অলিম্পিয়াডগুলোতে সরকারি বরাদ্দ না থাকায় ক্ষোভ গণশিক্ষা উপদেষ্টার
Published: 31st, May 2025 GMT
অলিম্পিয়াডগুলোতে সরকারি বরাদ্দ না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। তিনি বলেছেন, পৃথিবীতে মাত্র চারটা দেশে বায়োলজি অলিম্পিয়াডে সরকার সহযোগিতা করে না। তারমধ্যে বাংলাদেশ একটি। অথচ কতশত প্রজেক্টে কত কোটি টাকা নষ্ট করছি।
শনিবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মিলনায়তনে জাতীয় জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড আয়োজিত জীববিজ্ঞান উৎসব ২০২৫ সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরারও উপস্থিত ছিলেন।
বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, পৃথিবীতে যতগুলো দেশ বায়োলজি অলিম্পিয়াডে অংশ নেয় এরমধ্যে চারটা মাত্র দেশ যাদের সরকার কোনো সাহায্য করে না। এই চারটা দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। আমি সাধ্যমত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে বোঝানোর চেষ্টা করছি যে, আমাদের এটা উৎসাহিত করা দরকার।
তিনি বলেন, শুধু বায়োলজি নয় আরও অনেক অলিম্পিয়াড রয়েছে। ছাত্ররা নিজে টাকা দিয়ে এখানে অংশ নিচ্ছে। কিন্তু আমরা আমরা তাদের কিছু সাহায্য করতে পারছি না। আমাদের বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, যখন প্রতিযোগীদের বাইরে পাঠাতে চাই কিন্তু বাইরে পাঠানোর খরচ কে আমাদের দেবে? আমরা ছাত্রদের থেকে টাকা নিতে বাধ্য হই।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করব, যে অলিম্পিয়াড আমাদের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানের প্রতি মনোভাব গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে তাদেরকে সাহায্য করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না? কতশত প্রজেক্টে কতশত কোটি টাকা নষ্ট করছি কিন্তু আমরা যদি অলিম্পিয়াডকে ন্যূনতম বলতে পারি, বাইরে যখন যাবে আমরা তোমাদের টাকা দিয়ে দিব। তাহলে অলিম্পিয়াড চালানো যায়। আমরা অলিম্পিয়াড ছাড়াও বায়োটেক, সেমিনার আয়োজন, গবেষণা করতে পারি। কিন্তু মন দিতে পারি না। আমাদের মনোযোগ যায় টাকা কোথা হতে ম্যানেজ হবে। আমি এটা দায়িত্বে যারা রয়েছেন তাদের বিবেচনার অনুরোধ করব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, আমি কয়েকদিন হলো এখানে দায়িত্ব নিয়েছি। আমার পুরোপুরি এখনও সব বিষয়ে ধারণা হয়নি। তবে ন্যূনতম স্কোপ থাকে, তরুণ তরুণদের সহযোগিতা করার সুযোগ থাকে, যেটা আমার সিদ্ধান্তের সুযোগ রয়েছে। আমি সেটা কমিটমেন্ট দিচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি এক্সট্রা কারিকুলার কাজগুলো বেগবান করা আমাদের দায়িত্ব। যদি আমরা নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে না পারি তাহলে অন্যদেরকে দোষ দেওয়ার কোনো অধিকার আমাদের নেই। এই ছাত্রদের জন্যই নতুন বাংলাদেশ সম্ভব হয়েছে। তাই আমাদের কাজ হলো এমন বাংলাদেশ গড়ে তোলা যাতে করে তরুণ প্রজন্মের কাঙ্ক্ষিত যে স্বপ্ন সেটা যেন তৈরি করে দিতে পারি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বুয়েটের উপাচার্য আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট ক ষ ভ প রক শ অল ম প য় ড উপদ ষ ট আম দ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে অবৈধ মেলা বসাতে মরিয়া বিএনপি নেতারা
সোনারগাঁয়ের বারদীতে হিন্দু সম্প্রাদায়ের আধ্যাত্মিক সাধক শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ১৩৫তম তীরোধান উৎসবকে কেন্দ্র করে অবৈধ মেলা বসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় বিএনপির।
এঘটনায় গত বৃহস্পতিবার অবৈধ মেলা অপসারণ ও লোকনাথ ভক্ত ও জনসাধারণের চলাচল নির্বিঘ্নে করতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য এলাকাবাসী গণ স্বাক্ষর দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে স্বারকলিপি দিয়েছেন।
আগামী ৩রা জুন লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তীরোধান উৎসব পালিত হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকনাথ ভক্তরা বারদীতে আসতে শুরু করেছেন।
রকলিপিতে এলাকাবাসী উল্লেখ করেন, হিন্দু সম্প্রাদায়ের আধ্যাত্মিক সাধক শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তীরোধান উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত। মাঠ দখল, সরকারী রাস্তাঘাট দখল নিয়ে রাজনৈতিক দলের কর্মীরা নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাটিসহ সামাজিক বিশৃঙ্খল সৃষ্টি করছেন।
যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংঙ্কায় সাধারণ মানুষ আতংঙ্কিত হয়ে পেড়েছেন। বিগত বছর গুলোতে তীরেধান উৎসবে বিশৃঙ্খলা পরিবেশ এড়াতে মেলা বন্ধ রাখা হয়েছে।
বর্তমানে একটি দলের উশৃঙ্খল নেতাকর্মী বিভক্ত হয়ে মেলা নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নিতে চেষ্টা করছে। এতে করে ওই এলাকার সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। মেলায় লোকনাথ ভক্ত ও দর্শনার্থীদের কথা বিবেচনা করে অবৈধভাবে দখল মাঠ উচ্ছেদ করে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
সূত্র জানায়, বারদী ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলমীর হোসেন, ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক আব্দুল আলী ও আব্দুল হালিম, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আব্দুল করিম, বারদী ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সাত্তার বারদী খেলার মাঠ ও আশপাশের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে মেলা বসানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
এলাকাবাসীর দাবি, তীরোধান উৎসবে মেলা বন্ধ করে হিন্দু ধর্মালম্বীদের পূর্জা, অর্চনাসহ তাদের ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচলনা নির্বিঘ্নে করতে হবে।
বারদী ইউনিয়নের রিবর গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র সরকার বলেন, লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তীরেধান উৎসব নির্বিঘ্নে করতে হবে। মেলা হলে যানজট ও কোলাহল তৈরি হয়। ফলে পূর্জা, অর্চনা, রাজভোগ, বাল্যভোগসহ ধর্মীয় কাজে ব্যাঘাত ঘটে। তাই মেলা না বসলেই হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ভালোভাবে ধর্মীয় কার্যক্রম শেষ করতে পারবেন।
বারদী ইউনিয়নের নাগপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, প্রতিবছর লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তীরোধান উৎসবে দেশ বিদেশ থেকে বারদীতে লাখো মানুষের সমগম ঘটে। বারদীতে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব রয়েছে। হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব পালন করার জন্য অবশ্যই মেলা বন্ধ রাখতে হবে। মেলা হলে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যায়। তাছাড়া ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতির আশংঙ্কা থাকে।
বারদী ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, প্রশাসনের মৌখিক অনুমিতে মেলা বসছে। মেলার বিষয়ে কারো অভিযোগ নেই। প্রশাসন ম্যানেজ হয়েই মেলা বসানোর সুযোগ দিয়েছেন।
সোনারগাঁ থানার ওসি মো. মফিজুর রহমান বলেন, আমাদের মৌখিকভাবে মেলা বসানোর জন্য অনুমতি দেওয়ার কোন সুযোগ নাই। আমরা আইনশৃঙ্খলার রক্ষায় সকল প্রকার ব্যবস্থা নিবো।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমানের ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি। ক্ষুদে বার্তা দিয়ে সাড়া পাওয়া যায়নি।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন,লোকনাথ ভক্তদের চলাচল নির্বিঘ্নে করতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। তবে মেলা বসানোর কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, সোনারগাঁয়ের বিষয়গুলো ইউএনও দেখবেন। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবে মেলার অনুমতি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। কেউ মেলা বসালে সেটা অবৈধ হবে।