ফিলিস্তিনের গাজায় নিরীহ মানুষের ওপর বোমা ও গুলিবর্ষণ, হত্যাকাণ্ড, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও পথযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ আইন সমিতি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে প্রথমে মানববন্ধন ও পরে পথযাত্রা হয়।

‘ইসরায়েল কর্তৃক গাজায় নিরীহ মানুষের ওপর বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী অপরাধ ও ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও পথযাত্রা’; আয়োজনে বাংলাদেশ আইন সমিতি—এমন ব্যানারে বেলা একটার দিকে মানববন্ধন শুরু হয়। মানববন্ধন শেষে সেখান থেকে পথযাত্রা শুরু করে মাজার গেট দিয়ে বের হয়ে শিক্ষা ভবন হয়ে আবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে এসে তা শেষ হয়।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আইন সমিতির আহ্বায়ক আইনজীবী মনির হোসেন। মানববন্ধনে তিনি বলেন, প্রায় ১০ বছর ধরে ক্রমাগত বোমা ও গুলিবর্ষণের মাধ্যমে প্রায় ৬২ হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। গাজায় বেশির ভাগ ভবন, বাড়িঘর ভেঙে নিশ্চিহ্ন করেছে। এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। নেতানিয়াহুর আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার দাবি করছি এবং মানুষ ও জানমালের ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। পাশাপাশি ফিলিস্তিনি মুসলমানদের গাজাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি মো.

জসীম উদ্দিন সরকার, আইন সমিতির সাবেক সভাপতি এ বি এম ওয়ালিউর রহমান, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সদস্যসচিব গাজী তৌহিদুল ইসলাম, আইনজীবী সিদ্দিকুর রহমান, মাকসুদ উল্লাহ ও মো. আজিজুল হক বক্তব্য দেন। এরপর অনুষ্ঠিত পথযাত্রায় নেতৃত্ব দেন আইনজীবী মনির হোসেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পথয ত র আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

পদ্মার চরে জোড়া খুনের ঘটনায় ‘কাকন বাহিনীর’ সদস্যদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

পদ্মার চরে দুজনকে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার নিহতের বাবা-মাসহ স্বজনেরা হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে সেখানে অঝোরে কেঁদেছেন। এ সময় অন্যরাও চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি।

আজ শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের খানপুর বাজারে ‘হতাহতদের পরিবার ও এলাকাবাসী’র ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। আমান মণ্ডল ও নাজমুল মণ্ডলকে গুলি করে হত্যাসহ মুনতাজ মণ্ডল ও রাকিব হোসেনকে আহত করার প্রতিবাদ এবং দোষীদের বিচার দাবিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষ মানববন্ধনে অংশ নেন।

মানববন্ধনের ব্যানারের এক পাশে নিহত-আহত ব্যক্তিদের ছবি, আরেক পাশে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনের ছবি সাঁটিয়ে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানান তাঁরা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার না করা হলে তাঁরা কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন।

আরও পড়ুনদুজনকে হত্যার ঘটনায় ‘কাকন বাহিনীর’ কাকনকে প্রধান আসামি করে মামলা২৯ অক্টোবর ২০২৫

বাঘা উপজেলার নিচ খানপুর গ্রামের নিহত আমান মণ্ডলের বাবা মিনাজ মণ্ডল জানান, দিনদুপুরে গুলি করে তাঁর ছেলেসহ দুজনকে গুলি করে হত্যা করার পরও আসামিরা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। তাদের স্বজনেরাও ঘুরে বেড়াচ্ছে বুক ফুলিয়ে। প্রশাসনকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি করেছেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেনের ভাষ্য, হত্যাকাণ্ডের ৫ দিন পার হলেও মূল আসামিদের ধরতে না পারা রহস্যজনক। খানপুর গ্রামের বাসিন্দা আশরাফ মণ্ডল বলেন, হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করলে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করা যাবে।

হত্যাকাণ্ডের শিকার আরেক যুবক নাজমুলের বাবা শুকুর মণ্ডল মানববন্ধনে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আর কিছু বলতে পারেননি। তিনি হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন।
গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাজশাহীর বাঘা ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তের ১৪ হাজার মাঠ নামে পরিচিত চাকলার চর এলাকায় কাশবনখেত নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন আমান মণ্ডল, নাজমুল মণ্ডল (২৬), মুনতাজ মণ্ডল (৩২) ও রাকিব হোসেন (১৮)। এর মধ্যে আমান ও নাজমুল মারা যান। অপর দুজন রামেক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

মুনতাজ মণ্ডলের পিতা চান মণ্ডল বলেন, নদীভাঙনের শিকার হয়ে তাঁরা বর্তমানে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নিচ খানপুর গ্রামে বসবাস করছেন। চাকলার চর এলাকায় তাঁদের পৈতৃক জমি রয়েছে। সেই জমিতে তাঁরা কাশবনের খড় কাটছিলেন। কথিত ‘কাকন বাহিনী’র লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সেই জমি দখলে নিতে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে।

এ ঘটনায় বাহিনীর প্রধান দৌলতপুর থানার মাঝদিয়াড় বৈরাগী চরের হাসানুজ্জামান ওরফে কাকন ইঞ্জিনিয়ারকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২০–৩০ জনকে আসামি করে মিনাজ মণ্ডল দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পরবর্তী সময় পুলিশ শটগানের কার্তুজের ৫৫টি খালি খোসা ও ১৫টি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে।

এদিকে ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর অনুমান ১২টার সময় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রায়টা এলাকার পদ্মা নদীতে ভাসমান অবস্থায় লিটন ঘোষ (৩০) নামের একজনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। লিটন ঘোষ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানার রায়টা ঘোষপাড়া গ্রামের জামরুল ঘোষের ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঈশ্বরদী লক্ষ্মীকুণ্ডা নৌ পুলিশ ক্যাম্পের (ইনচার্জ) এসআই শফিউদ্দিন বলেন, তাঁর শরীরে অসংখ্য জখমের চিহ্ন ছিল। সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে লিটনও নিখোঁজ ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, দৌলতপুর-বাঘা সীমান্তে চর দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ মুঠোফোনে বলেন, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।

আরও পড়ুনকথার আগে গুলি চালায় ‘কাকন বাহিনী’, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল১১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
  • আপিল বিভাগের বিচারকাজ পর্যবেক্ষণ করলেন নেপালের প্রধান বিচারপতি
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকারযুক্ত সংবিধানই জনগণ চায়
  • খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত
  • ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত
  • সালমান শাহ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারসহ ৫ দফা দাবি
  • এখন দেখছি নতুন প্রতারকের জন্ম হয়েছে: কায়সার কামাল
  • ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি ডলার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ
  • আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি, সালমান শাহ ভক্তদের মানববন্ধন
  • পদ্মার চরে জোড়া খুনের ঘটনায় ‘কাকন বাহিনীর’ সদস্যদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন