‘ক্যাঙারুর দেশ’ অস্ট্রেলিয়া যেন এক স্বপ্নের ভূখণ্ড। দিগন্তজোড়া আকাশ, সোনালি রোদে ঝলমলে সমুদ্রতট আর প্রাণবন্ত বহুসংস্কৃতির দেশ। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের মতো এখানকার শিক্ষাব্যবস্থাও সমৃদ্ধ ও বিশ্বমানের। শিক্ষার্থীদের জন্য এটি কেবল উচ্চশিক্ষার গন্তব্য নয়, বরং আত্মনির্ভরতা, গবেষণা ও আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার এক বিস্তৃত ক্ষেত্র। দেশটির ক্যানবেরা, মেলবোর্ন, সিডনি, ব্রিসবেন, অ্যাডিলেড, পার্থ শহরে রয়েছে বিশ্বের প্রথম সারির অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পড়াশোনার মধ্য কাজের সুযোগসহ নানা সুবিধার কারণে দেশটিতে বৃত্তি নিয়ে অনেকেই পড়তে যেতে চান। দিন দিন এ সংখ্যা বাড়ছে।

বিশ্বমানের শিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়

অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা, মেলবোর্ন, সিডনি, ব্রিসবেন, অ্যাডিলেড ও পার্থ শহরে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্বের প্রথম সারির। বিজ্ঞান, প্রকৌশল, ব্যবসা, চিকিৎসা, কৃষিবিজ্ঞান, মানবিক শাস্ত্রসহ প্রায় সব বিষয়েই এখানে আধুনিক শিক্ষার সুযোগ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান গবেষণানির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা, ব্যবহারিক জ্ঞান ও নতুন দক্ষতা অর্জনের ওপর জোর দেয়।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য

অস্ট্রেলিয়ার ডিগ্রিগুলো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে এই সনদ গ্রহণযোগ্য হওয়ায় কর্মক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার সুযোগও বাড়ে। ক্লাসরুমেই গড়ে ওঠে এক বৈশ্বিক পরিবেশ—যেখানে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সংস্কৃতি, ভাষা ও ভাবধারার মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পান।

আরও পড়ুনজার্মানি কেন উচ্চশিক্ষার জন্য পছন্দের শীর্ষে২৩ নভেম্বর ২০২৩

পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের সুযোগ

অস্ট্রেলিয়ায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে পারেন। এতে জীবনযাত্রার খরচের একটি বড় অংশ নিজেদেরই বহন করা সম্ভব হয়। পাশাপাশি পড়াশোনা শেষে দুই থেকে চার বছর পর্যন্ত কাজের ভিসা পাওয়া যায়, যা ভবিষ্যতে স্থায়ীভাবে বসবাসের পথও উন্মুক্ত করে দেয়।

আরও পড়ুনহার্ভার্ডের গবেষণা বলছে, মূল্য হারাতে বসেছে ১০ ডিগ্রি২৮ অক্টোবর ২০২৫

বৃত্তি ও আর্থিক সহায়তা

অস্ট্রেলিয়া সরকার ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবছর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য উদারভাবে বৃত্তি প্রদান করে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় কয়েকটি হলো:

মেলবোর্ন আন্তর্জাতিক স্নাতক বৃত্তি: স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা হিসেবে প্রথম বছরের জন্য ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত অধ্যয়ন ফি ছাড় দেওয়া হয়।

মোনাশ আন্তর্জাতিক নেতৃত্ব বৃত্তি: স্নাতক ও স্নাতকোত্তর অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট ক্রেডিট পয়েন্ট পর্যন্ত শতভাগ অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়া হয়।

ইউটিএস ভাইস চ্যান্সেলরের আন্তর্জাতিক বৃত্তি: স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের অধ্যয়ন ব্যয়ের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বহন করে।

গ্লোবাল একাডেমিক এক্সিলেন্স বৃত্তি: প্রতিটি অনুষদে অসামান্য ফলাফল অর্জনকারীদের অধ্যয়ন খরচ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়।

এই বৃত্তিগুলো শুধু শিক্ষার ব্যয় কমায় না, বরং শিক্ষার্থীদের মেধা ও পরিশ্রমের স্বীকৃতি হিসেবে আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে তোলে।

আরও পড়ুনজাপানে উচ্চশিক্ষা ও ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ কেমন২০ ঘণ্টা আগে

জীবনযাত্রা ও নিরাপত্তা

অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ দেশ। উন্নত স্বাস্থ্যব্যবস্থা, আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা ও পরিবেশবান্ধব জীবনযাত্রা শিক্ষার্থীদের জন্য এক নিরুদ্বেগ পরিবেশ সৃষ্টি করে। এখানকার মানুষ অতিথিপরায়ণ ও বিদেশিদের প্রতি আন্তরিক, ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীরা দ্রুত মানিয়ে নিতে পারেন।

বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া দীর্ঘদিন ধরেই জনপ্রিয়। মানসম্পন্ন শিক্ষা, খণ্ডকালীন কাজ, সহজ বৃত্তি প্রাপ্তির সুযোগ, নিরাপত্তা এবং স্থায়ী নাগরিকত্বের সম্ভাবনা—সব মিলিয়ে এটি এক আদর্শ গন্তব্য। প্রতিবছর অসংখ্য শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যাচ্ছেন, যা দেশটির প্রতি তাঁদের আস্থা ও আগ্রহেরই প্রতিফলন।

সব মিলিয়ে বলা যায়, অস্ট্রেলিয়া কেবল একটি উচ্চশিক্ষার কেন্দ্র নয়, এটি ভবিষ্যতের এক প্রতিশ্রুতিশীল অধ্যায়। এখানকার জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের জীবনে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে দেয়।

আরও পড়ুনযুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ: আবেদন, খরচ ও বৃত্তির খোঁজ২০ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক ষ র থ দ র জন য ব শ বব দ য শ বব দ য ল ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

অভিনেতা ধর্মেন্দ্র হাসপাতালে

বর্ষীয়ান অভিনেতা ধর্মেন্দ্রকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এনডিটিভি জানিয়েছে, ৮৯ বছর বয়সী এ অভিনেতাকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ডিসেম্বরের ৮ তারিখ ৯০ বছরে পা দেবেন ধর্মেন্দ্র। আর এরই মাঝে এনডিটিভি সূত্রে জানা গেছে, চার-পাঁচ দিন ধরে হাসপাতালে রয়েছেন তিনি। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও এখনো সেখানে ভর্তি আছেন তিনি।

ধর্মেন্দ্র

সম্পর্কিত নিবন্ধ