লন্ডনে নেতা–কর্মীদের সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করলেন তারেক রহমান
Published: 7th, June 2025 GMT
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যে পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হচ্ছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান উত্তর লন্ডনের কিংসমিডো স্টেডিয়ামে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন।
যুক্তরাজ্য বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও তারেক রহমান যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা–কর্মীদের নিয়ে খোলা মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। নামাজ শেষে তিনি নেতা–কর্মীদের সাথে ঈদের কোলাকুলি করেন।
তারেক রহমানের সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সহসভাপতি তাজুল ইসলাম, কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পারভেজ মল্লিক, মিসবাহউজ্জামান সোহেল, দপ্তর সম্পাদক মুজিবুর রহমান, জিয়া ফাউন্ডেশন ইউরোপের সমন্বয়ক কামাল আহমদসহ যুক্তরাজ্য বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের ও অঙ্গসংগঠনের কয়েক শ নেতা–কর্মী।
এদিকে লন্ডনের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে রিজেন্ট পার্ক সেন্ট্রাল মসজিদে। এখানে ঈদের প্রথম জামাত হয় সকাল ৭টায়। এরপর এক ঘন্টা পর পর ৬টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশী অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের ইস্ট লন্ডন মসজিদ ও ব্রিকলেন মসজিদেও চারটি করে ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখানে প্রবাসী বাংলাদেশীরা তাদের স্বজন ও পরিচিতদের নিয়ে নামাজ আদায় করেন।
এছাড়া খোলা মাঠে লন্ডনের মাইলএন্ড স্টেডিয়াম, স্টেপনিগ্রীনের শাহজালাল মসজিদ, পপলার মসজিদ, বার্কিংয়ের ওয়েসিস ব্যাংকুইটি হলসহ প্রতিটি মসজিদে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
লন্ডন ছাড়াও বাংলাদেশী অধ্যুষিত যুক্তরাজ্যের লোটন, বার্মিংহাম, ওল্ডহাম, ম্যানচেস্টার, সান্ডারল্যান্ড, ব্রাডফোর্ড, নিউক্যাসল, কার্ডিফ, গ্লাসগো ও এডিনবরায়ও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রত্যেকটি ঈদ জামাতে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি অংশগ্রহণ করেছেন।
বিভিন্ন জায়গায় ঈদ জামাতে মুসল্লিদের জন্য নানা পদের খাবার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া শিশু–কিশোরদের জন্য বিনোদনেরও ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ঈদ র ন ম জ মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’