প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শুরু
Published: 2nd, June 2025 GMT
সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বসেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় শুরু হওয়া রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন ঐকমত্য কমিশনের প্রধান উপদেষ্টা ড.
বৈঠকের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা বক্তব্য দেবেন বলে জানা গেছে। পরে দলগুলোর নেতারা কথা বলবেন।
ছয় সংস্কার কমিশনের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার বৈঠক আজ। গত ২০শে মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে সংলাপ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে কমিশন। তবে বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য এবং আংশিক ঐকমত্য হয়েছে। দ্বিতীয় দফার এই বৈঠক হবে বিষয়ভিত্তিক বলে জানিয়েছে কমিশন। যেসব মৌলিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য পোষণ করেনি সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান ও গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (এলডিপি) সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীসহ রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত আছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন চায় বাসদ
ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের বৈঠকে দলের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে বলে বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ জানিয়েছেন।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এ বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বজলুর রশীদ ফিরোজ। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন একটি আরেকটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুন কেন, এমন প্রশ্ন তুলে বাসদের এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বলেছে, জুলাই মাসের মধ্যেই তারা প্রস্তুত। আমরা বলেছি, ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের তারিখ সুনির্দিষ্টভাবে ঘোষণা করতে হবে এবং নির্বাচনের তারিখ দিয়ে সংস্কার প্রস্তাবকে এগিয়ে নিতে হবে এবং বিচারকে দৃশ্যমান করতে হবে।’
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘আমরা বলেছি যে প্রধান উপদেষ্টা জাপান গিয়ে যে বক্তব্য রেখেছে, সেটা একটি পার্টিকে ব্লেম করা হয়েছে। বন্দর ও মানবিক করিডর দেওয়ার যে চক্রান্ত, সেগুলো বন্ধ করতে হবে। এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নয়। আমরা বলেছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের বক্তব্যে বিভাজন তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিরপেক্ষ সেটা প্রমাণ করতে হবে।’
এ ছাড়া জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় কোন কোন বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো জাতির সামনে স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছে বাসদ। বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেছেন, ‘তিন মাস ধরে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, সেই তিন মাসের আলোচনার সারসংক্ষেপ কী? কোন কোন বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো জাতির সামনে পরিষ্কার করতে হবে। আমাদের কাছে পরিষ্কার করতে হবে, সেগুলো বাস্তবায়নের কী কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ চায় বাংলাদেশ জাসদ
বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘সংস্কারের আলোচনাকে যদি আমাদের অর্থবহ করতে হয়, তাহলে সর্বাগ্রে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে, সম্ভব হলে ডিসেম্বরের আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা যায়।’
এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদকে তার নিরপেক্ষতা প্রমাণ করতে হবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জাসদের এই নেতা বলেন, ‘প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে যারা নির্বাচনের ডিউটি করবে, তাদেরও নিরপেক্ষতা প্রমাণ করতে হবে। যদি সংস্কারের আলোচনা করতে হয়, তাহলে সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে এবং বিদেশের সঙ্গে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ চুক্তি করা যাবে না। এগুলো যদি আমরা নিশ্চয়তা পাই, তাহলে সংস্কারের আলোচনা সফল হতে পারে।’