সড়ক আটকে দাঁড়াল হাতির পাল, ৪ ঘণ্টা যোগাযোগ বন্ধ
Published: 29th, April 2025 GMT
বিকেলে মোটরসাইকেল চালিয়ে জরুরি কাজে নন্নী এলাকায় যাচ্ছিলেন নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও এলাকার শিপন। এ সময় মধুটিলা ইকোপার্ক সড়কে হাতির পাল দেখে ভয়ে মোটরসাইকেল ফেলে দৌড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান তিনি। হাতির পালে শাবকসহ প্রায় ৪৫টি হাতি ছিল বলে জানান এই যুবক।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা সড়কে অবস্থান করে হাতির পাল। হইহুল্লোড়, ডাক-চিৎকার করেও হাতিগুলোকে সরাতে পারেননি এলাকাবাসী। রাত সাড়ে ৮টার দিকে পাহাড়ের জঙ্গলে চলে যায় হাতির পাল।
এলাকাবাসী জানান, তিন সপ্তাহ ধরে ৪০-৪৫টি বন্য হাতি গারো পাহাড়ের বুরুঙ্গা-কালাপানি পাহাড়ে অবস্থান করছে। যখন তখন খাদ্য ও পানির সন্ধানে হাতিগুলো নেমে আসছে লোকালয়ে। কয়েক দিনে হাতির পালটি বুরুঙ্গা-কালাপানি এলাকায় ভেদরকোনা পাহাড়ি গোপে কয়েকজন কৃষকের জমির আধাপাকা বোরো ধান খেয়ে ও পায়ে মাড়িয়ে বিনষ্ট করে। এ ছাড়া গত সোমবার সকালে ফসল রক্ষা করতে গিয়ে হাতির আক্রমণে আহত হয়েছেন বাতকুচি টিলাপাড়া গ্রামের জামশেদুল ইসলাম ছোটন (৩২)। তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সরেজমিন দেখা যায়, এক পাল বন্যহাতি সীমান্ত সড়কের ঝোপঝাড়ে অবস্থান করছে। সাত-আটটি হাতি সড়কে দাঁড়িয়ে আছে। হাতিগুলোকে তাড়াতে অথবা দেখতে কয়েকশ উৎসুক মানুষের ভিড় জমে। কারও হাতে লাঠি, কারও হাতে ঢিল, কারও হাতে বাঁশি। সমস্বরে হৈচৈ করছে কিন্তু হাতিগুলো ঠাঁই দাঁড়িয়ে।
শেরপুরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা শাহীন কবির জানান, সীমান্ত অঞ্চলে বন্যহাতি ও মানুষের সহাবস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বন্যহাতির হানায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, আহত ও নিহত পরিবারকে সরকার ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে। তাই বন্যহাতিকে উত্ত্যক্ত না করার আহ্বান জানান তিনি।
রাত নামলেই লোকালয়ে হাতির পাল
কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী জাগিরপাড়ায় ভারত থেকে আসা বন্যহাতির পালের তাণ্ডবে ফসলহানির ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার রাতে কাঁচা-পাকা ধানক্ষেতে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডব চালায় ১৫-২০টি হাতি। এ সময় ক্ষেতের ধান মাড়িয়ে ফেলার পাশাপাশি গাছপালা ভাঙচুর করে হাতির পাল। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে জাগিরপাড়া, হাতিবেড়, চন্দ্রডিঙ্গা, বেতগড়া গ্রামসহ আশপাশ এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, বন্যহাতির পাল দিনের বেলায় টিলায় থাকলেও রাত হলেই নামে লোকালয়ে। ক্ষেতের ফসল, ঘরবাড়ি ও গাছপালার ক্ষতি করে।
রংছাতি ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান খান পাঠান জানান, সীমান্ত এলাকায় হাতির আক্রমণ এখন নিয়মিত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবছর কোটি টাকার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।