কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপনী দিনে বাংলাদেশের গর্বের অধ্যায় রচিত হল। শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় আদনান আল রাজীব পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘আলী’ ৭৮তম আসরে ‘বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছবির’ স্বীকৃতি পেয়েছে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ছবি, যা কানের অফিসিয়াল শর্ট ফিল্ম প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়ে এমন স্বীকৃতি অর্জন করল। প্রতিক্রিয়ায় রাজীব জানান, এ স্বীকৃতি কেবল একটি পুরস্কার নয়; এটি বাংলাদেশের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাণ চর্চার যুগান্তকারী সাফল্য।

আলী প্রযোজনা করেছেন বাংলাদেশের তানভীর হোসেন ও ফিলিপাইনের ক্রিস্টিন ডি লিওন। এটি নির্মিত হয় সিলেটে, ২০২৪ সালের নভেম্বরে। গল্পের মূল উপজীব্য– এক কিশোর, এক কণ্ঠ, আর এক সমাজ যেখানে গান গাওয়া মানেই বিদ্রোহ। সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন আল আমিন। পরিচালকের ভাষায়, আলী একটি অপরিহার্য সত্য গল্প, যা বলা হয়েছে সরলতা, সৌন্দর্য ও আন্তরিকতার মাধ্যমে। কানে আলী তাই হয়ে উঠেছে সবার।

শনিবার রাজীব বলেন, ‘আপনি সত্যিকারের কিছু বলার চেষ্টা করলে, তা সবাই অনুভব করতে পারবেন। নির্মাতা হিসেবে নিজের ভাষায়, নিজের গল্প নিয়ে কথা বলি। সেই গল্প এমন সম্মান পাবে তা সত্যিই আনন্দের। এ অর্জন নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের তরুণ নির্মাতাদের জন্য অনুপ্রেরণা।’

গত শুক্রবার কানে রাজীব পরিচালিত ১৫ মিনিটের সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়। সর্বশেষ ২০২১ সালে আঁ সার্তে রিগা বিভাগে সিনেমা ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ প্রদর্শিত হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত কানে একমাত্র পুরস্কার জিতেছে ‘মাটির ময়না’। প্রয়াত তারেক মাসুদ নির্মিত ও তাঁর স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ প্রযোজিত ছবিটি ২০০২ সালের ৫৫তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে ডিরেক্টর্স ফোর্টনাইট আয়োজনে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে ফিপরেস্কি আন্তর্জাতিক সমালোচকদের পুরস্কার জিতেছিল।

গত ১৩ মে ফ্রান্সের পালে দ্য ফেস্টিভ্যালে শুরু হয় ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসব। এবারের উৎসবের লাল গালিচায় বিশ্বের খ্যাতনামা অভিনেত্রী, গায়িকা ও মডেলরা বাহারি পোশাকে হেঁটেছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ন উৎসব ক ন চলচ চ ত র উৎসব চলচ চ ত র র উৎসব

এছাড়াও পড়ুন:

উৎসবে সাশ্রয়ী কেনাকাটায় ভরসা বিকাশ পেমেন্ট

প্রিয়জনের জন্য পোশাক ও উপহার কেনা, ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতে সাজসজ্জার জিনিসপত্র কেনা, খাবার-দাবারের জন্য প্রয়োজনীয় আয়োজনের পাশাপাশি ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে যুক্ত হয় কোরবানির পশুসহ নানা অনুষঙ্গের কেনাকাটা। কিছু বাসার পাশের দোকান থেকে, কিছু অনলাইনে, আবার কিছু পণ্য পাইকারি বাজার থেকে কেনেন আবুল কালাম আজাদ। সারা বছরের সব কেনাকাটার মতোই এ সময়ে কেনাকাটায় তিনি ভরসা রাখেন বিকাশ পেমেন্টে। আজাদ জানান, ক্যাশ টাকা বহনের ঝুঁকি নিতে চান না, বিশেষ করে ঈদের কেনাকাটার ভিড়ের সময়টায়। তাছাড়া কাজের ফাঁকে সময় সুযোগ মতো কেনাকাটা সারেন। ফলে সব মুহূর্তের জন্য তার কাছে সবচেয়ে সহজ হয় বিকাশ পেমেন্ট।
যে কোনো ধরনের কেনাকাটায় নাজনীন সুলতানার ভরসা অনলাইনে কেনাকাটা। নাজনীন বলেন, ‘বিকাশ পেমেন্টের কারণে আমি সহজেই অনলাইন কেনাকাটা করে ফেলতে পারি, আমার সময় তো বাঁচেই, পাশাপাশি কোন খাতে কত খরচ করলাম তার হিসাব রাখাও সহজ হয়।’
একটি এনজিওতে চাকরির সূত্রে বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলায় পরিবার নিয়ে বাস করেন আফসানা পারভীন। চাকরির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে গড়ে তোলা নিজের ফেসবুকভিত্তিক পোশাক বিক্রির পেজটাও চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারায় তিনি গ্রামে বসেই সারাদেশের গ্রাহকের কাছে স্বাচ্ছন্দ্যে পণ্য বিক্রি করতে পারছেন। আফসানা জানান, বিকাশ পেমেন্টের কল্যাণে তার ব্যবসা বিস্তার করা সম্ভব হয়েছে।
প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে এভাবে দেশের আনাচে-কানাচে বিকাশ পেমেন্টের এমন হাজারো গল্প তৈরি হয়। উদ্যোক্তা এবং গ্রাহকের লেনদেন সহজ, তাৎক্ষণিক, নিরাপদ হয় বিকাশ পেমেন্টে। গলির ছোট মুদি দোকান হোক বা সুপরিচিত ব্র্যান্ডশপ– দেশজুড়ে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ মার্চেন্টে বিকাশ কিউআরের মাধ্যমে পেমেন্ট করার সুযোগ ডিজিটাল পেমেন্টকে সবার কাছেই সহজলভ্য করে তুলেছে। কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে দ্রুত ও নিরাপদে পেমেন্টের সুবিধা গ্রাহককে ডিজিটাল পেমেন্টে অভ্যস্ত করতে ভূমিকা রাখছে।
বর্তমানে বিকাশ অ্যাপ থেকে ৪৫টি ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট এবং ৪৯টি ব্যাংকের ভিসা, অ্যামেক্স বা মাস্টারকার্ড থেকে অ্যাড মানি করার সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি দেশব্যাপী প্রায় সাড়ে ৩ লাখ এজেন্ট পয়েন্ট থেকে ক্যাশ ইন-এর সুযোগ তো আছেই। যখনই প্রয়োজন তখনই বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা এনে পেমেন্ট করার সুবিধা দেশে ডিজিটাল লেনদেনের ইকোসিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখছে।
এদিকে জরুরি প্রয়োজনে কেনাকাটাকে আরও সহজ করতে দেশে প্রথমবারের মতো যৌথভাবে ‘পে-লেটার’ নামের বিশেষ জামানতবিহীন ঋণ সেবা চালু করেছে বিকাশ ও সিটি ব্যাংক। এ সেবার মাধ্যমে বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকলেও গ্রাহক প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে বিকাশ অ্যাপ থেকেই তাৎক্ষণিক সিটি ব্যাংকের এই বিশেষ ঋণ নিয়ে মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। সাত দিনের মধ্যে এই ঋণ পরিশোধ করা যায় কোনো ‘ইন্টারেস্ট’ ছাড়াই। আবার গ্রাহক চাইলে ৩ বা ৬ মাসের কিস্তিতেও পরিশোধ করতে পারছেন ঋণ। বিকাশ অ্যাপে পে-লেটারের জন্য বিবেচ্য গ্রাহক ৫০০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ সীমা পেতে পারেন। অ্যাপের ‘পেমেন্ট’ অথবা ‘লোন’ অপশন থেকে পে-লেটার ফিচার ব্যবহার করতে পারছেন গ্রাহকরা।
বিকাশের ইভিপি ও হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস অ্যান্ড পিআর শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, ‘দৈনন্দিন ব্যস্ততায় মূল্যবান সময় বাঁচাতে গ্রাহকরা ডিজিটাল লেনদেনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। এই আচরণগত পরিবর্তনের মূলে রয়েছে ডিজিটাল লেনদেনের প্রতি মানুষের আস্থা ও নির্ভরতা। গ্রাহকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিকাশও তাই উৎসব-পার্বণের সময় সুপারস্টোর, ব্র্যান্ডশপ, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন স্থানে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্টসহ নানা অফার দিয়ে থাকে। পাশাপাশি ডিজিটাল পেমেন্টের প্রকৃত সুবিধা গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিতে বিকাশ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইউটিলিটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, টেলিকম অপারেটর, সরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিওসহ নানা ধরনের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে দেশে একটি ডিজিটাল লেনদেনের ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’
এই ঈদুল আজহায় বিকাশ পেমেন্টে কেনাকাটার সব ডিসকাউন্ট ও পেমেন্ট অফারগুলো দেখে নেওয়া যাবে এই লিংকে– https://www.bkash.com/campaign/eid-ul-adha-payment-campaign-2025।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৭৮তম কান উৎসবে বিজয়ীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা
  • ২২ বছর পর ফিরেই স্বর্ণপাম জিতলেন নিষিদ্ধ সেই ইরানি পরিচালক
  • কানে পুরস্কার জিতল বাংলাদেশের ‘আলী’
  • চলচ্চিত্র উৎসবের মধ্যে কানে বিদ্যুৎ–বিভ্রাট
  • ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে স্মরণীয় ২৫ মুহূর্ত
  • চাহিদার মহাসমুদ্রে এক ফোঁটা জল
  • ‘আলী’ যেন একখণ্ড বাংলাদেশ
  • উৎসবে সাশ্রয়ী কেনাকাটায় ভরসা বিকাশ পেমেন্ট