বাংলাদেশিদের ইরান থেকে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু
Published: 19th, June 2025 GMT
ইরানে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার মধ্যেই তেহরান থেকে ১০০ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করা মোট ১০০ বাংলাদেশির তালিকা প্রস্তুত করে দ্রুততার সঙ্গে তাদের ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) ড. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
সচিব বলেন, ‘রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কথা হয়েছে। দূতাবাসের সব কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। তারা ভালো আছেন। এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো কর্মকর্তা সেখানে হতাহত হননি। প্রবাসী কর্মকর্তা যারা তেহরানে ছিলেন, তারাও নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। দূতাবাসের পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা করা হচ্ছে। দূতাবাস তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তাদের তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ তুরস্ক হতে পারে, পাকিস্তানও হতে পারে। যেখানে সব দিক থেকে সুবিধা হবে, সেখান থেকেই ব্যবস্থা (ফেরানোর) আমরা করব।’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তেহরানে ৪০০ জনের মতো বাংলাদেশি ছিলেন। এ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে ১০০ জনের মতো যোগাযোগ করেছেন। আমরা যেহেতু হটলাইন চালু করেছি, সে কারণে হয়তো এই সংখ্যা আরও বাড়বে। বর্তমানে তেহরানে ইন্টারনেট বন্ধ আছে, তবে টেলিফোনে যোগাযোগ চালু। অন্যদের তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে যেহেতু হটলাইন চালু আছে, তারা চাইলেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। সহায়তার দরকার হলে আমরা দেব। এমনকি তেহরানের বাইরে অন্যান্য শহরে যারা আছেন, বিশেষ করে বন্দর আব্বাসে যেসব বাংলাদেশি আছেন, তারা যদি ভবিষ্যতে সহায়তা চান, তাদেরও সহায়তা দেওয়া হবে। যদিও সেখানে (বন্দর আব্বাস) তারা এখনও যুদ্ধাক্রান্ত হননি। তাদের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার।’
ইরানে অর্থ পাঠানোর জটিলতা নিয়ে জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘ইরানে টাকা পাঠাতে জটিলতা আছে। আমাদের দূতাবাসে কিছু টাকা আছে, আর আমাদের একজন অফিসার ইরান যাচ্ছেন। তাঁর মাধ্যমেও টাকা পাঠানো হবে। কিছু বন্ধুপ্রতিম দেশের কাছ থেকেও সহায়তা নেব।’
সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, ১০০ জনের মতো একটি তালিকা হালনাগাদ হচ্ছে। তাদের কীভাবে কোন পথে ফেরানো যায়, তার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যখন একটি নিরাপদ দেশে নেওয়া হবে, তখন সেখান থেকে বিমানযোগে ফেরানো হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।