রাজশাহীর সারদায় অবস্থিত বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি থেকে পালিয়ে গেছেন পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এহসানউল্লাহ। বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকাল থেকে তিনি লাপাত্তা। পরদিন ডাকযোগে তিনি একটি ছুটির আবেদন পাঠিয়েছেন। তবে, সেটি গৃহীত হয়নি।

বিসিএস ২০ ব্যাচের এই কর্মকর্তা পুলিশ একাডেমির অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিকস শাখার দায়িত্বে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

পুলিশ একাডেমির পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিক) সাইফুল ইসলাম বলেছেন, “বুধবার সকাল থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। পরদিন ডাকযোগে একটি ছুটির আবেদন পাঠিয়েছেন। তবে, সেটি গৃহীত হয়নি।”

ডিআইজি এহসানউল্লাহ কেন পালিয়েছেন, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম। 

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, বুধবার তাকে আটকের জন্য ঢাকা থেকে একটি দল এসেছিল। বিষয়টি জানতে পেরে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান এহসানউল্লাহ।

পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র ও সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন বলেছেন, “আমিও শুনেছি যে, তিনি দুই দিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তবে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিষয়টি আমার জানা নেই। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিজস্ব তদন্ত সংস্থা আছে। তারা তাদের মতো করে কাজ করে থাকে।”

ঢাকা/কেয়া/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ল শ এক ড ম অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

জয় যেন হাতছাড়া না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর ৫৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন শেষ হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের উদ্যোগে তিন দিনের এই আয়োজন। শেষ দিনের আয়োজনে বক্তরা বলেন, অপশক্তির বিরুদ্ধে বারবার জয় পেলেও তা হাতছাড়া হয়ে যায়। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

এবার উদীচীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন হয়েছে দুই অংশে ভাগ হয়ে। আজ বিকেলে আয়োজিত হয় কেন্দ্রীয় সংসদের আলোচনা পর্ব এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহসাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম।

শুরুতে জাতীয় পতাকা ও সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলনের পর সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্মরণ করা হয় সত্যেন সেন, রণেশ দাশগুপ্ত, কলিম শরাফী, গোলাম মোহাম্মদ ইদু, কামাল লোহানী, পান্না কায়সার, যতীন সরকার ও বদিউর রহমানকে।

আজকের আয়োজনে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, ৫৬ বছর ধরে মুক্তির ব্রত নিয়ে উদীচী কাজ করছে। হতাশা, নিরাশা আর সাম্রাজ্যবাদ থেকে মুক্তিই উদীচীর চাওয়া। এ সময় সাবেক সংগঠক মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, আদর্শচ্যুতি হলে ঐক্য হয় না। উদীচীতে পারস্পরিক সংকট সব সময়ই ছিল। কিন্তু উদীচী কখনো রাজনৈতিক সংগঠন হয়নি।

উদীচীর সাবেক সহসভাপতি অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারীর বক্তব্যে উঠে আসে ১৯৬৮ সালে একজন শিল্পীর নারিন্দার বাসায় উদীচী শুরু হওয়ার স্মৃতিকথা। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে উদীচীর কার্যক্রম আরও বেগবান করা প্রয়োজন। সত্যেন সেনের গানের কথা উল্লেখ করে তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।

আয়োজনে উদীচীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সিদ্দিক রানাসহ অন্য বক্তারা বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে উদীচী। যখনই দেশে কোনো সংকট দেখা দেয়, তখনই উদীচী আলোকবর্তিকা হয়ে মানুষকে পথ দেখানোর চেষ্টা করে। মানুষ বারবার আন্দোলন করে আত্মাহুতি দিয়ে অপশক্তির হাত থেকে রক্ষা পেলেও বারবারই সে জয় হাতছাড়া হয়ে যায়। এই জয় যেন হাতছাড়া না হয়ে যায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

আলোচনা পর্ব সমাপ্ত করেন উদীচীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশটি সাম্প্রদায়িক করে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু গোটা উপমহাদেশের ঐতিহ্য হচ্ছে পরমতসহিষ্ণুতা। সেই ঐতিহ্য এখন নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে—বিশেষ “মব” তৈরি করে।’ আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক আয়োজন।

‘ঘোর আঁধারে পথ দেখাবে আগুনের নিশান’ স্লোগানে উদীচীর একাংশের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর তিন দিনব্যাপী আয়োজন শুরু হয় ২৯ অক্টোবর। ‘সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবিরোধী লড়াইয়ে উদীচী’ শিরোনামে প্রবন্ধ পাঠের পর সেদিন আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল রাজধানীর ডিআরইউতে। একই দিনে আরেক অংশের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। তাদের প্রতিপাদ্য ছিল ‘প্রগতির পথে জীবনের গান’। দেশে ও বিদেশে উদীচীর সাড়ে তিন শতাধিক জেলা ও শাখা সংসদে এবার একযোগে উদ্‌যাপন করেছে ৫৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ