Prothomalo:
2025-10-31@12:32:28 GMT

টনসিলের ফোঁড়া হলে চিকিৎসা

Published: 31st, October 2025 GMT

তীব্র প্রদাহের ফলে টনসিলের ওপর ও আশপাশে এবং টনসিলের ক্যাপসুলের পাশে পুঁজ জমা হয়, যাকে পেরিটনসিলার অ্যাবসেস বলা হয়। সচরাচর একে আমরা বলি টনসিলে ফোঁড়া হয়েছে। যথাযথ চিকিৎসা না করালে টনসিলের ইনফেকশনের জটিলতা থেকে এ রোগ হতে পারে।

এ সমস্যা হলে তীব্র গলাব্যথা ও জ্বর হয়। গলাব্যথার জন্য কিছু গিলতে কষ্ট হয়, এমনকি অনেক সময় মুখ হাঁ করতে কষ্ট হয়। টনসিলের ফোঁড়া সাধারণত বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়। টনসিলাইটিস বা টনসিলে প্রদাহ যদিও দুই পাশে হয়, কিন্তু পেরিটনসিলার অ্যাবসেস সব সময় এক পাশে হয়ে থাকে।

রোগের লক্ষণ

যদিও টনসিলের প্রদাহ শিশুদের মধ্যে বেশি, কিন্তু টনসিলের ফোঁড়া প্রাপ্তবয়স্কদের বেশি হয়।

তীব্র গলাব্যথা।

উচ্চ তাপমাত্রা (১০৩ থেকে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট)।

খাবার খেতে কষ্ট ও মুখ হাঁ করতে অসুবিধা।

কানে ব্যথা ।

মুখ দিয়ে লালা বের হয় ও কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে যেতে পারে।

মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হতে পারে।

রোগীর গলা পরীক্ষা করলে দেখা যাবে টনসিল ও টনসিলের উপরিভাগ, তালু লাল হয়ে ফুলে আছে। চিকিৎসা বিলম্ব করলে রোগীর মুখ হাঁ করতে কষ্ট হয় এবং আরও বিলম্ব হলে ফোঁড়াটা ফেটে পুঁজ বের হয়ে আসতে পারে।

জটিলতা 

ইনফেকশন শ্বাসনালি পর্যন্ত ছড়ালে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

গলার ভেতর সেলুলাইটিস হতে পারে।

সেপ্টেসেমিয়া বা ইনফেকশন সমগ্র শরীরে ছড়াতে পারে।

পুঁজ ফুসফুসে গেলে নিউমোনিয়া হতে পারে।

চিকিৎসা

ছোট অপারেশনের মাধ্যমে পুঁজটা বের করে দিতে হবে।

কালবিলম্ব না করে প্রথমে অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন এবং পরে মুখে খাবার অ্যান্টিবায়োটিকদিতে হবে।

ব্যথার জন্য ওষুধ দিতে হবে।

অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে গড়গড়া করতে হবে।

ছয় সপ্তাহ পর টনসিল অপারেশন করে নিলে ভালো হয়, না হলে একই সমস্যা আবার হতে পারে।

অধ্যাপক ডা.

এম আলমগীর চৌধুরী, অধ্যাপক, ইএনটি, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: টনস ল র

এছাড়াও পড়ুন:

রাতে বাড়িতে পুলিশের অভিযান, ভোরে ধানখেতে পাওয়া গেল রক্তাক্ত মরদেহ

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে জমিজমার বিরোধে থানায় করা এক মামলার আসামিকে ধরতে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরে আজ শুক্রবার ভোরে বাড়ির পাশে একটি ধানখেত থেকে তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।

মরদেহ উদ্ধার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম আবু সাদাদ সায়েম (৫০)। তিনি উপজেলার কৈচাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মাইজপাড়া গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। এলাকায় শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে সংসার চালাতেন তিনি।

পুলিশ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিহত সাদাদের বাবা মোসলেম উদ্দিনের সঙ্গে তাঁর ছোট ভাই মোজাম্মেল হোসেনের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর জেরে দুই পরিবারের মধ্যে গত শুক্রবার মারামারির ঘটনা ঘটলে প্রতিপক্ষের লোকজন হালুয়াঘাট থানায় আটজনের নামে একটি মামলা করেন। মামলার ১ নম্বর আসামি ছিলেন সাদাদ। গতকাল দিবাগত রাত দুইটার দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হালুয়াঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক মিয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাঁর বাড়িতে অভিযান চালায়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সাদাদ পালিয়ে যান। তাঁকে না পেয়ে ফিরে আসে পুলিশ।

এদিকে পুলিশ চলে যাওয়ার পর সাদাদ বাড়িতে ফিরে না আসায় স্বজনেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে আজ ভোরে বাড়ির পাশের একটি ধানখেতে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে পাওয়া যায়। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

সাদাদের বাবা মোসলেম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ছোট ভাই মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে তাঁর জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। এর জেরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তাঁরা থানায় মামলা করেন। আগামী রোববার দুই ছেলের জামিন নেওয়ার কথা ছিল। তার আগেই তারা (প্রতিপক্ষ) তাঁর ছেলেকে হত্যা করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

সাদাদের ছোট ভাই জসিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘পুলিশের সহযোগিতায় বাদীপক্ষের লোকজন পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করে ধানখেতে ফেলে রেখে যায়। অথচ কোনো আসামি ধরবে না বলে পুলিশ আমাদের কাছ থেকে টাকাও নিয়েছিল। আমরা আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।’

এ ঘটনার পর দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হালুয়াঘাট থানার এসআই মানিক মিয়া মুঠোফোনে বলেন, ‘গতকাল রাতে মামলার আসামিকে ধরতে গেলে আমরা পাইনি। ওই সময় হয়তো আমাদের উপস্থিতি দেখে পালিয়েছিল। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা কোনোভাবেই সত্য নয়।’

হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিহত সাদাদের শরীরে জখম, ছিলে যাওয়া ও কামড়ের মতো আঘাত আছে। তবে গুরুতর কোনো আঘাত তাঁরা দেখতে পাননি। মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তিনি বলেন, পুলিশ তাঁর বাবাকে সঙ্গে নিয়ে আসামি ধরতে যায়। ঘরে না পাওয়ায় পুলিশ চলে আসে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তাঁরা প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ