারে প্রবেশ করেছেন, তাদের যাচাই-বাছাই করে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য দূতাবাস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।  

এ প্রসঙ্গে তিনি সম্প্রতি মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টার থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত আনার উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন।  

তিনি বৈদেশিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশে বিদেশ গমনেচ্ছু সবাইকে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানান এবং সন্দেহজনক বা প্রতারণামূলক চাকরির প্রলোভনে না পড়ার পরামর্শ দেন।

গত দুই বছরে বাংলাদেশ দূতাবাস, ইয়াঙ্গুন মিয়ানমার থেকে ৩৫২ জন বাংলাদেশিকে সফলভাবে দেশে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়। সর্বশেষ প্রত্যাবাসন কার্যক্রমটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২৮ সেপ্টেম্বরে, তখন ৮৫ জন বাংলাদেশি দেশে ফেরত আসেন। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা বন্দরে উপস্থিত থেকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়, নাগরিকত্ব যাচাই এবং প্রত্যাবাসনকারীদের জন্য ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করেন।

বিএনএস সমুদ্র অভিযান মিয়ানমারের ভূমিকম্প দুর্গত জনগণের জন্য ১২০ মেট্রিক টন ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ১১ এপ্রিল ইয়াংগুন আসে। জাহাজটি আগামী ১৫ এপ্রিল বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’

ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।

আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।

আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।

রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।

রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।

কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?

কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।

রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।

রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।

এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।

রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ