বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী নাট্যদল থিয়েটার আর্ট ইউনিটের ৪০ তম প্রযোজনা নাটক বলয়। নাটকটির জোড়া মঞ্চায়ন হবে আগামী ২৯ ও ৩০ মে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বাংলাদেশ মহিলা সমিতি হলে সন্ধ্যা ৭ টায়। নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন মোকাদ্দেম মোরশেদ।
বলয়ের কাহিনী গড়ে উঠেছে বৃত্তে আবদ্ধ মানব সত্ত্বার বৃত্ত ভাঙ্গার আকুতি এবং বাস্তবতার টানাপোড়েনকে ঘিরে। নাটক টির কেন্দ্রীয় চরিত্র ত্রয় যথাক্রমে একজন রাজনীতি বিদ, একজন বিজ্ঞান চিন্তক এবং একজন আধ্যাত্ম তাত্ত্বিক। প্রত্যেকেই স্ব স্ব ক্ষেত্রে যোগ্যতা বলেই প্রতিষ্ঠিত, সমাজ সংসারে আদৃত কিন্তু অন্তরাত্মায় একঘেয়েমির যাতাকলে নিষ্পেষিত।
নিষ্পেষণের সর্বগ্রাসী দাবানল থেকে শীতল হতে, অন্তঃসারশূন্যতা থেকে সমৃদ্ধি পেতে, শৃঙ্খলের গণ্ডি থেকে মুক্তি পেতে চরিত্র ত্রয় একত্রিত হয় মনবিশ্লেষকের কাছে যথোপযুক্ত কাউন্সিলিং পেতে। সত্যিকার কাউন্সিলিং কি তারা পায়! সামাজিক -আর্থিক-রাজনৈতিক-আধ্যাত্মিক বলয় থেকে সত্যিই কি তাদের দিশা মেলে! যুক্তি - তর্ক-আস্থা-অনাস্থার খণ্ডন - বিখণ্ডের মাঝে দাঁড়িয়ে বলয় থেকে নতুন বলয়ে প্রত্যাবর্তন নাকি স্ববলয়ে থেকে নিরন্তন অর্ন্তদহন এরকম অসংখ্য মানবাত্মার আকুতির দৃশ্য কল্পের রূপায়নের নাটক বলয়।
নাট্যকার নির্দেশিত নাটক বলয়ের নির্দশক মোকাদ্দেম মোরশেদ বলেন, পাণ্ডুলিপি সৃজন থেকে নাটক নির্মান পর্যন্ত যাত্রাপথটা বলয় থেকে বলয়ে অবগাহন এবং উত্তরণ। এই অবগাহন কখনো সাবলীল আবার কখনো ঘূর্ণন। আমাদের দল যেহেতু অভিনেতা নির্ভর দল ফলে সামগ্রিক নির্মানে যেমন সংলাপ নির্ভর অভিনয় কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে তেমনি নাটকের দ্বান্দ্বিকতার দৃশ্যকল্প আলো- আবহ এবং মঞ্চ সজ্জ্বার বিন্যাসে প্রতিফলিত করা হয়েছে। থিয়েটার আর্ট ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক এবং প্রযোজনা অধিকর্তা কামরুজ্জামান মিল্লাত বলেন, এস এম সোলায়মানের ভাব ও আদর্শে প্রতিষ্ঠিত নাট্যদল সব সময় নাটকের মধ্যে দিয়ে মানুষের কথা মানুষের সামনে বলেছে। নাটক বলয়ে মানব জীবনের সংকটকে চিনে নিয়ে সম্ভাবনার দুয়ার খোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত।
নাটকটির আলোক পরিকল্পনায় সুদীপ চক্রবর্তী, আবহে সেলিম মাহবুব, নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাহমুদা হোসেন ভাবনা, নাহিদ সুলতানা লেমন, রানা সিকদার, রেজাউল আমিন সুজন, স্বাধীন শাহ্ , সেলিম মাহবুব, হাসনাত প্রদীপ সহ আরো অনেকে।
বল
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আমি কখনোই এনসিপিকে সমর্থন করব না: সায়ান
জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কোলাকুলি করে ভোটের রাজনীতি করতে গিয়ে এই দেশে কিছুদিন আগেই একটা বড় দলের ত্রাহি মধুসূদন দশা হয়েছিল। আওয়ামী এমন নতুন ধারাবাহিক-গুরুতর পাপকর্ম করেছে দেশের মানুষের বিপক্ষে যে সেই দলের গুরু পাপকে ভুলিয়ে দিয়েছে প্রায়। নতুন দল এনসিপির সারজিস, হাসনাতরা প্রথম থেকেই তাদের রাজনীতি পরিষ্কার করে দিয়েছে। ধন্যবাদ। সেই হিসেবে দেশের মানুষের, আমাদের মতো সাধারণ মানুষের অনেক সুবিধা হলো। দিনের শেষে ভোটেই তো দাঁড়াতে হবে আপনাদের।
জামায়াতকে বুকের সঙ্গে আগলে রেখে, রাজাকারের ‘বেকসুর খালাসকে’ সেলিব্রেট করে আপনারা আমাদের ভোট চান? বিবেকবান স্বাভাবিক সাধারণ মানুষের? একাত্তরের পরে জন্মেছি বলে কি জামায়াত চিনি না? আলবদর চিনি না? বীরাঙ্গনার ব্যথা বুঝি না? এই দেশের ছোট ছোট বাচ্চারাও ইতিহাসবিদদের মতো দিন–তারিখের রেফারেন্স দিয়ে জামায়াতের জন্ম–ইতিহাস বলতে পারবে না হয়তো। কিন্তু জামায়াত কী, তাদের আদর্শ কী, তারা এই দেশের মানুষকে নিয়ে কী করতে চায়, তা আজকে সকালে জন্ম নেওয়া বাচ্চটাও কালকে বিকেলের মধ্যে শিখে যায়।
এনসিপি যে এই জায়গাটা ধরতে পারে নাই, তা তাদের বুদ্ধিমত্তার নির্দেশক। তারা নতুন দেশ গড়ার কথা বলে নিজেদের ভোটের জন্য জামায়াতকে বুকে টেনেছে বলে মনে হয়। আবার তাদের আরেকটি সঞ্চয় হলো ‘আওয়ামী-ঘৃণা’। আজকে দেশে অনেক অন্যায় ঘটছে। তাদের সেসবে হেলদোল নেই। কিন্তু জামায়াত আর আলবদরকে ভালোবাসায় তারা আগুয়ান। ধন্যবাদ এই স্বচ্ছতার জন্য।
আমি প্রতিমুহূর্তে নিজের রাজনীতিকে পরিবর্তন করার পক্ষে। আজকে যাকে ভালো লাগছে, কালকে তাকে ছুড়ে ফেলে দিতে দ্বিধা করি না, মাটির প্রশ্নে। সেই হিসাবে আমার রাজনৈতিক ইমান খুব তরল এবং সেটাই আমি চাই। নাহিদরা যখন বুক পেতে দিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল গত জুলাইতে, ওদের জন্য ভালোবাসা ছিল, সমর্থন ছিল। সেদিন সেটাই ছিল আমার রাজনীতি। ওদের সেই মৃত্যুর মুখে দাঁড়ানো, সেটাকে সেই সময়ের সত্যিকারের দেশপ্রেম, আর মানুষপ্রেম, মাটিপ্রেম মনে হয়েছিল। তার জন্য আমি একটুও দুঃখিত হব না কোনো দিন। আমার সেই দিনের সমর্থনের জন্য আমি কোনো দিন অনুতপ্ত হব না। নেভার! কিন্তু গত কয়েক মাসের তাদের অনেক আচরণ, অনেক কিছু দেখতে দেখতে দেখছি, আজকে সেই একই দলের ছেলেমেয়েরা যে আজহারের বেকসুর খালাসকে উদ্যাপন করল, আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সমর্থন করল, (এমনকি লজ্জায় বা কৌশলে চুপ করে থাকল না, প্রকাশ্যে সমর্থন করল), আর নাদিরা ইয়াসমিনের অন্যায়ভাবে বদলির বিরুদ্ধে একটা কথাও বলল না, এই দেশের একজন মানুষ হিসেবে এটাই আমার আপাতত রাজনীতি যে এরপর এই নতুন দলটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আজকে থেকে বর্জন করলাম। এইটুকু করার কথা ভেবেই নিজের অশান্ত মনকে আমি খানিকটা শান্তি দিতে পারছি। আগামী নির্বাচনে আমি এনসিপি, জামায়াত, এই সমমনা দলগুলোকে ভোট নিজে তো দেবই না; বরং মানুষকে অনুরোধ করব যেন তারা এই দলগুলো থেকে দূরে থাকে। একজন একক ব্যক্তি হিসেবে এটাই আমার সাধ্য। আমি এনসিপিকে সমর্থন করব না।
আরও পড়ুনআমি ভোট দেব, তবে আজীবনের আনুগত্য দেব না২২ নভেম্বর ২০২৪