সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের কারণে থেমে থেমে নামছিল বৃষ্টি—কখনো ঝুমে, কখনো গুছিয়ে। প্রকৃতির এমন মনখারাপের দিনে শৈশবে ফিরে গেলেন একঝাঁক গণমাধ্যমকর্মী। মাথায় বৃষ্টি, পায়ে কাদা—এসব উপেক্ষা করে ফুটবলের আনন্দে মেতে উঠলেন তারা পল্টন মাঠে।

বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসজেএ) -এর ব্যবস্থাপনায় ও স্কয়ার টয়লেট্রিজ -এর পৃষ্ঠপোষকতায় চলছে ‘কুল-বিএসজেএ মিডিয়া কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট’। আজ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত আটটি খেলার মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হয়েছে কোয়ার্টার ফাইনালের লাইনআপ।

দেশের শীর্ষস্থানীয় ৩২টি মিডিয়া হাউসের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টের বৃষ্টিস্নাত দিনে জয় পেয়েছে— এটিএন বাংলা, দেশ টিভি, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, দৈনিক প্রথম আলো, চ্যানেল আই, এখন টিভি, ঢাকা ট্রিবিউন ও দৈনিক যুগান্তর।

আরো পড়ুন:

কনফারেন্স লিগ জিতে ইউরোপীয় ফুটবলে চেলসির অন্যরকম পূর্ণতা

মেসি-সুয়ারেজ জোড়ায় উড়ল ইন্টার মায়ামি

দিনের প্রথম ম্যাচে বৈশাখী টিভিকে ৩-১ গোলে হারায় এটিএন বাংলা। ম্যাচে দুটি গোল করে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন দলের আদদ্বীন সজীব।

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে দেশ টিভি ও বিটিভির ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হয়। পরে টাইব্রেকারে ১-০ ব্যবধানে জয় পায় দেশ টিভি। ম্যাচসেরা হন দেশ টিভির গোলরক্ষক শাওন।

বৃষ্টিভেজা মাঠে গোলশূন্য ড্র হয় দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড ও দৈনিক কালের কণ্ঠের ম্যাচ। টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে জয় পেয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কাটে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। ম্যাচসেরা হন দলের পরিবর্তিত গোলরক্ষক আরিফ চৌধুরী পাভেল।

দৈনিক প্রথম আলো ও চ্যানেল ২৪-এর মধ্যকার ম্যাচেও গোল হয়নি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে। টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে জয়ী হয় প্রথম আলো। ম্যাচসেরা হন গোলরক্ষক তানভীর আহমেদ।

দৈনিক সমকালকে ১-০ গোলে হারায় চ্যানেল আই। জয়সূচক গোল করে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন আব্দুল্লাহ আল নওফেল।

এখন টিভি ও নিউজ ২৪-এর ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হয়। টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে জিতে এখন টিভি। ম্যাচসেরা হন গোলরক্ষক প্রধাংশু বর্মন।

সমানে সমান লড়াই শেষে দ্য ডেইলি স্টার ও ঢাকা ট্রিবিউনের ম্যাচও ১-১ গোলে ড্র হয়। টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে জয়ী হয় ঢাকা ট্রিবিউন। গোল করা ও পরিবর্তিত গোলরক্ষক হিসেবে অসাধারণ পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরা হন ফজলে রাব্বি মুন।

দিনের শেষ ম্যাচে আরটিভিকে ৩-০ গোলে হারায় দৈনিক যুগান্তর। জোড়া গোল করে ম্যাচসেরা হন অতিথি খেলোয়াড় মাঝহারুল ইসলাম মিঠুন।

বৃষ্টির মাঝেও উৎসবমুখর পরিবেশে ম্যাচগুলো সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএসজেএ সভাপতি আরিফুর রহমান বাবু, টুর্নামেন্ট কমিটির আহ্বায়ক ও বিএসজেএ সহ-সভাপতি রায়হান আল মুঘনি এবং টুর্নামেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ইয়াসিন হাসান রাব্বি।

কোয়ার্টার ফাইনাল সূচি (শনিবার):
কোয়ার্টার ফাইনাল ১:
গ্রুপ ‘এ’ (এটিএন বাংলা) বনাম গ্রুপ ডি (এখন টিভি)।
কোয়ার্টার ফাইনাল ২: গ্রুপ ‘বি’ (প্রথম আলো) বনাম গ্রুপ সি (দৈনিক যুগান্তর)।
কোয়ার্টার ফাইনাল ৩: গ্রুপ ‘ই’ (ঢাকা ট্রিবিউন) বনাম গ্রুপ এইচ (চ্যানেল আই)।
কোয়ার্টার ফাইনাল ৪: গ্রুপ ‘এফ’ (দেশ টিভি) বনাম গ্রুপ জি (দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড)।
 

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল দ য ব জন স স ট য ন ড র ড ক য় র ট র ফ ইন ল বন ম গ র প প রথম আল ট র ব উন এখন ট ভ ব যবধ ন ব এসজ এ ড র হয় গ ল কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ