যশোরে এইডসে আক্রান্ত নারী জন্ম দিয়েছেন দ্বিতীয় সন্তান। সংক্রমণ ঝুঁকি সত্ত্বেও মানবিক দিক বিবেচনায় আজ রোববার যশোর জেনারেল হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ছেলে সন্তান জন্ম দেন। 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করে ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারটি সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে হাসপাতালের গাইনি রোগীদের জন্য নির্ধারিত অস্ত্রোপচার কক্ষটি দুই দিন বন্ধ থাকবে।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো.

হুসাইন শাফায়াত বলেন, এইডস আক্রান্ত এই নারীর অস্ত্রোপচারের জন্য গত কয়েকদিন ধরে চলছে নানান সতর্কতামূলক প্রস্তুতি। অস্ত্রোপচারে সন্তান জন্ম দেন ওই নারী। বর্তমানে নবজাতক ও মা সুস্থ আছেন। তবে তাদেরকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এটি এ হাসপাতালে দ্বিতীয় কোনো এইডস রোগীর অস্ত্রোপচার। ২০১৯ সালে করোনাকালীন সময়ে এই হাসপাতালে তার প্রথম সিজারিয়ান অপারেশনটি সম্পন্ন হয়।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গাইনি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জেসমিন সুলতানার নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি চিকিৎসক দল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন রোববার দুপুর ১২টার দিকে। সকাল ১০টায় অস্ত্রোপচার শুরু হয়।

হাসপাতাল সূত্র আরও জানায়, ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বাকালে পরীক্ষা নিরীক্ষায় তার অস্ত্রোপচার প্রয়োজন বলে জানা যায়। কিন্তু এইডস আক্রান্ত এই রোগীর অস্ত্রোপচারের মত প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা এই হাসপাতালে নেই। তাছাড়া এ হাসপাতালে এইডস আক্রান্ত রোগীর অপারেশন করা হলে পরবর্তী তিনদিন অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। এই নিয়ে অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকদের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয়। পরামর্শ দেওয়া হয়, এইডসে আক্রান্ত প্রসূতিকে বিশেষায়িত হাসপাতালে স্থানান্তরের। কিন্তু ওই নারী আর্থিকভাবে সচ্ছল নন। চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করার সামর্থ্য তার নেই। তাই মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

স্বজনরা জানান, ২০১৮ সালে অ্যাপেন্ডিসাইটিস শনাক্ত হয় মনিরামপুর উপজেলার ওই গৃহবধূর। এরপর শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সার্জারির মাধ্যমে ওই গৃহবধূ সুস্থ হন। কিন্তু তার শরীরে বাসা বাঁধে মরণঘাতক এইডস। গোপনে বাড়িতে চলে এইডস রোগের চিকিৎসাও। এইডস রোগের চিকিৎসার মধ্যেই অন্তঃসত্ত্বা হন ওই গৃহবধূ। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: যশ র এইডস

এছাড়াও পড়ুন:

‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।

আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।

আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।

সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
  • পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না: আসিফ নজরুল
  • বিসিআইসির নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ
  • এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
  • ৪৪তম বিসিএস: মনোনীত প্রার্থীদের তথ্য চেয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • ‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’ 
  • ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
  • মাইলস্টোনে দগ্ধ ৩৩ জন এখনো ভর্তি, আইসিইউতে ৩
  • শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনলে বোঝা যায়, তাঁর এখনো প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা আছে: আইন উপদেষ্টা
  • দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে