পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার পদত্যাগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
Published: 7th, July 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এবং মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কংকন চাকমার বিরুদ্ধে খাদ্যশস্য ও অর্থ বরাদ্দে অনিয়ম ও বৈষম্যের অভিযোগ তুলে খাগড়াছড়িতে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘ত্রিপুরা-মারমা সচেতন সমাজ, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা’—এই ব্যানারে আজ সোমবার সকালে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সুপ্রদীপ চাকমার পদত্যাগ এবং কংকন চাকমাকে অপসারণ দাবি করেন আয়োজকেরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন সংগঠনটির মুখপাত্র রুমেল মারমা। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সুপ্রদীপ চাকমা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রকল্প বণ্টন এবং খাদ্যশস্য ও অর্থ বরাদ্দে অনিয়ম করছেন। বরাদ্দের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এতে অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মানুষ বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবি মধ্যে রয়েছে—সুপ্রদীপ চাকমার পদত্যাগ ও কংকন চাকমার অপসারণ করা, জেলার প্রকল্প ও বরাদ্দে সমবণ্টন নিশ্চিত করা এবং আঞ্চলিক পরিষদ, জেলা পরিষদ ও টাস্কফোর্সে মারমা ও ত্রিপুরা জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।
আগামী সাত দিনের মধ্যে এসব দাবি না মানলে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় লাগাতার সড়ক, নৌপথ অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির পালনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সূর্য কিরণ ত্রিপুরা, প্রশান্ত ত্রিপুরা, মোচাই মারমা, উক্রাচিং মারমা, সীমা ত্রিপুরা ও তনয় ত্রিপুরা প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।