প্রতিবছর জিলহজ মাসের দশম দিনে মুসলিম বিশ্বে উদ্‌যাপিত হয় ইসলামের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এই দিন কেবল আনন্দের নয়; বরং কোরবানির ত্যাগ ও আত্মশুদ্ধির অপূর্ব মিলনবিন্দু। একই সময় আসে হজের মৌসুম, লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষ হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।

নামের তাৎপর্য

বিভিন্ন সংস্কৃতিতে পবিত্র ঈদুল আজহার ভিন্ন ভিন্ন নাম। মাগরিব (উত্তর আফ্রিকা) অঞ্চলে এটি ‘ঈদুল কাবির’ বা বড় উৎসব নামে পরিচিত। সিরিয়া ও ইরাকের কিছু এলাকায় এটি ‘ঈদুল হাজ্জাজ’ ও তুরস্ক, ইরানসহ এশিয়ার কিছু মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এটি ‘ঈদুল কোরবান’ নামে পরিচিত। আরবি শব্দ ‘ঈদ’ অর্থ যা নিয়মিত ফিরে আসে। ইসলামে বছরে মাত্র দুটি ঈদের বিধান দেওয়া হয়েছে—পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। এই দুটি উৎসব ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রোজা ও হজের সঙ্গে সংযুক্ত।

কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করে নিজে খাওয়া, আত্মীয়দের মধ্যে বিতরণ ও গরিব–দুঃখীদের দান করা সুন্নাহ।

এই অতুলনীয় ত্যাগ ও আনুগত্যের প্রতিদান হিসেবে আল্লাহ একটি দুম্বা পাঠান, ইসমাইল (আ.

)–এর পরিবর্তে যা ইবরাহিম (আ.) কোরবানি করেন।

আরও পড়ুনযে আমলে রিজিক বাড়ে ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে কর্তব্য

পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে রয়েছে তাকবির, ঈদের নামাজ, কোরবানি ও আনন্দ ভাগাভাগি।

১. তাকবির: আরাফার দিন ফজর থেকে তাশরিকের শেষ দিন (জিলহজের ১৩তম দিন) পর্যন্ত ঘরে–বাইরে, মসজিদে ও বাজারে তাকবির ধ্বনিত হয়। সবচেয়ে প্রচলিত তাকবির হলো, ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ’। এটি আল্লাহর মহিমা ঘোষণা ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি মাধ্যম।

কোরবানির সময় ঈদের নামাজের পর থেকে তাশরিকের শেষ দিন পর্যন্ত। একটি হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি নামাজের আগে কোরবানি করেছে, সে যেন আরেকটি কোরবানি করে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১,৯৬০)

২. ঈদের নামাজ: ঈদের নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এটি দুই রাকাত, যেখানে প্রথম রাকাতে তিনটি ও দ্বিতীয় রাকাতে তিনটি অতিরিক্ত তাকবির দিতে হয়। এ জন্য আজান বা ইকামতের প্রয়োজন নেই। নামাজের পর খুতবা দেওয়া হয়, যা শোনা মুস্তাহাব। রাসুল (সা.)–এর সুন্নাহ অনুযায়ী, নামাজে যাওয়ার পথে এক রাস্তা ও ফেরার পথে অন্য রাস্তা ব্যবহার করা উত্তম।

৩. কোরবানি: কোরবানি পবিত্র ঈদুল আজহার অন্যতম প্রধান আনুষ্ঠানিকতা। এটি সুন্নতে মুয়াক্কাদা। কোরবানির জন্য উট, গরু, ছাগল বা ভেড়া নির্দিষ্ট বয়স ও শারীরিক শর্ত পূরণ করতে হবে। রাসুল (সা.) দুটি সাদা–কালো মোটা ও শিংওয়ালা দুম্বা কোরবানি করেছিলেন (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৫৫৩)। কোরবানির সময় ঈদের নামাজের পর থেকে তাশরিকের শেষ দিন পর্যন্ত। একটি হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি নামাজের আগে কোরবানি করেছে, সে যেন আরেকটি কোরবানি করে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১,৯৬০)

কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করে নিজে খাওয়া, আত্মীয়দের মধ্যে বিতরণ ও গরিব–দুঃখীদের দান করা সুন্নাহ।

৪. আনন্দ ও শুভেচ্ছা বিনিময়: ঈদের দিন আনন্দ প্রকাশ, নতুন পোশাক পরা, আত্মীয়–বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করা ও শুভেচ্ছা বিনিময় করা ইসলামের শিক্ষা। সাহাবিরা ঈদের দিন একে অপরকে বলতেন, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম’ (আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের থেকে কবুল করুন)। এই শুভেচ্ছা সমাজে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও মজবুত করে।

সূত্র: আল–জাজিরা ডটনেট

আরও পড়ুনমক্কার জমজম কূপের উৎপত্তি০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঈদ র ন ম জ ক রব ন র আল ল হ ইসল ম আকব র আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

ডাইনির সাজে শাবনূর!

ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূর এখন অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। মাঝেমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টের মাধ্যমে নিজের খবর জানান দেন তিনি। এবার সেই পর্দার প্রিয় নায়িকা হাজির হয়েছেন এক ভিন্ন সাজে—ডাইনির রূপে!

প্রতি বছর ৩১ অক্টোবর বিশ্বের নানা প্রান্তে পালিত হয় ঐতিহ্যবাহী হ্যালোইন উৎসব। পশ্চিমা বিশ্বে এটি এক জনপ্রিয় দিন, যেখানে মানুষ নানা ভুতুড়ে সাজে নিজেদের উপস্থাপন করে। যদিও অনেকেই মনে করেন এটি কেবল ভূতের সাজের উৎসব, আসলে মৃত আত্মাদের স্মরণেই হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী এ দিনটি উদযাপিত হয়।

আরো পড়ুন:

পর্দায় ‘মহল্লা’র ভালো-মন্দ

বাবা হওয়ার কোনো বয়স আছে? সত্তরে কেলসির চমক

সেই উৎসবের আমেজে এবার শামিল হয়েছেন শাবনূরও। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক ছবিতে দেখা গেছে, ছেলে আইজানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সেজেছেন ভয়ংকর এক ডাইনির সাজে—চোখের কোণ বেয়ে নেমে আসছে লাল রক্তের রেখা, সঙ্গে এক ‘ভূতুড়ে’ চেহারার চরিত্র।

ছবির ক্যাপশনে শাবনূর লিখেছেন, “আমি সাধারণ মা নই, আমি একজন দুর্দান্ত মা—যিনি একজন ডাইনিও! হ্যালোইনের শুভেচ্ছা, বাচ্চারা!”

পোস্টের শেষে তিনি যোগ করেছেন, “এটা শুধু মজা করার জন্য।”

ভক্তরা কমেন্টে ভরিয়ে দিয়েছেন শুভেচ্ছা ও প্রশংসায়। কেউ লিখেছেন, “শাবনূর মানেই চমক,’ কেউ আবার জানিয়েছেন, ‘হ্যালোইনেও আপনি আমাদের শাবনূরই—ভালোবাসা রইল।”

ঢাকা/রাহাত/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ডাইনির সাজে শাবনূর!
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক
  • বিজ্ঞান উৎসব উদ্বোধন করল রোবট নাও
  • ‘ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসবে’ আলোয় ভাসল গারো পাহাড়
  • টোকিওতে জমেছে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব
  • সন্ধ্যা নদীর দুকূলে উৎসবের ঢেউ, উজিরপুরে নৌকাবাইচে মাতলেন হাজারো মানুষ
  • রাঙামাটি রাজবন বিহারে দুদিনের কঠিন চীবর দানোৎসব শুরু