ঢাকার সাভারে একজন রং মিস্ত্রিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম মো. শাহিন (৩০)। তিনি সাভারের বলিয়ারপুর এলাকার বাসিন্দা কবির হোসেনের ছেলে। শাহিন রেডিও কলোনি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং ঘটনার স্থানের পাশের একটি গ্যারেজে রং মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন।

পুলিশ জানায়, নিহত ব্যক্তির বাঁ হাতে একটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে আরও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে কি না, তা জানতে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোতাছিম বিল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

ওই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ প্রথম আলোর কাছে আছে। এতে দেখা যায়, রাত ৯টা ২১ মিনিটে ব্যাংক কলোনি এলাকায় কয়েকজন পথচারী ও দোকানের কর্মী কিছু একটা লক্ষ্য করে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছেন। ওই সময় দুটি ব্যাটারিচালিত রিকশা সড়কের মাঝখানে থেমে যায়। এর মধ্যে এক ব্যক্তি হেঁটে এসে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে হাত রেখে দাঁড়ান। কিছুক্ষণ পর রাত ৯টা ২২ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডে তাঁকে হেলে পড়ে যেতে দেখা যায়। এরপর আশপাশের লোকজন তাঁকে ঘিরে ধরেন। অনেককে দ্রুত সরে যেতে দেখা যায় এ সময়।

গ্যারেজের কর্মচারী আবদুর রব বলেন, শাহিন খুব ভালো মানুষ ছিলেন। দুই বছর ধরে এখানে কাজ করছেন, কারও সঙ্গে তাঁর কোনো বিরোধ ছিল না।

সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আশিক ইকবাল বলেন, মরদেহ থানায় আনা হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’

ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।

আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।

আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।

রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।

রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।

কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?

কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।

রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।

রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।

এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।

রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ