দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নৌ-টার্মিনাল থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামমুখী মানুষের ভিড় বাড়লেও পর্যাপ্ত যানবাহনের অভাবে তাদের টার্মিনালগুলোতে ছয় থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিশেষ করে ভোলা থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য হাজার হাজার মানুষকে ইলিশা ঘাটে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। 

শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত  প্রচন্ড রৌদ্রের মধ্যে মেঘনার তীরে ঢাকা ও চট্টগ্রাম অভিমুখী এসব মানুষের ভিড় ক্রমশ বাড়ছিল। 

বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা জানান, ঈদের ফিরতি যাত্রায় শুক্রবার, শনিবার সবচেয়ে ভিড় হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় যানবাহন কম থাকায় যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অনেক যাত্রী প্রচন্ড ভিড়ের মধ্যেও লঞ্চে উঠে নদী পার হয়ে কর্মস্থলে ফেরার চেষ্টা করছেন। 

বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী না হবার জন্য বারবার ঘোষণা করা হলেও যাত্রীরা এসব হুঁশিয়ারি মানছেন না। চট্টগ্রামগামী যাত্রীরা জানান, ইলিশা ঘাটে সকাল থেকে অপেক্ষা করেও চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য দুপুর বারোটা পর্যন্ত কোনো লঞ্চে তারা উঠতে পারেননি। অভিযোগ করে তারা বলেন, ঈদের সময় এই রুটে হাজার হাজার যাত্রী আসা যাওয়া করে। কিন্তু কখনো ভোলা-চট্টগ্রাম রুটে বড় কোন লঞ্চ দেওয়া হয় না। 

এ ছাড়াও একাধিক যাত্রী জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় ইলিশা লঞ্চ ঘাটে উপস্থিত হয়েও দুপুর বারোটা পর্যন্ত ঢাকাগামী কোন লঞ্চ তারা পাননি। ভোলা নদী বন্দর কর্মকর্তা রিয়াদ হোসেন বলেন, ‘‘ভোলার ইলিশা নৌ-টার্মিনাল থেকে লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে মোট ছয়টি জলযান চলেছে। এসব নৌযানে কমপক্ষে ১০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করত। এছাড়া ঢাকামুখী অন্তত ১৪টি লঞ্চ এই টার্মিনাল দিয়ে যাতায়াত করবে। তবে যাত্রীসংখ্যা বেশি থাকায় এটি পর্যাপ্ত নয়।’’

লঞ্চ মালিকরা জানিয়েছেন, ঈদে এবার ঘরমুখো মানুষদের একটি বড় অংশ লঞ্চে করে ফেরায় দীর্ঘদিন পর তারা লাভের মুখ দেখছেন। এবার ফিরতি যাত্রায়ও ভীড় হচ্ছে টার্মিনালগুলোতে। 

বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক শেখ মোহাম্মদ সেলিম রেজা  বলেন, ‘‘গত দুই  দিন ধরেই যাত্রীদের ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। এবার প্রত্যাশা অনুযায়ী যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে লঞ্চগুলোতে। এই ভিড় আরও বাড়বে।’’

শুক্রবার বরিশাল নদীবন্দর ব্যবহার করে অন্তত ১২টি লঞ্চ চলাচল করছে। এসব লঞ্চে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ ঢাকার উদ্দেশ্যে যাতায়াত করেছে বলেও জানান তিনি। 

পলাশ//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দৌলতদিয়ায় ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে পন্টুনের কবজা, যানবাহন পারাপার ব্যাহত

তীব্র স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ৩ নম্বর পন্টুনের কবজা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে ঘাটটি। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

বর্তমানে দৌলতদিয়ায় শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু আছে। এতে যানবাহন পারাপারে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে এবং সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় ও ঘাট-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তে পদ্মায় তীব্র স্রোত দেখা দেয়। সন্ধ্যার পর এর তীব্রতা আরও বাড়ে। রাত ১১টার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা রো রো ফেরি শাহ পরান দৌলতদিয়ায় পৌঁছে নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় ফেরিটি প্রচণ্ড বেগে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুনে ধাক্কা দিলে কবজা ভেঙে যায়। এর পর থেকে ঘাটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এর আগে ২৩ আগস্ট থেকে তীব্র স্রোতের কারণে দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাটও বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে চারটি ঘাটের মধ্যে কেবল ৪ নম্বর ঘাট সচল রয়েছে। সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী পরিবহন এবং জরুরি কিছু পণ্যবাহী গাড়ি পার করা হচ্ছে। তবে সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে।

দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্টে (৩ নম্বর ঘাট) দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির নিরাপত্তা পরিদর্শক ইদ্রিস আলী ভূঁইয়া বলেন, গতকাল রাতে ফেরি শাহ পরান ঘাটে ভেড়ার সময় প্রচণ্ড ধাক্কায় পন্টুনের কবজা ভেঙে যায়। তখন থেকে ঘাটটি বন্ধ রাখা হয়।

এদিকে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কয়েক দিন ধরে সড়ক অবরোধ করা হচ্ছে। এতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা থেকে অনেক গাড়ি দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে পারাপার হচ্ছে। এ কারণেও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গাড়ির চাপ পড়ছে। আজ মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়া প্রান্তে প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা গাড়ির লাইন তৈরি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির লাইন আরও লম্বা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় চালকসহ যাত্রীদের বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

সৌহার্দ্য পরিবহনের ঘাট তত্ত্বাবধায়ক মনির হোসেন বলেন, ‘শুধু একটি ঘাট চালু থাকায় যানবাহন স্বাভাবিকভাবে পার হতে পারছে না। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা ঢাকামুখী গাড়ি আটকে দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে। আমাদের চারটি যাত্রীবাহী বাস চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আটকে আছে। বাসগুলো ফেরিতে উঠতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মতো সময় লাগছে।’

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি পারাপারে অনেক বেশি সময় লাগছে। গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। যাত্রীবাহী বাস ও কিছু জরুরি গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে। সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি আপাতত পার করা যাচ্ছে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ১৭ জনকে বেলার চিঠি, বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধের অনুরোধ
  • ভাঙ্গায় আন্দোলন: দৌলতদিয়ায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি
  • দৌলতদিয়ায় ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে পন্টুনের কবজা, যানবাহন পারাপার ব্যাহত