জামালপুরে কূপে গ্যাসের সন্ধান, ১৪০০ মিটার নিচ থেকে বের হচ্ছে গ্যাস
Published: 1st, June 2025 GMT
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের তারতাপাড়া গ্রামে ‘জামালপুর-১ অনুসন্ধান’ নামের গ্যাসকূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। আজ রোববার দুপুরে কূপ থেকে ৭ দশমিক ৩ মিলিয়ন ঘনফুট চাপে গ্যাস বের হচ্ছে।
‘জামালপুর-১ অনুসন্ধান’ কূপ খনন প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, ২ হাজার ৬০০ মিটার খনন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৪৪ মিটার মাটির নিচের স্তর থেকে ৭ দশমিক ৩ মিলিয়ন ঘনফুট চাপে গ্যাস বের হচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা প্রাথমিক পরীক্ষা শেষে কী পরিমাণ গ্যাস আছে, তা জানা যাবে। এ ছাড়া তেল বা পদার্থ আছে কি না, তা পরীক্ষা শেষে জানা যাবে।
প্রকল্পের পরিচালক মো.
বাপেক্স সূত্রে জানা গেছে, দেশের গ্যাসসংকট মোকাবিলায় দেশি জ্বালানির উৎস অনুসন্ধানে কাজ করছে সরকার। এই লক্ষ্যে ২০২৪-২০২৬ অর্থবছরে সরকার মোট ৫০টি কূপ অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তারই অংশ হিসেবে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের আওতাধীন বাপেক্স এক্সপ্লোরেশন ব্লক-৮-এর জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের তারতাপাড়া গ্রামে ১৯৮০ সালের সাইসমিক জরিপ, ২০১৪-১৫ সালের সাইসমিক জরিপ ও ২০১৫-১৬ সালের ক্লোজ গ্রিড সাইসমিক জরিপের তথ্যের ভিত্তিতে ‘জামালপুর-১ অনুসন্ধান’ কূপটি খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রায় ১৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কূপ খননের কাজ শুরু হয়। বাপেক্সের প্রকৌশলী, শ্রমিকসহ ২২০ জন ব্যক্তি খননকাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন।
চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি কূপ খননের স্থানে ড্রিলিং রিগ স্থাপন করা হয়। ২৪ জানুয়ারি কূপের আনুষ্ঠানিক খননকাজের উদ্বোধন করে বাপেক্স। এর আগে ২০১৪ সালে একই এলাকায় গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক প খনন পর ক ষ খনন র
এছাড়াও পড়ুন:
আসাদুজ্জামান নূরের চারটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দের আদেশ
সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর নামে থাকা ১৬টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসাদুজ্জামান নূরের অর্জিত সম্পদ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্তকালে তাঁর নামে পাওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ যেন তিনি হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন, সে জন্য তা জব্দ ও অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে গত ৩০ জুলাই মামলা করেছে দুদক। তাঁর নামে ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি রয়েছে। আরও রয়েছে তাঁর ১৬টি ব্যাংক হিসাব।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকায়। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুনআট মাসে ১৯২ একর জমি, ২৮ ভবন ও ৩৮ ফ্ল্যাট জব্দ ১৭ মে ২০২৫