সেদিন হাউমাউ করে কেঁদেছিলাম, ফিল্ম পলিটিক্স নিয়ে শিরিন শিলা
Published: 18th, June 2025 GMT
চোখে ছিল নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন, হাতে আসে সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব। কিন্তু ক্যারিয়ারের শুরুতেই হোঁচট খান। কারণ সেই সিনেমা থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়। তাও আবার না জানিয়ে! তাকে বাদ দিয়ে নেয়া হয় আরেক আলোচিত নায়িকা ববিকে। এমন কষ্টের গল্প শেয়ার করলেন ঢালিউড অভিনেত্রী শিরিন শিলা।
রাহাত সাইফুলের উপস্থাপনায় ‘রাইজিংবিডি স্পেশাল’-এ এসে ক্যামেরার সামনে ফিল্মপাড়ার অন্ধকার রাজনীতির কথা অকপটে তুলে ধরেন শিলা।
শিলার অভিযোগ—‘আই ডোন্ট কেয়ার’ নামের একটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। প্রযোজক মোহাম্মদ হোসেন তাকে শর্ত দিয়েছিলেন, “দুই বছর কাউকে সময় দেওয়া যাবে না, আমাদের কথামতোই চলতে হবে।”
আরো পড়ুন:
‘আরমান মনসুরকে’ নিয়ে সিনেমা চান ন্যানসি, সাড়া দিলেন রায়হান রাফী
বাবা দিবসে শাকিব খানের দুই রাজপুত্র ভাইরাল!
শিলা রাজি হয়েছিলেন, কারণ সামনে ছিল বড় পর্দায় নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ। শিরিন শিলা বলেন, “তিন-চার মাস গ্রুমিং হলো। এরপর হঠাৎ জানতে পারলাম আমাকে বাদ দিয়ে ববিকে নেয়া হয়েছে।”
নায়িকা ববির দিকে ইঙ্গিত করে শিলা বলেন, “তখন আমাদের একজন নায়িকা ছিলেন, যিনি শাকিব খানের সঙ্গে সিনেমা করছিলেন, হট হট ড্রেস পরতেন।”
সিনেমা থেকে বাদ পড়ার পর হাউমাউ করে কেঁদেছিলেন শিলা। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “কেউ একজন মোহাম্মদ হোসেন ভাইয়াকে মগজধোলাই দিয়েছিল। তিনি (মোহাম্মদ হোসেন) আমাকে বললেন, ‘তুই তো ছোট মানুষ, তোর নিয়ে আরেকটা সিনেমা করব’। আমি কিছু বলতে পারিনি, শুধু ফোন রেখে হাউমাউ করে কেঁদেছিলাম।”
এই অপমান শিলার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে। পরবর্তীতে ‘হিটম্যান’ সিনেমায় শাকিব খানের সিনেমায় অভিনয় করেন শিরিন শিলা।
তবে প্রথম সিনেমা থেকে বাদপড়ার ক্ষত এখনো বুকের ভেতর রয়ে গেছে বলেই জানালেন এই অভিনেত্রী। শিলার ভাষায়, “তখন ভাবতাম, একদিন এমনভাবে নিজেকে তৈরি করব যাতে অন্তত কেউ একজন আমার শিডিউল চায়।”
শিরিন শিলা এরই মধ্যে বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করেছেন। হয়ে উঠেছেন ঢাকাই সিনেমার পরিচিত মুখ।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
আগামী জাতীয় নির্বাচন দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘দেশে যাতে আর কখনো ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ, চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে বিষয়ে নারীসমাজকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। আমি বাংলাদেশের মা-বোনদের আহ্বান জানাই, আপনারা সচেতন ও সজাগ থাকুন।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের অবদান’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তারেক রহমান। তিনি লন্ডন থেকে সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পটভূমিতে নারীসমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে উল্লেখ করে সভায় তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা চাই, একজন মায়ের চোখে যেমন বাংলাদেশ হওয়া উচিত, তেমনই একটি ইনসাফভিত্তিক, গণতান্ত্রিক ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।’
তারেক রহমান বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে যেসব পরিবার আপনজন হারিয়েছে, তাদের আত্মত্যাগের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে। এসব পরিবারে একজন পুরুষ সদস্যের মৃত্যুর পর একজন নারী যেভাবে প্রতিদিন সংসার টেনে নিয়ে যাচ্ছেন, তা এক অনবদ্য সংগ্রাম।
নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে তারেক রহমান বলেন, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীকে রাষ্ট্র এবং রাজনীতির মূলধারার বাইরে রেখে কখনোই নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয়। নারীশক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে কোনো রাষ্ট্রই এগিয়ে যেতে পারে না। তিনি বলেন, নারী-পুরুষ ভেদাভেদ না করে সবাইকে শিক্ষা ও দক্ষতার মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে।
নারীর অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তারেক রহমান বলেন, নারীদের স্বাবলম্বী করা গেলে বৈষম্য কমবে, পারিবারিক সহিংসতাও রোধ হবে। তাই বিএনপির স্লোগান হচ্ছে—‘ক্ষমতায়িত নারীশক্তি, পরিবারের মুক্তি।’
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি আগামী দিনে ক্ষমতায় এলে প্রান্তিক ৫০ লাখ পরিবারের জন্য ‘ফ্যামিলি কার্ড’ চালু করবে। এই কার্ড নারীদের নামে ইস্যু করা হবে। ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে প্রান্তিক পরিবারগুলোকে প্রতি মাসে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আর্থিক বা খাদ্যসহায়তা দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন ঘটবে এবং পরিবারগুলো ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হবে।
তারেক রহমানের বক্তব্যের আগে সভায় একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এই তথ্যচিত্রে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের অবদান তুলে ধরা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আফরোজা খানম বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা ছিল অসামান্য। এই লড়াইয়ে সবচেয়ে সাহসী ভূমিকা রেখেছে নারীসমাজ।
যাঁরা রক্ত-অশ্রু ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন, সেই নারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস।
সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান ও সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তাজমেরি এস এ ইসলাম ও তাহসীনা রুশদির, বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রব প্রমুখ।
এ ছাড়া বক্তব্য দেন মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম, টক শো উপস্থাপক হাসিনা আখতারের ধারণ করা বক্তব্য সভায় প্রচার করা হয়। সভার সঞ্চালক ছিলেন মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান। সভায় শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা জানানো হয়।