পঞ্চগড়ে সীমান্ত এলাকা থেকে যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার
Published: 15th, June 2025 GMT
পঞ্চগড়ে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বাড়ি থেকে রাজু ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মারা গেছেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা। তবে ওই সীমান্তে বিএসএফের গুলির কোনো খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
রোববার দুপুর পৌনে ১২টায় লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় সদর থানা-পুলিশ। নিহত রাজু ইসলামের বাড়ি সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ঝুলিপাড়া এলাকায়। তিনি বিবাহিত এবং তাঁর তিন ছেলেমেয়ে আছে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, রাজু গতকাল শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়িতেই ছিলেন। এরপর তিনি কখন বাইরে গেছেন, স্বজনদের কেউ জানেন না। রাত তিনটার দিকে তাঁকে কে বা কারা বাড়ির বাইরে আহত অবস্থায় ফেলে যায়। এ সময় তাঁর চিৎকারে স্বজনেরা ঘুম থেকে উঠে আহত অবস্থায় তাঁকে দেখে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে দেবীগঞ্জ উপজেলার কাছাকাছি গেলে তিনি মারা যান। পরে লাশ বাড়িতে আনা হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, প্রথম দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, রাজু স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) করে মারা গেছেন। পরে তিনি গিয়ে দেখেন, তাঁর দুটি পায়ের হাঁটু ও আশপাশে গুলির চিহ্ন। ভারত সীমান্তে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে তিনি মারা গেছেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন। কারণ, তাঁর পায়ে স্পষ্ট গুলির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, সকালে বিষয়টি জানাজানির পর বাড়িতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গেছে।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো.
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শইমী ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের দুই পায়ে গুলির চিহ্ন আছে, সেটি তাঁরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন। তবে গুলি কারা করেছে বা কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে, সেটা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১২ হাজার তরুণ–তরণীকে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেবে পিকেএসএফ
পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে দেশের ১২ হাজার তরুণ-তরুণীকে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেবে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষানির্ভর তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে স্কিলস ফর ইন্ডাস্ট্রিজ কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রামের (এসআইসিআইপি) আওতায়। এ প্রকল্পে সহায়তা করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
আজ সোমবার রাজধানীর পিকেএসএফ ভবনে এসআইসিআইপি ও পিকেএসএফের প্রকল্পের উদ্বোধন ও প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণার্থী তরুণেরা ১২টি খাতের প্রশিক্ষণ পাবেন। প্রশিক্ষণ চলাকালে থাকা-খাওয়ার সব খরচ প্রকল্প থেকে বহন করা হবে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। বাকি ৭০ শতাংশের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন নিম্ন আয়ের ও প্রান্তিক অঞ্চলের তরুণেরা। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর অংশগ্রহণকারীদের আত্মকর্মসংস্থান বা মজুরিভিত্তিক চাকরির ক্ষেত্রেও সহায়তা করা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, দেশে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা রয়েছে, বিশেষ করে বিদেশে। এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে পিকেএসএফ ও এর সহযোগী সংস্থাগুলো সেই চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখতে পারবে।
পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বলেন, ‘প্রতিবছর ২০ লাখের বেশি তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছেন। এটি একই সঙ্গে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা। প্রকল্পের আওতায় জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্বীকৃত কোর্স অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে প্রশিক্ষণ শেষে তাঁরা সহজেই কর্মসংস্থানে যুক্ত হতে পারেন।’
অনুষ্ঠানে পিকেএসএফের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জসীম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ১২ হাজার ছাড়াও আরও ৮ হাজার ৫০০ তরুণকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও তৃতীয় লিঙ্গের তরুণদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। পাশাপাশি ২ হাজার এতিম ও দুস্থ তরুণকেও প্রশিক্ষণের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ সময় অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ওয়ালিদ হোসেন ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান বক্তব্য দেন।