কানে বাংলাদেশের ‘আলী’ পেল বিশেষ স্বীকৃতি
Published: 25th, May 2025 GMT
কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপনী দিনে বাংলাদেশের গর্বের অধ্যায় রচিত হল। শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় আদনান আল রাজীব পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘আলী’ ৭৮তম আসরে ‘বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছবির’ স্বীকৃতি পেয়েছে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ছবি, যা কানের অফিসিয়াল শর্ট ফিল্ম প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়ে এমন স্বীকৃতি অর্জন করল। প্রতিক্রিয়ায় রাজীব জানান, এ স্বীকৃতি কেবল একটি পুরস্কার নয়; এটি বাংলাদেশের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাণ চর্চার যুগান্তকারী সাফল্য।
আলী প্রযোজনা করেছেন বাংলাদেশের তানভীর হোসেন ও ফিলিপাইনের ক্রিস্টিন ডি লিওন। এটি নির্মিত হয় সিলেটে, ২০২৪ সালের নভেম্বরে। গল্পের মূল উপজীব্য– এক কিশোর, এক কণ্ঠ, আর এক সমাজ যেখানে গান গাওয়া মানেই বিদ্রোহ। সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন আল আমিন। পরিচালকের ভাষায়, আলী একটি অপরিহার্য সত্য গল্প, যা বলা হয়েছে সরলতা, সৌন্দর্য ও আন্তরিকতার মাধ্যমে। কানে আলী তাই হয়ে উঠেছে সবার।
শনিবার রাজীব বলেন, ‘আপনি সত্যিকারের কিছু বলার চেষ্টা করলে, তা সবাই অনুভব করতে পারবেন। নির্মাতা হিসেবে নিজের ভাষায়, নিজের গল্প নিয়ে কথা বলি। সেই গল্প এমন সম্মান পাবে তা সত্যিই আনন্দের। এ অর্জন নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের তরুণ নির্মাতাদের জন্য অনুপ্রেরণা।’
গত শুক্রবার কানে রাজীব পরিচালিত ১৫ মিনিটের সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়। সর্বশেষ ২০২১ সালে আঁ সার্তে রিগা বিভাগে সিনেমা ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ প্রদর্শিত হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত কানে একমাত্র পুরস্কার জিতেছে ‘মাটির ময়না’। প্রয়াত তারেক মাসুদ নির্মিত ও তাঁর স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ প্রযোজিত ছবিটি ২০০২ সালের ৫৫তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে ডিরেক্টর্স ফোর্টনাইট আয়োজনে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে ফিপরেস্কি আন্তর্জাতিক সমালোচকদের পুরস্কার জিতেছিল।
গত ১৩ মে ফ্রান্সের পালে দ্য ফেস্টিভ্যালে শুরু হয় ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসব। এবারের উৎসবের লাল গালিচায় বিশ্বের খ্যাতনামা অভিনেত্রী, গায়িকা ও মডেলরা বাহারি পোশাকে হেঁটেছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক ন উৎসব ক ন চলচ চ ত র উৎসব চলচ চ ত র র উৎসব
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় এবার ২৫০টি মন্দিরে দুর্গাপূজা, বেড়েছে ২২টি মন্ডপ
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ার মন্ডপগুলোতে চলছে নানা প্রস্ততি। তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পী ও আয়োজকেরা। গত বছরের তুলনায় এ বছর জেলায় বেড়েছে ২২টি পূজা মন্ডপ। সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন। জেলায় ২৫০টি মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। আবার কোথাও শুরু হয়েছে রঙের কাজ। আপন মনে প্রতিমাগুলো ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পীরা। এখন শেষ সময়ের পূজার প্রস্ততি নিচ্ছেন আয়োজকেরা। দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মালম্বীদের মাঝে বইছে উৎসবের আমেজ। প্রতিমা শিল্পীরা ৫টি থেকে ১০টি পর্যন্ত প্রতিমা তৈরি করেছেন।
প্রতিমা শিল্পী কুমারেশ দাস ও মৃত্যুঞ্জয় কুমার পাল জানান, শেষ সময়ে প্রতিমা শিল্পীদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে চাহিদাও বেশি।
এদিকে সকলের সহযোগিতায় অনাড়ম্বরভাবে দুর্গোৎসব পালন করতে চান আয়োজকরা।
হরিবাসর সার্বজনীন পূজা মন্দিরের উপদেষ্টা বিপ্রজিৎ বিশ্বাস বলেন, “আশা করছি প্রতিবছরের মতো এবছরও উৎসব মুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রশাসনের সহযোগিতা ও আশ্বাসে আমরা আমাদের পূজার কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছি।”
মিলপাড়া সাবর্জনীন পূজা মন্দিরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাপ্পী বাগচী বলেন, “প্রত্যেক ধর্মকে সন্মান জানানো প্রত্যেকটি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমাদের উৎসবে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে এলাকার সকলেই আমাদের পাশে থাকেন। আশাকরি এবারও তার ব্যত্যয় হবে না।”
কুষ্টিয়া মহাশ্মশান মন্দিরের পুরোহিত পলাশ চক্রবর্ত্তী বলেন, “আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবী পক্ষের সূচনা হবে। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠী এবং ২ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয়া দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। এবার পৃথিবীতে দশভূজার আগমন হবে হাতিতে চড়ে আর কৈলাশে ফিরবেন দোলায়।”
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার ৬ উপজেলায় ২৫০ মন্দিরে শারদীয়া দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৮১টি, খোকসা উপজেলায় ৫৯টি, কুমারখালী উপজেলায় ৫৯টি, মিরপুর উপজেলায় ২৮টি, ভেড়ামারা উপজেলায় ১১টি ও দৌলতপুর উপজেলায় ১২টি মন্ডবে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া এ বছর গত বছরের তুলনায় ২২টি মন্ডপে পূজা বেড়েছে।
কুষ্টিয়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জয়দেব বিশ্বাস বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর ২২টি পূজা বেশি হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশাসনের সাথে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের বৈঠক হয়েছে। এছাড়া ১৯টি ঝুঁকিপূর্ণ মন্ডপের তালিকা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে।”
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, “প্রতিটা পূজা মন্দিরে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে পূজা মন্দিরে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করা হবে।”
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন জানান, যার যার ধর্মীয় উৎসব স্বাধীনভাবে ও উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করা তাদের অধিকার। কোন প্রোপাগান্ডা ও গুজবে কান দেওয়া যাবে না। বর্তমান সরকারের মবের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। মব সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/কাঞ্চন/এস