যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। বিশেষ করে চীন–মার্কিন শুল্ক লড়াইয়ের প্রভাব কোথায় গিয়ে শেষ হয় তা এখনও বলা যাচ্ছে না। এ রকম বাস্তবতায় একক প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। খুঁজতে হবে বিকল্প বাজার। জোটগত প্রধান বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) বাংলাদেশের পণ্যের হিস্যা বাড়ানো যায়। এশিয়ার দেশগুলোতে মনোযোগ বাড়াতে হবে। 

ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া নিয়ে এক সংলাপে এসব মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান ড.

রেহমান সোবহান। বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকশোরে সিপিডি এ আয়োজন করে। সংলাপে বিষয়ের ওপর মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন সংলাপ পরিচালনা করেন।

বিকল্প বাজার প্রসঙ্গে ড. রেহমান সোবহান বলেন, ইইউর বাজারে আরও কয়েক বছর বাংলাদেশের পণ্য প্রবেশে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা থাকবে। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের বাজার অনুসন্ধান করতে হবে। এশিয়ার অন্যান্য বাজারেও রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব। আগামীতে বিশ্ব অর্থনীতি ও বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র হবে এশিয়া। নিজেদের যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা দিয়ে বিকল্প এ সব বাজারে রপ্তানি বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি। 

মূল প্রবন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমদানি–রপ্তানি পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানিতে শুল্ক বাবদ ১৮ কোটি ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। ওই বছর বাংলাদেশের পণ্যের আমদানি শুল্ক বাবদ ১২৭ কোটি ডলার আদায় করে যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে ভারসাম্যতা আনতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যে শুল্ক কমাতে সমস্যা হচ্ছে। অন্যান্য দেশকেও একই সুবিধা দিতে হবে। এতে বাংলাদেশের মোট শুল্ক লোকসান হবে ১৭ কোটি ডলার অর্থাৎ কেবল শুল্ক কমিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র শ ল ক আর প ব কল প আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ