মালদ্বীপের সমুদ্রসৈকতে ছোট্ট একটি মেয়ের ছবি পোস্ট করেছিলেন তার মা। তিনটি খেলনা জড়িয়ে ধরে হাসছিল নিষ্পাপ শিশুটি; যা মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোড়ন ফেলেছিল। বলছি, নীলনয়না ক্রিস্টিনার কথা। তারপর জনপ্রিয়তা ও বিতর্ক হাত ধরাধরি করে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়েছে মেয়েটি। সেই নাবালিকার এখন উনিশ। স্বর্ণকেশী ও নীল চোখের ক্রিস্টিনার গল্প নিয়ে এই ফটোফিচার—

২০০৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাশিয়ার মস্কোতে জন্মগ্রহণ করেন ক্রিস্টিনা পিমানোফা। প্রাক্তন মডেল গ্লিকেরিয়া ও প্রাক্তন রাশিয়ান ফুটবলার রাসলান পিমানোফার কন্যা ক্রিস্টিনা। তার বয়স যখন তিন বছর, তখন তার মা গ্লিকেরিয়া সামাজিকমাধ্যমে মেয়ের ছবি পোস্ট করতে শুরু করেন। নিষ্পাপ শিশুর ছবিগুলো দ্রুত ভাইরাল হয়। কেবল তাই নয়, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বিতর্কেরও জন্ম দেয়। সমুদ্রসৈকতে তোলা ছবিগুলো যৌন আবেদনমূলক বলেও দাবি করা হয়।

 

ক্রিস্টিনাকে নিয়ে তৈরি বিতর্কের জন্য মা গ্লিকেরিয়াকে দায়ী করেন নেটিজেনরা। ইচ্ছাকৃতভাবে ছবিগুলোকে বিকৃতভাবে তোলা হয়েছিল বলেও সমালোচনা শুরু হয়। দাবি করা হয়, এসব ভঙ্গিমা শিশুর জন্য অনুপযুক্ত। স্বাভাবিকভাবেই নিন্দুকদের অভিযোগ অস্বীকার করেন গ্লিকেরিয়া। ২০১৪ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রিস্টিনার মা জানান, তার মেয়ে কারো নির্দেশ মেনে পোজ দেয়নি। আপনমনে সমুদ্রসৈকতে খেলছিল। সেই স্বতঃস্ফূর্ত ভঙ্গিমাই ধরা পড়েছিল ক্যামেরার লেন্সে।

 

যদিও এই ধরনের সমালোচনা ক্রিস্টিয়ানার ক্যারিয়ারে কোনো প্রভাব পড়েনি। বরং বিতর্ককে সঙ্গী করেই মডেলিং দুনিয়ায় পা রাখেন তিনি। ‘ভোগ’, ‘আরমানি’, ‘বারবেরি’, ‘ডলচে অ্যান্ড গাবানা’ মতো শীর্ষ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের হয়ে মার্জার সরণিতে স্বচ্ছন্দ বিচরণ শুরু হয় এই রুশ বালিকার। আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ও পণ্যের বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন তিনি। 

 

ক্রিস্টিনা তার জীবনের প্রথম কয়েক মাস ফ্রান্সে কাটিয়েছেন। এফসি মেটজের হয়ে ফুটবল খেলতেন তার বাবা। মডেলিং দুনিয়ার সঙ্গে ক্রিস্টিনার পরিচয় পারিবারিক সূত্রে। তার মা গ্লিকেরিয়াও প্রাক্তন মডেল। ফ্যাশন দুনিয়ার বৃত্তে পা রাখতে তাই তার খুব একটা অসুবিধা হয়নি। কৈশোরে পা দেওয়ার আগেই বড় বড় ব্র্যান্ডের হয়ে র‌্যাম্পে হাঁটেন ক্রিস্টিনা।

 

মাত্র ১০ বছর বয়সে ক্রিস্টিনার সঙ্গে আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি মডেলিং এজেন্সির চুক্তি হয়। তাতে বিভিন্ন নামজাদা সংস্থার মডেলিংয়ের মুখ হয়ে উঠেন ক্রিস্টিনা। বিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর শিশুদের পোশাকের জন্য যে বিভাগ রয়েছে, তার অধিকাংশই ক্রিস্টিনার দখলে চলে যায়। শিশুতারকা ও সুপারমডেলকে পেয়ে খুশি ছিল মডেলিং এজেন্সিগুলো।

 

সমসাময়িক প্রজন্মের সবচেয়ে স্বীকৃত শিশু মডেলদের একজন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন ক্রিস্টিনা। সুপারমডেলের খ্যাতি পাওয়ার পর ধীরে ধীরে ফ্যাশন দুনিয়া থেকে সরে যান ক্রিস্টিনা। ১৯ বছর বয়েসি এই তরুণী এখন মস্কোতেই থাকেন। মডেলিং থেকে সরে এখন অভিনয়ে মনোনিবেশ করতে শুরু করেছেন তিনি।

 

বেশ কিছু দিন ধরে নাটকের দিকে ঝোঁক বেড়েছে ক্রিস্টিনার। ধারাবাহিকভাবে চুটিয়ে রুশ চলচ্চিত্রে কাজ করছেন। ‘দ্য রাশিয়ান ব্রাইড’, ‘সিক্রেট নেবার’ এবং ‘ক্রিয়েটরস: দ্য পাস্ট’ শিরোনামের সিনেমায় দাপটের সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে ডাকসাইটের এই সুন্দরীকে। বয়েসের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাচ্ছে তার শরীরি সৌন্দর্যও। 

 

বেশ কয়েক বছর আগে ডেইলি মেইলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মডেলিং অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ক্রিস্টিনা জানান, শৈশবে মডেলিং তার কাছে একটি খেলার মতো ছিল। পেশা বলে কখনো মনে করেননি। বরং দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ানোকে খুব আনন্দের মনে করতেন। র‌্যাম্পের মতো ক্যারিয়ারের গতিও মসৃণ ছিল ক্রিস্টিনার।

 

সৌন্দর্যের খ্যাতি ও প্রশংসা পেলেও ক্রিস্টিনা বরাবরই মাটিতে পা রেখে চলতে ভালোবাসেন। যশ-খ্যাতি, অর্থ খুব অল্প বয়েসে পেলেও কখনো তা গুরুত্ব দিতে চাননি তিনি। সুপারমডেলের মুকুট মাথায় উঠলেও তারকাখ্যাতি সম্পর্কে উদাসীন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে তার। নিজের ইনস্টাগ্রাম বায়োতে ক্রিস্টিনা লিখেছেন—“মনে রাখবেন, সৌন্দর্য মনের ভিতরে থাকে।” ফ্যাশন দুনিয়া কাঁপানো এই মডেল-অভিনেত্রী সমাজিকমাধ্যমেও একইভাবে নজর কেড়েছেন। ইনস্টাগ্রামে তাকে এখন ২৪ লাখ অনুসারী রয়েছে। তাছাড়া ফেসবুকে তার ভক্ত সংখ্যা ৪৯ লাখ।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব তর ক স ন দর

এছাড়াও পড়ুন:

জনপ্রিয়তা-বিতর্ক কাঁধে নিয়ে সেই নীলনয়নার এখন উনিশ

মালদ্বীপের সমুদ্রসৈকতে ছোট্ট একটি মেয়ের ছবি পোস্ট করেছিলেন তার মা। তিনটি খেলনা জড়িয়ে ধরে হাসছিল নিষ্পাপ শিশুটি; যা মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোড়ন ফেলেছিল। বলছি, নীলনয়না ক্রিস্টিনার কথা। তারপর জনপ্রিয়তা ও বিতর্ক হাত ধরাধরি করে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়েছে মেয়েটি। সেই নাবালিকার এখন উনিশ। স্বর্ণকেশী ও নীল চোখের ক্রিস্টিনার গল্প নিয়ে এই ফটোফিচার—

২০০৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাশিয়ার মস্কোতে জন্মগ্রহণ করেন ক্রিস্টিনা পিমানোফা। প্রাক্তন মডেল গ্লিকেরিয়া ও প্রাক্তন রাশিয়ান ফুটবলার রাসলান পিমানোফার কন্যা ক্রিস্টিনা। তার বয়স যখন তিন বছর, তখন তার মা গ্লিকেরিয়া সামাজিকমাধ্যমে মেয়ের ছবি পোস্ট করতে শুরু করেন। নিষ্পাপ শিশুর ছবিগুলো দ্রুত ভাইরাল হয়। কেবল তাই নয়, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বিতর্কেরও জন্ম দেয়। সমুদ্রসৈকতে তোলা ছবিগুলো যৌন আবেদনমূলক বলেও দাবি করা হয়।

 

ক্রিস্টিনাকে নিয়ে তৈরি বিতর্কের জন্য মা গ্লিকেরিয়াকে দায়ী করেন নেটিজেনরা। ইচ্ছাকৃতভাবে ছবিগুলোকে বিকৃতভাবে তোলা হয়েছিল বলেও সমালোচনা শুরু হয়। দাবি করা হয়, এসব ভঙ্গিমা শিশুর জন্য অনুপযুক্ত। স্বাভাবিকভাবেই নিন্দুকদের অভিযোগ অস্বীকার করেন গ্লিকেরিয়া। ২০১৪ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রিস্টিনার মা জানান, তার মেয়ে কারো নির্দেশ মেনে পোজ দেয়নি। আপনমনে সমুদ্রসৈকতে খেলছিল। সেই স্বতঃস্ফূর্ত ভঙ্গিমাই ধরা পড়েছিল ক্যামেরার লেন্সে।

 

যদিও এই ধরনের সমালোচনা ক্রিস্টিয়ানার ক্যারিয়ারে কোনো প্রভাব পড়েনি। বরং বিতর্ককে সঙ্গী করেই মডেলিং দুনিয়ায় পা রাখেন তিনি। ‘ভোগ’, ‘আরমানি’, ‘বারবেরি’, ‘ডলচে অ্যান্ড গাবানা’ মতো শীর্ষ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের হয়ে মার্জার সরণিতে স্বচ্ছন্দ বিচরণ শুরু হয় এই রুশ বালিকার। আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ও পণ্যের বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন তিনি। 

 

ক্রিস্টিনা তার জীবনের প্রথম কয়েক মাস ফ্রান্সে কাটিয়েছেন। এফসি মেটজের হয়ে ফুটবল খেলতেন তার বাবা। মডেলিং দুনিয়ার সঙ্গে ক্রিস্টিনার পরিচয় পারিবারিক সূত্রে। তার মা গ্লিকেরিয়াও প্রাক্তন মডেল। ফ্যাশন দুনিয়ার বৃত্তে পা রাখতে তাই তার খুব একটা অসুবিধা হয়নি। কৈশোরে পা দেওয়ার আগেই বড় বড় ব্র্যান্ডের হয়ে র‌্যাম্পে হাঁটেন ক্রিস্টিনা।

 

মাত্র ১০ বছর বয়সে ক্রিস্টিনার সঙ্গে আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি মডেলিং এজেন্সির চুক্তি হয়। তাতে বিভিন্ন নামজাদা সংস্থার মডেলিংয়ের মুখ হয়ে উঠেন ক্রিস্টিনা। বিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর শিশুদের পোশাকের জন্য যে বিভাগ রয়েছে, তার অধিকাংশই ক্রিস্টিনার দখলে চলে যায়। শিশুতারকা ও সুপারমডেলকে পেয়ে খুশি ছিল মডেলিং এজেন্সিগুলো।

 

সমসাময়িক প্রজন্মের সবচেয়ে স্বীকৃত শিশু মডেলদের একজন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন ক্রিস্টিনা। সুপারমডেলের খ্যাতি পাওয়ার পর ধীরে ধীরে ফ্যাশন দুনিয়া থেকে সরে যান ক্রিস্টিনা। ১৯ বছর বয়েসি এই তরুণী এখন মস্কোতেই থাকেন। মডেলিং থেকে সরে এখন অভিনয়ে মনোনিবেশ করতে শুরু করেছেন তিনি।

 

বেশ কিছু দিন ধরে নাটকের দিকে ঝোঁক বেড়েছে ক্রিস্টিনার। ধারাবাহিকভাবে চুটিয়ে রুশ চলচ্চিত্রে কাজ করছেন। ‘দ্য রাশিয়ান ব্রাইড’, ‘সিক্রেট নেবার’ এবং ‘ক্রিয়েটরস: দ্য পাস্ট’ শিরোনামের সিনেমায় দাপটের সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে ডাকসাইটের এই সুন্দরীকে। বয়েসের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাচ্ছে তার শরীরি সৌন্দর্যও। 

 

বেশ কয়েক বছর আগে ডেইলি মেইলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মডেলিং অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ক্রিস্টিনা জানান, শৈশবে মডেলিং তার কাছে একটি খেলার মতো ছিল। পেশা বলে কখনো মনে করেননি। বরং দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ানোকে খুব আনন্দের মনে করতেন। র‌্যাম্পের মতো ক্যারিয়ারের গতিও মসৃণ ছিল ক্রিস্টিনার।

 

সৌন্দর্যের খ্যাতি ও প্রশংসা পেলেও ক্রিস্টিনা বরাবরই মাটিতে পা রেখে চলতে ভালোবাসেন। যশ-খ্যাতি, অর্থ খুব অল্প বয়েসে পেলেও কখনো তা গুরুত্ব দিতে চাননি তিনি। সুপারমডেলের মুকুট মাথায় উঠলেও তারকাখ্যাতি সম্পর্কে উদাসীন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে তার। নিজের ইনস্টাগ্রাম বায়োতে ক্রিস্টিনা লিখেছেন—“মনে রাখবেন, সৌন্দর্য মনের ভিতরে থাকে।” ফ্যাশন দুনিয়া কাঁপানো এই মডেল-অভিনেত্রী সমাজিকমাধ্যমেও একইভাবে নজর কেড়েছেন। ইনস্টাগ্রামে তাকে এখন ২৪ লাখ অনুসারী রয়েছে। তাছাড়া ফেসবুকে তার ভক্ত সংখ্যা ৪৯ লাখ।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ