রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চালু হচ্ছে ই-কার
Published: 31st, October 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে যাতায়াতের সুবিধার্থে আগামী মাসে ইলেক্ট্রনিক-কার (ই-কার) সেবা চালু হতে যাচ্ছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (রুয়া) এ উদ্যোগ নিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম কার্যনির্বাহী কমিটির সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম খান।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২ বছরের ইতিহাসে প্রথম অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনের পর এটিই আমাদের প্রথম কার্যনির্বাহী কমিটির সভা। আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে ওয়াদাবদ্ধ ছিলাম যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য ই-কারের ব্যবস্থা করব। আমরা আশা করি, এটা স্বল্প সময়ের মধ্যে, ইনশা আল্লাহ মাসখানেকের মধ্যে আমাদের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হবে।’ কতটি ই-কার চালু করা হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন ও অ্যালামনাইয়ের সামর্থ্যকে সমন্বয় করেই ই-কারের সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে।
এদিকে ই-কার চালুর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আরও একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খুব শিগগিরই মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ বা বৃত্তির ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের চাকরির জন্য প্রস্তুত করতে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এ–সংক্রান্ত একটি সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আরও বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে অ্যালামনাইয়ের একটি পুনর্মিলনী আয়োজন করার জন্যও একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের হলের ডাইনিংয়ে ভর্তুকি দেওয়ার ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই ব্যাপারেও আমরা খুব সিরিয়াসলি আলোচনা করেছি এবং এটা বাস্তবায়নের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করব।’
রফিকুল ইসলাম খান তাঁদের পূর্ববর্তী কার্যক্রম উল্লেখ করে বলেন, ‘গত মাসে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে আমরা রুয়ার পক্ষ থেকে ১০টি বাস সরবরাহ করেছিলাম। ছাত্র-ছাত্রীরা খুবই স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করেছেন।’ ভবিষ্যৎ–পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘অ্যালামনাইয়ের নিজস্ব ভবন নির্মাণ এবং শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা সমাধানেও পর্যায়ক্রমে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু সব চিন্তার সঙ্গেই অর্থ জড়িত। আমরা যদি অর্থ সংগ্রহ করতে পারি, অনেক কিছুই করতে পারব।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অ য ল মন ই র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
অজ্ঞাতনামা লাশ আর কারা হেফাজতে মৃত্যু বেড়েছে, শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় জনমনে সন্দেহ: এমএসএফ
চলতি অক্টোবর মাসে দেশে অজ্ঞাতনামা লাশ এবং কারা হেফাজতে মৃত্যু সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় বেশ খানিকটা বেড়েছে। এ তথ্য তুলে ধরেছে মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। প্রতিষ্ঠানটির অক্টোবর মাসের মানবাধিকার প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এমএসএফ বলেছে, এসব ঘটনায় জনজীবনের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি জোরালোভাবে সবার সামনে প্রতিফলিত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ দুই ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে জনমনে সন্দেহ আছে।
এমএসএফ প্রতি মাসে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে। আজ শুক্রবার অক্টোবর মাসের প্রতিবেদন গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং নিজস্ব তথ্যানুসন্ধানের ওপর ভিত্তি করে এমএসএফ মানবাধিকার প্রতিবেদন তৈরি করে।
বেড়েছে অজ্ঞাতনামা লাশএমএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্টোবর মাসে মোট ৬৬টি অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার হয়েছে। এটি অনাকাঙ্ক্ষিতই নয়; বরং নাগরিক জীবনে নিরাপত্তাহীনতার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত মাসে (সেপ্টেম্বর) এর সংখ্যা ছিল ৫২। এসব অজ্ঞাতনামা লাশের বেশির ভাগই নদী বা ডোবায় ভাসমান, মহাসড়ক বা সড়কের পাশে, সেতুর নিচে, রেললাইনের পাশে, ফসলি জমিতে ও পরিত্যক্ত স্থানে পাওয়া যায়। অল্পসংখ্যক মৃতদেহ গলাকাটা, বস্তাবন্দী ও রক্তাক্ত বা শরীরে আঘাতের চিহ্নসংবলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
এমএসএফ বলেছে, অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধারের ঘটনা বেড়েই চলেছে এবং তা জনজীবনের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি জোরালোভাবে সবার সামনে প্রতিফলিত হচ্ছে। পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা লাশের পরিচয় উদ্ধারে অপারগতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ১টি শিশু, ১ কিশোর, ১১ জন নারী ও ৫৩ জন পুরুষের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ বছর বয়সী শিশু; ১৫ বছর বয়সী কিশোর; ২০ থেকে ৩০ বয়সী ১৫ জন পুরুষ ও ২ জন নারী; ৩১ থেকে ৪০ বয়সী ১৯ জন পুরুষ ও ৬ জন নারী; ৪১ থেকে ৫০ বয়সী ১ নারী ও ৫ জন পুরুষ এবং ৫০ বছর বয়সের বেশি ১১ জন পুরুষ ও ১ নারী রয়েছেন। এর মধ্যে অজ্ঞাতনামা তিনজনের বয়স শনাক্ত করা যায়নি।
এমএসএফ বলেছে, শুধু অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না; বরং পরিচয় জানার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। পরিচয় উদ্ধার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য।
কারা হেফাজতে মৃত্যু বাড়ছেইএমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে কারা হেফাজতে মোট ১৩ জন বন্দীর মৃত্যু হয়েছে। গত মাসে এ সংখ্যা ছিল মোট ৮। এ মাসে ছয়জন কয়েদি ও সাতজন হাজতির মৃত্যু হয়েছে।
কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চারজন কয়েদি ও দুজন হাজতি, গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে একজন কয়েদি ও শেরপুর জেলা কারাগারে একজন কয়েদি মারা যান। এ ছাড়া খুলনা জেলা কারাগারে, টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে, চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে, সিরাজগঞ্জ কারাগারে ও মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে একজন করে হাজতি বন্দী মারা যান। সব বন্দীর মৃত্যু হয় কারাগারের বাইরে হাসপাতালে।
এমএসএফের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কারা হেফাজতে মৃত্যু এবং অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধারের সংখ্যা বৃদ্ধি মানবাধিকার পরিস্থিতির চরম অবনতির চিত্র তুলে ধরে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই লাশ উদ্ধার করেই ক্ষান্ত হচ্ছে। কিন্তু এসব লাশ উদ্ধার করে তার পরিচয় শনাক্ত করা এবং সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করে মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটন করাই শুধু নয়, এসব লাশ আত্মীয়-পরিজনের কাছে পৌঁছে দেওয়া এসব বাহিনীর কাজ। কিন্তু একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা করা ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আর কোনো কাজ নেই।
সাইদুর রহমান বলেন, অজ্ঞাতনামা লাশের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং হেফাজতে মৃত্যু বৃদ্ধি জনমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করে।
গণপিটুনিতে হত্যা চলছেই, বেড়েছে রাজনৈতিক সহিংসতাঅক্টোবর মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ৪৯টি ঘটনার শিকার হয়েছেন ৫৪৯ জন। এর মধ্যে ২ জন নিহত এবং ৫৪৭ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন গুলিবিদ্ধ এবং নিহত ব্যক্তিরা বিএনপির কর্মী–সমর্থক। সেপ্টেম্বর মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ৩৮টি ঘটনা ঘটেছিল।
সহিংসতার ৪৯টি ঘটনার মধ্যে ১১টি ঘটনায় রাজনৈতিক বিরোধ ও সহিংসতাকে কেন্দ্র করে পার্টি অফিস, বসতবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও অগ্নিকাণ্ড এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
অক্টোবর মাসে মোট গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে ৪৪টি। আগের মাসে এ ঘটনা ঘটেছিল ৪৩টি। এ মাসে গণপিটুনির শিকার হয়ে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ১২। আগের মাসে নিহত হয়েছিলেন ২৪ জন।
 বাড়িতেই বানান বাটারস্কচ কেক
বাড়িতেই বানান বাটারস্কচ কেক