নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে মো. সালাউদ্দিন (৩২) নামের এক প্রবাসীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে তাঁর বাঁ হাতের কবজি কেটে যায় এবং একটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়। আজ শনিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে চৌমুহনী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আলীপুরের কন্ট্রাক্টর পোলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

হামলায় আহত সালাউদ্দিন আলীপুর গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে প্রথমে তাঁকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত সালাউদ্দিনের স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন, দাবি করা চাঁদা না পেয়ে একই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদকসেবীরা ওই হামলা চালিয়েছে।

হামলার শিকার সালাউদ্দিনের মামা আবদুল কাদের অভিযোগ করেন, সালাউদ্দিন তাঁর মায়ের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকতেন। বছরখানেক আগে তিনি দেশে আসেন। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর নতুন করে কাতার যাওয়ার কথা ছিল। তাঁর মা বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকা রয়েছেন।

আবদুল কাদের জানান, গত তিন-চার মাসে সালাউদ্দিন তাঁদের গ্রামের নিজ বাড়ির কিছু পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করেন। ওই সম্পত্তি বিক্রি করায় স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী ও মাদকসেবী তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। সালাউদ্দিন চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাঁর সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। একপর্যায়ে সালাউদ্দিন সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে বাঁচতে তাঁর মায়ের পরামর্শে কন্ট্রাক্টর পোল এলাকায় বাসা ভাড়া নেন।

আবদুল কাদের অভিযোগ করেন, আজ বেলা পৌনে ১১টার দিকে সালাউদ্দিন বাসা থেকে মোটরসাইকেলযোগে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে কন্ট্রাক্টর পোলের জয়নাল আবেদিন স্কুল এলাকায় রিদনের গতিরোধ করে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। তারা এ সময় কুপিয়ে সালাউদ্দিনের বাঁ হাতের কবজি মারাত্মকভাবে জখম করে। এতে কনিষ্ঠ আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারা সালাউদ্দিনের সঙ্গে থাকা পাঁচ লাখ টাকা, মুঠোফোন ও মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

জানতে চাইলে সালাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে আহত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিটন দেওয়ান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, হামলার শিকার ব্যক্তিকে তিনি দেখেছেন। কবজি কাটা হয়নি, ধারালো অস্ত্রে গুরুতর জখম করা হয়েছে। তবে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে একটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিছু ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ কাজ করছে। পরিবারের অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সন ত র স

এছাড়াও পড়ুন:

কুড়িগ্রামে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ, বিচার দাবি

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে গৃহবধূ ফাতেমাকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের পরিবার।

বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুরে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

পরকীয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে কথা কাটাকাটি, যুবককে কুপিয়ে হত্যা

বাড়ির মেয়েদের দিকে কুদৃষ্টি দেওয়ায় আকবরকে হত্যা

নিহত গৃহবধূ ফাতেমার পিতা মো. আসাদ আলী (আসাবুদ্দিন) লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, “আমার মেয়েকে গত ১৪ আগস্ট রাতে উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের উত্তর বালাডোবা গ্রামে স্বামীর বাড়িতে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। পরে লাশ ঘরের আড়ায় ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালানো হয়।”

তিনি জানান, ফাতেমার স্বামী শামীম মোল্লা জীবিকার তাগিদে টাঙ্গাইল জেলায় থাকলেও নিয়মিত পরিবারের খোঁজখবর নিতেন। স্বামীর অনুপস্থিতিতে এলাকার কিছু দুষ্কৃতিকারী ও মাদকসেবী ফাতেমাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করত। ঘটনার রাতে ফাতেমার শাশুড়ি ও জা নিজ বাড়িতে ছিলেন না। তারা আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। এ সময় প্রথমে সফিকুল ইসলাম সফি নামের এক যুবক তার বাড়িতে প্রবেশ করলে স্থানীয় কয়েকজন তাকে আটক করে। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে টাকা নেয়। এরপর রাত গভীর হলে সফিকুলসহ প্রায় ১২ জন সংঘবদ্ধভাবে ফাতেমার ঘরে প্রবেশ করে পালাক্রমে ধর্ষণ ও হত্যা করে।

আসাদ আলীর অভিযোগ, ঘটনার পর বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবলু মিয়ার প্রত্যক্ষ তদবিরে স্থানীয় পুলিশ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। নামাজের চর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে এসআই জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহালে গলায় ও শরীরে জখম থাকার পরও আত্মহত্যার কাহিনি সাজায় পুলিশ। এমনকি থানায় মামলা করতে গেলে জোরপূর্বক সাদা কাগজে তার (আসাদ আলীর) নিকট থেকে স্বাক্ষর নিয়ে মেয়ের আত্মহত্যার স্বীকারোক্তি তৈরি করে পুলিশ। এখন পর্যন্ত তিনি মেয়ের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনও পাননি তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, ঘটনাস্থল থেকে মেয়ের শাড়ি উদ্ধার করা হলেও লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় সালোয়ার কামিজ পরিহিত অবস্থায়। এ নিয়ে গ্রামে নানা প্রশ্ন উঠলেও পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও মামলা ও তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই। বরং ভিকটিমের পরিবারকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

ফাতেমার বাবা মো. আসাদ আলী বলেন, “আমার মেয়েকে গণধর্ষণ ও হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে। পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা টাকার বিনিময়ে সত্য গোপন করছে। একজন পিতা হিসেবে আমি আমার মেয়ে হত্যার ন্যায়বিচার চাই। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।

ঢাকা/সৈকত/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুড়িগ্রামে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ, বিচার দাবি