ভারতে সেই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে এক ক্রিকেটারেরও
Published: 17th, June 2025 GMT
এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন একজন ক্রিকেটারও। ২৩ বছর বয়সী ভারতীয় ক্রিকেটার দির্ধ প্যাটেল গত বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী সেই ফ্লাইটে ছিলেন। বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি উড্ডয়নের এক মিনিটের মধ্যেই বিধ্বস্ত হলে তিনিসহ মোট ২৪২ জন মারা যান।
আরও পড়ুনমুরালির প্রাণে বেঁচে যাওয়া শহরে আরেক ‘সুনামির পূর্বাভাস’ নয় তো৫৫ মিনিট আগেদির্ধ প্যাটেল ইউনিভার্সিটি অব হাডার্সফিল্ডে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিষয়ে এমএসসি করেছেন। খেলতেন লিডস মডার্নিয়ান্স ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে। এটি ইংল্যান্ডের একটি ক্লাব। তাদের নারী, পুরুষ ও শিশুদের জন্য কয়েকটি ক্রিকেট ফুটবল ও রাগবি দল আছে। ওয়েবসাইটে ক্লাবটি নিজেদের পরিচয় করিয়েছে এভাবে, ‘লিডস মডার্নিয়ান্স স্পোর্টস ও সামাজিক ক্লাব। আমরা বিশ্বাস করি, খেলাধুলা এবং কমিউনিটি একে অপরের পরিপূরক। তাই আমরা শুধু পুরুষদের জন্য নয়, নারীদের ও শিশুদের জন্যও ফুটবল, রাগবি এবং ক্রিকেট দলের আয়োজন করি। পাশাপাশি পুরো কমিউনিটির জন্যও নানা ধরনের ইভেন্ট পরিচালনা করি—যাতে সবাই অংশ নিতে পারে, একসঙ্গে আনন্দ করতে পারে।’
দির্ধর শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটিং ও ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের রিডার ড.
ড. বারজিয়ানিস আরও জানান, প্যাটেল স্নাতকোত্তর শেষে নতুন চাকরিতে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং তাঁরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। বারজিয়ানিস বলেন, ‘তাঁর মৃত্যু আমাদের মনে করিয়ে দেয় জীবন কতটা নাজুক। তাঁর পরিবার, বন্ধু, সহপাঠী ও যাঁরা তাঁকে চেনেন, সবার প্রতি আমার গভীর সমবেদনা।’
দির্ধ প্যাটেলের মৃত্যুর খবরে শোক জানিয়েছে লিডস মডার্নিয়ান্স ক্লাব। ২০২৪ সালে লিডস মডার্নিয়ান্স ক্রিকেট ক্লাবের বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছিলেন দির্ধ। ক্লাবটির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এমন খবরে আমরা ভীষণ মর্মাহত। ক্লাবের প্রতিটি সদস্য দির্ধের পরিবার ও কাছের মানুষের পাশে রয়েছে।’
এয়ারডেল অ্যান্ড ওয়ার্ফডেল সিনিয়র ক্রিকেট লিগও শোক জানিয়েছে দির্ধের মৃত্যুতে। তারা জানায়, গুজরাটের ছেলে দির্ধ প্যাটেল নতুন চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর আবার ক্রিকেটে ফেরার পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁর ভাই কৃতিক প্যাটেলও ইংল্যান্ডে পুল ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলতেন।
দির্ধ যে বিমানে ছিলেন, সেটি আহমেদাবাদের সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করার ৬০ সেকেন্ডের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয়। এখন পর্যন্ত দুর্ঘটনার কারণ জানা যায়নি। তদন্তকারীরা ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করেছেন এবং তদন্ত চলছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।