পাবনায় মুঠোফোন চুরির অভিযোগ তুলে রাসেল হোসেন (৩১) নামের এক যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে জেলা সদরের জাফরাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রাসেল এলাকার নজির উদ্দিনের ছেলে। ঘটনার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাতে জাফরাবাদ গ্রামের মো.

আবদুল্লাহর বাড়ি থেকে তাঁর ছেলে মকবুল হোসেনের একটি মুঠোফোন চুরি হয়। ফোন চুরির অভিযোগ ওঠে রাসেলের বিরুদ্ধে। পরে আবদুল্লাহর প্রতিবেশী তানজিল হোসেন তাঁকে (রাসল) ফোনটি ফেরত দিতে বলেন। এতে রাসেলের সঙ্গে তানজিলের কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে দা দিয়ে তানজিলের হাতে কোপ দেন। এতে তানজিলের তিনটি আঙুল কেটে যায়। পরে রাত ১২টার দিকে তানজিলের লোকজন গিয়ে রাসেলের বাড়িতে হামলা করে তাঁকে পিটিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। রাতেই স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত রাসেলের বোন অঞ্জনা খাতুন বলেন, তাঁর ভাই মুঠোফোন চুরি করেননি। অন্য কোনো কারণে তাঁর ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি ভাই হত্যার বিচার চান।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, রাসেলের বিরুদ্ধে আগেও কয়েকটি চুরির অভিযোগ আছে। এ জন্য আবদুল্লাহর বাড়ি থেকে ফোনটি চুরির অভিযোগ রাসেলের বিরুদ্ধে ওঠে। চুরির একটি ভিডিও ফুটেজও পাওয়া গেছে। চুরির পর উল্টো রাসেল তানজিলকে কুপিয়ে আহত করায় গ্রামের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে মারধর করেন। এতে তিনি মারা যান। তিনি বলেন, এ ঘটনায় তানজিল, আফরোজা ও খাদিজা নামের তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিহতের বাবা একটি মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। মামলাটি প্রক্রিয়াধীন। মামলা হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী

রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।

৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।

আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগে

তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।

পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী