লক্ষ্মীপুরের রামগতি এলাকার মেঘনা নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে রামগতি-বিবিরহাট সড়কের কোরের বাড়ি মোড়ের পুরাতন বেড়ীবাঁধটিতে দেখা দিয়েছে এ ভাঙন। এতে করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে উপজেলার রামগতি-বিবিরহাট সড়কটি। 

সড়কটি ধসে পড়লে ওই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। বিশেষ করে লক্ষ্মীপুর জেলা সদর ও রামগতি উপজেলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রামগতি-বিবিরহাট সড়কের রামগতি বাজার সংলগ্ন কোরের বাড়ি মোড়ের পুরাতন বেড়ীবাঁধটি মেঘনা নদীর তীব্র জোয়ারের আঘাতে ভেঙে পড়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। তীব্র ঢেউয়ের তোড়ে সড়কের অর্ধেক ভেঙে পড়েছে নদীতে। সড়কের বাকি অংশ যে কোন সময় ধসে পড়লে তলিয়ে যাবে বিস্তীর্ণ এলাকা। 

এতে পুরাতন বেড়ীবাঁধের আশেপাশের বাসিন্দারা রয়েছে চরম উদ্বিগ উৎকন্ঠায়। সড়কটি ভেঙে গেলে মেঘনার পানি প্রবেশ করে আশেপাশে দুইটি ইউনিয়নের কমপক্ষে চারটি গ্রামের অন্তত দুই হাজার ঘরবাড়ি তলিয়ে যাবে মেঘনায়। ভেঙে পড়বে মানুষের ঘরবাড়িসহ রাস্তাঘাট, দোকানপাট ও হাটবাজার। 

এছাড়া সড়কটি ধসে পড়লে রামগতি উপজেলা সদর আলেকজান্ডার বাজারে আসা-যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এতে কয়েক হাজার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

স্থানীয়রা জানান, গত বছরেও সড়কটির এ অংশে ভাঙন দেখা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে জিও ব্যাগ দিয়ে কোনমতে সড়কটি রক্ষা করা হয়। এ বছর জিও ব্যাগ দিয়েও আর রক্ষা করার কোন সম্ভাবনা দেখছে না তারা। সময়মত টেকসই বাঁধ নির্মাণ না করায় এখন যে কোন সময় ধসে পড়তে পারে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি।

সড়কটি দিয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা সদর, রামগতি উপজেলা সদর আলেকজান্ডার বাজার, উপজেলা পরিষদ, রামগতি থানা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বিবিরহাট ও রামগতি বাজারে যাতায়াত করে থাকেন এ অঞ্চলের অর্ধ লাখ মানুষ। 

স্থানীয়রা জানান, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ স্থায়ী ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে না। রাস্তাটি ধসে পড়লে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম রাব্বানী বলেন, “এ রাস্তার পাশেই মেঘনা নদী। কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল নদীর তীরবর্তী এ সড়কটি ধরে রাখতে বর্ষার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু তারা সম্পূর্ণ উদাসীন ও অবহেলার পরিচয় দিয়েছে। এখন যেকোনভাবেই রাস্তাটি রক্ষা করা খুবই প্রয়োজন।”

বড়খেরী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, “পুরাতন বেড়ীবাঁধটি ভেঙে গেলে ঐতিহ্যবাহী রামগতি বাজার ও আশেপাশের বাড়িঘর মুহূর্তের মধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি। প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। যেন তার কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, “গত তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের আঘাতে এ অঞ্চলের অনেকগুলো রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। গ্রামের অধিকাংশ রাস্তা পানির নিচে। এমন অবস্থায় বিষয়টি তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। তারা খুব দ্রুত কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছে।”

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান বলেন, “অতিরিক্ত জোয়ারের আঘাতে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি রক্ষা করতে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর লক ষ ম প র ব যবস থ উপজ ল সড়ক র র মগত

এছাড়াও পড়ুন:

মেঘনার জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়কে ধস, দুই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

মেঘনা নদীর জোয়ারের পানির তোড়ে সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে যাওয়ায় নোয়াখালীর হাতিয়া ও লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। হাতিয়া ও রামগতি উপজেলার মাঝামাঝি এই সেতুর অবস্থান। আর ধসে পড়া সংযোগ সড়কটি পড়েছে রামগতির তেগাছিয়া বাজারে। আজ মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে প্রবল জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে পড়ে। এতে স্থানীয় স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ দুই উপজেলার বাসিন্দারা যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, সেতুর পশ্চিম পাশের সংযোগ সড়কের একাংশের মাটি সরে ধসে পড়েছে। বিষয়টি রামগতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) জানানো হয়েছে। তবে বিকেল নাগাদ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ধসের কারণে সড়কটি দিয়ে যানবাহন, এমনকি মানুষজনের চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী তেগাছিয়া বাজারের খালের ওপর নির্মিত সেতু দিয়ে উভয় উপজেলার বাসিন্দারা তেগাছিয়া বাজারে যাতায়াত করেন। তেগাছিয়া বাজারের বড় অংশটি হাতিয়ার মধ্যে। আরেক অংশ রামগতি সীমানার ভেতরে। এ ছাড়া স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক ও সেতু।

স্থানীয় টাংকির বাজারের ঘাটে আসা ইলিশ লক্ষ্মীপুর হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায় এই সড়ক দিয়ে। তাই সেতুর সড়ক বিধ্বস্ত হওয়ায় দুটি উপজেলার মাছ ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দ্রুত সংযোগ সড়ক মেরামত না করলে মূল সেতুই ঝুঁকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা ওই এলাকার বাসিন্দাদের।

জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রামগতি উপজেলা প্রকৌশলী স্নেহাল রায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, হাতিয়া-রামগতি উপজেলা সড়কের তেগাছিয়া বাজারের খালের ওপর নির্মিত ৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির সংযোগ সড়কের কিছু অংশ জোয়ারের পানির তোড়ে ভেঙে গেছে বলে শুনেছেন। কিন্তু পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার বিষয়টি তাঁকে কেউ জানায়নি। তিনি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে কথা বলে দ্রুত যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বেহাল সড়ক
  • মেঘনার জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়কে ধস, দুই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন