বাংলাদেশে প্রতি ১০ জনের সাতজনই অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এটি সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার তুলনায় বেশি। পাশাপাশি দেশের ৪২ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেটে ব্যক্তিগত তথ্য চুরির শঙ্কায় থাকেন। সংবাদের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ৫৪ শতাংশ মানুষ। বহুজাতিক মোবাইল কোম্পানি টেলিনর এশিয়া প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ডিজিটাল লাইভস ডিকোডেড বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

২০২৪ সালের মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে গবেষণাটি করে টেলিনর এশিয়া। ১৬ থেকে ৬৪ বছর বয়সী এক হাজার ব্যবহারকারীর ওপর জরিপ চালানো হয়। টেলিনর এশিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মনীষা ডোগরা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেনসহ টেলিনর ও গ্রামীণফোনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। প্রতি ১০ জনের ৯ জন মোবাইল ব্যবহারকারী আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স টুল ব্যবহার করে। ৬৩ শতাংশ মানুষ অনলাইন লার্নিংকে উপকারী মনে করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৭০ শতাংশ অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। উদ্বেগ থাকলেও নিরাপত্তাচর্চায় ব্যক্তিগত সচেতনতা কম। ব্যবহারকারীদের ৫০ শতাংশ মনে করেন, অনলাইনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। এক-তৃতীয়াংশ ব্যবহারকারী মনে করেন, সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব রয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে আছে নিজস্ব সচেতনতা। উত্তরদাতাদের ৪২ শতাংশ পরিচয় জালিয়াতি এবং ৪০ শতাংশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বানানো ডিপফেক নিয়ে উদ্বিগ্ন।

জরিপে বলা হয়, জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্ম ডিপফেক নিয়ে বেশি চিন্তিত। এআইভিত্তিক স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহারে ৪৩ শতাংশ মানুষ ব্যক্তিগত তথ্য অপব্যবহারের আশঙ্কা করে। ৫৬ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা কোম্পানিগুলোকে বিভিন্ন অফারের বিনিময়ে নিজের ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশাধিকার দেবে। আর ৪৯ শতাংশ এআই ছবি বা ফিল্টারের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাপগুলোকে ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশাধিকারের সুযোগ দেবে। তবে বাংলাদেশি মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা গোপনীয়তা সুরক্ষা টুলের চেয়ে ওয়েবসাইটের নিরাপত্তার ওপর বেশি ভরসা করে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, এ দেশের মানুষ লোকেশন ট্র্যাকিং নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও, প্রযুক্তিনির্ভর সুবিধা ছাড়তে রাজি নন। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা কমই আনসাবস্ক্রাইব করেন, ব্রাউজিং ইতিহাস মুছে ফেলেন, ওয়েবসাইট কুকিজ কম প্রত্যাখ্যান করেন এবং অ্যাড-ব্লকার ব্যবহার করেন। 

অনুষ্ঠানে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক বলেন, মানুষের হাতে সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তারা যেন নিরাপদ ও দায়িত্বশীল হয়ে মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করেন, তা নিশ্চিত করাটা সবার সম্মিলিত অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ল ইন ট

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলায় হামলার ‘পরিকল্পনা নেই’, বললেন ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলায় হামলা চালানোর পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও ভেনেজুয়েলার আশপাশে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি বাড়ায় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে— ট্রাম্প প্রশাসন কারাকাসে সরকার পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে।

যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে নৌ-বাহিনীর আটটি জাহাজ মোতায়েন করেছে। পুয়ের্তো রিকোতে রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম এফ-৩৫  যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরীর একটি বহর (এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ) অঞ্চলটির দিকে রওনা দিয়েছে। প্রসঙ্গত, ক্যারিবীয় সাগরের পুয়ের্তো রিকো যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রিত একটি অঞ্চল।

ওয়াশিংটনের দাবি, সরকার পরিবর্তন নয়, মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করাই এই বিপুল সামরিক শক্তি মোতায়েনের উদ্দেশ্য।

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ানে এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি (ভেনেজুয়েলায়) হামলার কথা বিবেচনা করছেন? জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘না।’ ট্রাম্প মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজ থেকে ফ্লোরিডা যাচ্ছিলেন।

ওয়াশিংটন গত সেপ্টেম্বরে ক্যারিবীয় অঞ্চল ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে কথিত মাদক চোরাচালান যুক্ত নৌযান লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে। এখন পর্যন্ত এসব হামলায় অন্তত ৬২ জন নিহত হয়েছেন। ১৪টি নৌযান ও একটি আধা-ডুবোজাহাজ ধ্বংস হয়েছে।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের ‘গোপন অভিযান’ ঠেকাতে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে ভেনেজুয়েলা২৬ অক্টোবর ২০২৫

ওই সব ছোট নৌযানকে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে দাবি করে ট্রাম্প প্রশাসনে। তাঁদের অভিযোগ, এসব নৌযান মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নৌযানগুলোতে সুনিশ্চিতভাবে চোরাকারবারি থেকে থাকলেও এসব হামলা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সমতুল্য।

ক্যারিবীয় অঞ্চলে সামরিক শক্তি মোতায়েনের পাশাপাশি ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বি-৫২ ও বি-১বি বোমারু বিমান চক্কর দিয়েছে। গত সোমবার সর্বশেষ এসব বোমারু বিমানকে সেখানে চক্কর দিতে দেখা গেছে।

নৌযানে হামলা ও সামরিক শক্তি মোতায়েনের ফলে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো অভিযোগ করেন, ওয়াশিংটন কারাকাসে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে এবং এ অঞ্চলে ‘কৃত্রিম যুদ্ধ পরিস্থিতি’ তৈরি করেছে।

আরও পড়ুনসিআইএর গোপন অভিযান: ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে জড়ালে পরিণতি কী হবে১৮ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ