৪৬তম বিসিএসের আবশ্যিক বিষয়ের লিখিত পরীক্ষা ৮ মে থেকে শুরু হবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে একযোগে পরীক্ষা নেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১৫ মিনিট আগে প্রার্থীকে অবশ্যই পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশ করতে হবে।

এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের পর কোনো প্রার্থীকে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। বিষয়টি প্রবেশপত্রে এবং পরীক্ষা পরিচালনা–সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনায় উল্লেখ রয়েছে।

আরও পড়ুনইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম মুসলিম দেশ-মঙ্গল শোভাযাত্রা-রেডিও বেগম জেনে নিন বিস্তারিত১৭ এপ্রিল ২০২৫

সুষ্ঠুভাবে বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠান এবং হলের সুশৃঙ্খল পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরীক্ষা পরিচালনা–সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা পরীক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথভাবে প্রতিপালন করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।

৪৬তম বিসিএসের আবশ্যিক বিষয়ের লিখিত পরীক্ষা চলবে ১৯ মে পর্যন্ত। ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল গত বছরের ৯ মে প্রকাশিত হয়। এ পরীক্ষায় ১০ হাজার ৬৩৮ প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়। এ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে নির্বাচিত প্রার্থীদের সঙ্গে আরও সমসংখ্যক প্রার্থী লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্য বিবেচনা করে পুনরায় ফলাফল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি ফলাফল আবার নতুন করে প্রকাশ করা হয়। এতে মোট উত্তীর্ণ হন ২১ হাজার ৩৯৭ জন। আগের ১০ হাজার ৬৩৮ জন প্রার্থীর সঙ্গে নতুন করে লিখিত পরীক্ষার সুযোগ পান ১০ হাজার ৭৫৯ জন প্রার্থী।

আরও পড়ুন৪৬তম বিসিএসে লিখিত পরীক্ষার শেষ সময়ের প্রস্তুতির জন্য যা যা করণীয়২০ এপ্রিল ২০২৫

এই বিসিএসে ৩ হাজার ১৪০টি পদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নেওয়া হবে স্বাস্থ্য ক্যাডারে। সহকারী সার্জন ১ হাজার ৬৮২ জন ও সহকারী ডেন্টাল সার্জন ১৬ জন নেওয়া হবে। এরপর সবচেয়ে বেশি নেওয়া হবে শিক্ষা ক্যাডারে। বিভিন্ন বিষয়ে এ ক্যাডার থেকে বিসিএস শিক্ষায় ৫২০ জন নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা, মানতে হবে যে ৪ গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা২ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল খ ত পর ক ষ র ব স এস র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

শালবনে ছেচরা কই ও পাটখই

বিভতিভূষণের আরণ্যক উপন্যাসে একজন যুগলপ্রসাদ ছিলেন, যিনি লবটুলিয়ার জঙ্গলে সরস্বতী কুন্ডের পাড়ে নানা জায়গা থেকে নানা প্রজাতির গাছপালা এনে লাগাতেন। সেসব গাছে ফুল ফুটলে আনন্দে তিনি আত্মহারা হয়ে যেতেন। আমারও একজন যুগলপ্রসাদ ছিলেন, নাম আজাহার। প্রায় আমারই সমবয়সী।

টাঙ্গাইলের সখীপুরে বিভিন্ন শালবনে ঘুরতে গেলে মাঝেমধ্যে তিনি আমার সাথি হতেন। শালবনে কত গাছ! তেমন কিছুই চিনি না। কিন্তু সেই শালবনের কোলে জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা আজাহার ঠিকই সেসব গাছ চিনতেন, আর জিজ্ঞেস করলে টপাটপ নাম বলে দিতেন। কিন্তু গোলমাল বাধত সেসব নাম শুনে। কেননা সেসব নাম বলতেন, তাঁদের স্থানীয় ভাষায়। বইয়ে সেসব নাম খুঁজে পাওয়া যেত না।

একদিন শালবনের মধ্যে একটা ছোট গাছ দেখলাম, গাছের গুঁড়ির চারদিকে তীক্ষ্ণসরু ও সোজা প্রচুর কাঁটা বেরিয়েছে। পাতাগুলো দেখতে কিছুট পেয়ারাপাতার মতো। প্রচুর ডালপালায় গাছটার মাথা ঝাঁকড়া হয়ে আছে। ডালের আগায় শিষের মতো মঞ্জরিতে প্রচুর ঘিয়া ও সাদাটে রঙের খুদে ফুল ফুটেছে। চিনি না। তাই আজাহারকে জিজ্ঞেস করলাম, নাম কী? চট করেই বলে দিলেন, ছেচরা কই। মাছের নাম কই হয় জানি, কিন্তু কোনো গাছের নাম কই হতে পারে? অগত্যা ছবি তুলে ওই নামকেই মনে গেঁথে ফিরে এলাম ঢাকায়।

আজাহার বললেন, এখন ফুল দেখছেন। কদিন পরেই ওসব ফুল থেকে ছোট ছোট গুলির মতো প্রচুর ফল ধরবে। ছোটবেলায় আমরা সেসব কাঁচা ফল নিয়ে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ফটকা বানিয়ে তার চোঙে একটা একটা করে ফল দিয়ে বন্দুকের মতো গুলি গুলি খেলতাম। চোঙের ভেতরে একটা সরু কাঠি ঢুকিয়ে চাপ দিয়ে সেসব ফল গুলির মতো ফাটাতাম। ফটাস করে শব্দ হতো। এ সময় মাসখানেকের জন্য আমরা এ গাছের ফল, পরে জালি খেজুর নিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতাম। শালবনে সে সময় এ গাছের অভাব ছিল না। এখন তো দেখতে হলে খুঁজে বের করতে হয়।

ফিরে এসে সে ছবি পাঠালাম জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের সাবেক বোটানিস্ট সামসুল হক ভাইয়ের কাছে। দুই দিন পরেই তিনি জানালেন, গাছটার স্থানীয় নাম ছেচরা কই, উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Bridelia retusa, গোত্র ফাইলেনথেসি। বইপত্রে এ গাছের চারটি বাংলা নাম পেলাম—কাঁটাকই, কাঁটাকুশি, কামকই, আকদানা। বাংলাদেশ ছাড়াও এ গাছ আছে নেপাল, ভারত, শ্রীলঙ্কা, চীন, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে। সাধারণত উঁচু ও শুষ্ক বনাঞ্চলে এ গাছ দেখা যায়। ছোট বৃক্ষজাতীয় গাছ, প্রায় ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়, দ্রুত বাড়ে। এ গাছের কাঁটা থাকায় বন্য প্রাণীরা এদের ধারে ঘেঁষে না, এমনকি এর বাকল দিয়েও বিষ তৈরি করা হয় বলে শুনেছি।

ফল গোলাকার, ছোট, কাঁচা ফল ময়লা সবুজ, পাকলে খোসায় লাল রং ধরে। ছেচরা কইগাছের কাঠ মাঝারি শক্ত থেকে শক্ত, কাঠের রং ময়লা লাল। রঙে ও গুণে কাঠ উৎকৃষ্ট। নির্মাণকাজ ও গরুর গাড়ির চাকা বানাতে ব্যবহার করা হয়। জ্বালানি কাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও শুষ্ক তৃণভূমিতে যদি কোনো গাছ থাকে, তবে সেসব ঘাসে আগুন দিলে এ গাছ পোড়ে না বলে কথিত রয়েছে। বীজ দ্বারা সহজে বংশবৃদ্ধি বা চারা হয়।

পূর্বাচল উপশহরের শালবনে দেখা পাটখই ফল

সম্পর্কিত নিবন্ধ