পঞ্চগড়ে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বাড়ি থেকে রাজু ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মারা গেছেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা। তবে ওই সীমান্তে বিএসএফের গুলির কোনো খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

রোববার দুপুর পৌনে ১২টায় লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় সদর থানা-পুলিশ। নিহত রাজু ইসলামের বাড়ি সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ঝুলিপাড়া এলাকায়। তিনি বিবাহিত এবং তাঁর তিন ছেলেমেয়ে আছে।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, রাজু গতকাল শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়িতেই ছিলেন। এরপর তিনি কখন বাইরে গেছেন, স্বজনদের কেউ জানেন না। রাত তিনটার দিকে তাঁকে কে বা কারা বাড়ির বাইরে আহত অবস্থায় ফেলে যায়। এ সময় তাঁর চিৎকারে স্বজনেরা ঘুম থেকে উঠে আহত অবস্থায় তাঁকে দেখে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে দেবীগঞ্জ উপজেলার কাছাকাছি গেলে তিনি মারা যান। পরে লাশ বাড়িতে আনা হয়।

ইউপি চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, প্রথম দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, রাজু স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) করে মারা গেছেন। পরে তিনি গিয়ে দেখেন, তাঁর দুটি পায়ের হাঁটু ও আশপাশে গুলির চিহ্ন। ভারত সীমান্তে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে তিনি মারা গেছেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন। কারণ, তাঁর পায়ে স্পষ্ট গুলির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, সকালে বিষয়টি জানাজানির পর বাড়িতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গেছে।

নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো.

বদরুদ্দোজা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাতে ওই এলাকায় বিজিবির দুটি টহল দল দায়িত্বরত ছিল। তখন সীমান্তে গুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিএসএফও গুলি করেনি বলে জানিয়েছে। এমনকি পরিবার থেকে প্রথম দিকে তাঁদের জানানো হয়, তিনি হৃদ্‌রোগে মারা গেছেন। তবে তিনি যে আহত হয়েছেন, সেটা সীমান্ত এলাকায় হয়েছেন নাকি বাংলাদেশের ভেতরে হয়েছেন, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শইমী ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের দুই পায়ে গুলির চিহ্ন আছে, সেটি তাঁরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন। তবে গুলি কারা করেছে বা কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে, সেটা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হয় ছ ন প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

তেঁতুলিয়া সীমান্তে পুশইনের সময় ভারতীয় নাগরিকসহ আটক ৫

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার পেদিয়াগঞ্জ সীমান্তে পুশইনের সময় পাঁচজনকে আটক করেছে বিজিবি। শনিবার সকালে পেদিয়াগঞ্জ বিওপির সদস্যরা তাদের আটক করে। তাদের তিনজন বাংলাদেশি ও দুইজন ভারতীয় নাগরিক।

বিজিবি জানায়, তেঁতুলিয়া পেদিয়াগঞ্জ বিওপির সীমান্তের মেইন পিলার ৪৩০/২ এস থেকে প্রায় ৭০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গুচ্ছগ্রাম থেকে ভারতের প্রতিপক্ষ ১৩২/পুরোহিতগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা চান্দাপাড়া এলাকা থেকে বিএসএফের পুশইন করা দুইজন নারী ও তিনজন পুরুষকে আটক করে বিজিবির টহলদল।

আটক বাংলাদেশিরা হলেন- যশোরের শার্শা থানার বড় কলোনি গ্রামের মারফত আলীর ছেলে কোরবান গাজী (৩৩), অভয়নগর থানার ডাকহিদিয়া শ্যামলনগর গ্রামের মৃত মকবুল শেখের ছেলে তরিকুল শেখ (৪২) ও নড়াইল সদর থানার গোবরা বাজারের বীরগ্রাম গ্রামের মৃত ঈশ্বর গোপাল চন্দ্র বিশ্বাসের মেয়ে শ্রী বন্দনা রানী বিশ্বাস (৩৭)।

ভারতীয় নাগরিকরা হলেন- মোছা. নাজমা (২৭) এবং মোছা. ফারজানা (২৩)। নাজমা পালঘর জেলার বুড়িগুলি থানার কান্দেওয়ালি গ্রামের ইয়াসিন সরকারের মেয়ে এবং ফারজানা পালঘর জেলার ধানিউ থানার পালঘাট ভাসাই গ্রামের মারফত আলী গাজীর মেয়ে।

আটককৃত ব্যক্তিদের তেঁতুলিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঘাস খেতে খেতে সীমান্তের ওপারে ১০ গরু, ফেরত দিল বিএসএফ
  • সীমান্ত পার হয়ে ভারতে যাওয়া ১৫ গরু ফেরত পাঠিয়েছে বিএসএফ
  • পঞ্চগড় সীমান্তে গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু
  • সাত ভারতীয়সহ আরও ৪৮ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
  • পঞ্চগড়ের দুই সীমান্ত দিয়ে চার ভারতীয়সহ ১৬ জনকে পুশইন
  • চার ভারতীয়সহ ১৬ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ
  • পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ১৬ বাংলাদেশিকে ফেরত দিলো বিএসএফ
  • দুই সীমান্ত দিয়ে ২৮ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
  • তেঁতুলিয়া সীমান্তে পুশইনের সময় ভারতীয় নাগরিকসহ আটক ৫