ফুটবল খেলা নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ৫, ভেঙে পড়েছে উপজেলা পরিষদের ফটক
Published: 24th, July 2025 GMT
মাদারীপুরের রাজৈরে ফুটবল খেলা নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে রাজৈর উপজেলা পরিষদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় রাজৈর উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন ধরে উপজেলা পরিষদ এলাকায় সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে হেলিপোর্ট মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা চলছে। গতকাল বিকেলে ওই টুর্নামেন্টে অংশ নেয় মজুমদারকান্দি ও পশ্চিম রাজৈর গ্রামের দুই দল কিশোর। খেলার সময় দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জেরে সন্ধ্যার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে পালানোর সময় রাজৈর উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের একটি অংশ ভেঙে ফেলা হয়।
এরপর দ্রুত স্থান ত্যাগ করে উভয় পক্ষের লোকজন। এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়। তারা রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে রাজৈর থানার পুলিশ।
সিসিটিভির ফুটেজ দেখে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল হক। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ খান বলেন, ফুটবল খেলা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ও পশ্চিম রাজৈর দুই গ্রামের মধ্যে টানা তিন দিনব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এ সময় পশ্চিম রাজৈর গ্রামের পক্ষ নিয়ে বদরপাশা গ্রামের বিপক্ষে সংঘর্ষে অংশ নেয় মজুমদারকান্দি গ্রামও। এতে অন্তত ৩০টি দোকান ভাঙচুর করা হয়। আহত হন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত অর্ধশত মানুষ। পরে ১৪৪ ধারা জারি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে প্রশাসন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জ র উপজ ল স ঘর ষ ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।