‘৪০ মিনিট আটকে থাকার পর পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় আসতে পেরেছি’
Published: 5th, June 2025 GMT
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় পদ্মা সেতু এলাকায় ঘরমুখী মানুষ ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা থেকে শ্রীনগর উপজেলার বেঁজগাও এলাকার ছয় কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে ধীরে ধীরে যানজট কমছে।
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট আল আমিন হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এক্সপ্রেসওয়ে ও পদ্মা সেতু এলাকায় গাড়ির চাপ রয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টার পর হঠাৎ গাড়ির চাপ পড়ে। বেলা ১১টার পর চাপ কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে যানবাহনের সারি পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা থেকে শ্রীনগরের বেঁজগাও এলাকার ছয় কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। ট্রাফিক পুলিশ সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।
প্রাইভেট কারে করে পটুয়াখালীর গলাচিপায় যাচ্ছেন মো.
গ্রিনলাইন পরিবহনের যাত্রী শরীফুল ইসলাম পরিবারের তিন সদস্য নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। শরীফ বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে ঈদে বাড়ি ফেরার জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করতে হতো। এখন ভোগান্তি কমেছে। গত কয়েকটা ঈদে সেতুর টোল প্লাজা এলাকায় জটলার কারণে কিছুটা দুর্ভোগ হয়েছে। আজও এক্সপ্রেসওয়েতে ৪০ মিনিট আটকে থাকার পর পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত আসতে পেরেছি।’
পদ্মা সেতুর সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদ প্রথম আলোকে বলেন, সকাল থেকে ঈদে ঘরমুখী মানুষের যানবাহনের চাপ বেড়েছে। উভয় প্রান্তে ৮টি করে ১৬টি বুথের মাধ্যমে টোল আদায় করা হচ্ছে। প্রতিটি বাস ৬ থেকে ৮ সেকেন্ড, প্রাইভেটকার ৬ সেকেন্ড এবং মোটরসাইকেল ২ থেকে ৩ সেকেন্ডের মধ্যে টোল পরিশোধ করছে। যাত্রী ও যানবাহন পারাপারের নির্বিঘ্ন করতে সেতু বিভাগের লোকজন ও পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে।
চার কোটি টাকা টোল আদায়
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সেতুর উভয় প্রান্ত দিয়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে ৩৭ হাজার ৪৬৫টি। এতে টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ৯ লাখ ৬ হাজার ১৫০ টাকা। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে ৩৭ হাজার ৪৬৫টি যানবাহন পদ্মা সেতু পার হয়েছে। এতে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে যানবাহন পার হয়েছে ২৪ হাজার ৯টি; টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ২৪ লাখ ১৪ হাজার ৫৫০ টাকা। জাজিরা প্রান্ত দিয়ে পদ্মা সেতু পার হয়েছে ১৩ হাজার ৪৫৬টি গাড়ি; টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৮৪ লাখ ৯১ হাজার ৬০০ টাকা।
এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় ব্যবসায়ী নিহত
মাদারীপুর শিবচরে গরুবাহী একটি ট্রাকের সঙ্গে কাভার্ড ভ্যানের সংঘর্ষে বিল্লাল মণ্ডল (৬৫) নামের এক গরু ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুজন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এক্সপ্রেসওয়ের বন্দরখোলা এলাকায় ঢাকাগামী লেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত বিল্লাল মণ্ডল কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কাঞ্চনপুর এলাকার আজম আলী মণ্ডলের ছেলে।
শিবচর হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, খুলনা থেকে গরুবাহী একটি ট্রাক ঢাকায় যাচ্ছিল। দিবাগত রাত ১২টার দিকে এক্সপ্রেসওয়ের ঢাকাগামী লেনের বন্দরখোলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান পেছন থেকে ট্রাকটিকে ধাক্কা দেয়। এ সময় গরুবোঝাই ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে উঠে পড়ে। ট্রাকটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই বিল্লাল নিহত হন। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। আহত দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পর খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত দুজনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প র হয় ছ শ র নগর দ র ঘটন ট র পর এল ক য় হ ইওয়
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ ২৫ পরিবার পেল জেলা প্রশাসনের ঈদ উপহার
নারায়ণগঞ্জে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ২৫ পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। শুক্রবার (৬ জুন) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। তিনি বলেন, “যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি, তাদের বাদ দিয়ে ঈদ উদযাপন কখনও পূর্ণতা পাবে না।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ক্ষুদ্র উপহার দিয়ে আমাদের মূল্যায়ন করবেন না, আমরা সবসময় আপনাদের পাশে আছি। আমরা আপনাদের সঙ্গে নিয়েই উৎসব উদযাপন করতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা জানি সন্তান ছাড়া, পিতা ছাড়া ঈদের আনন্দ অপূর্ণ। তবে আপনারা মনে রাখবেন—যে সন্তান হারিয়েছেন, সে দেশের বীর সন্তান। আমরা সবাই তাদের জন্য দোয়া করি।”
অনুষ্ঠানে শহীদ আহসান কবিরের পিতা হুমায়ুন কবির বলেন, “জেলার প্রশাসন যে আমাদের খোঁজ খবর নিচ্ছে, এতেই আমরা সন্তুষ্ট। এখন চাই, যারা আমাদের সন্তানদের হত্যা করেছে, তাদের বিচার হোক। পাশাপাশি শহীদদের কবর সংরক্ষণ করে রাখার দাবি জানাই।”
ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন—নারায়ণগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো. আলমগীর হুসাইন, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. তারিকুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম, সদস্য সচিব জাবেদ আলম এবং শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী গণআন্দোলনে শহীদ ২৫ পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।